n সোমবার চণ্ডীপুরে সিপিএমের সমাবেশ। মঞ্চে তখন মানিক সরকার। নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূলের বিকল্প হিসাবে যাঁরা বিজেপিকে আনার কথা ভাবছেন, তাঁদের সতর্ক করলেন ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মানিক সরকার। সোমবার পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুর ফুটবল ময়দানে জেলা সিপিএম সমাবেশের আয়োজন করেছিল গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা রক্ষা ও বেকারদের কর্মসংস্থানের দাবি নিয়ে। সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন মানিক।
লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে তৃণমূলের প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে উঠে এসেছে বিজেপি। এমনকী সিপিএম থেকে বিজেপিতে যাওয়া নিয়ে বার বার রাজ্য রাজনীতি গরম করেছে তৃণমূল। এর মোকাবিলায় বিজেপির শাসনে ত্রিপুরার পরিস্থিতি তুলে ধরে বাম কর্মী-সমর্থকদের বোঝাতেই মানিকবাবুকে আনা হয়েছে বলে রাজনৈতিক মহলের অভিমত। তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত নন্দীগ্রামে এ দিনের সমাবেশে ভিড় হয়েছিল ভালই। সিপিএমের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহির দাবি, ‘‘সমাবেশে ৩০ হাজারেরে উপর মানুষ এসেছিলেন। আমাদের উদ্দেশ্য সফল।’’
নিজের রাজ্যে বিজেপির আমলে বিভিন্ন ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে বাম কর্মী-সমর্থকদের সতর্ক করে মানিক বলেন, ‘‘ত্রিপুরায় ২৫ বছর ধরে বামেরা ক্ষমতায় থেকে যথাসাধ্য মানুষের উন্নয়নের কাজ করেছে। কিন্তু গত বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যের মানুষকে বিজেপি বোঝায় কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের সঙ্গে রাজ্যেও বিজেপি সরকার হলে ‘ডবল ইঞ্জিন’-এর মতো উন্নয়নের গতি অনেক বেশি বাড়বে। বছরে একশো দিনের বদলে ২০০ দিনের কাজ নিশ্চিত হবে।’’
ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘মানুষকে উন্নয়ন ও কাজের স্বপ্ন দেখিয়ে নির্বাচনে জেতার পর গত ১৯ মাস ধরে ত্রিপুরায় বিজেপি সরকারের আমলে মানুষ ওদের ভয়ঙ্কর রূপ দেখছে। আমাদের ১৩ জন খুন হয়েছেন। প্রতিদিন মহিলারা ধর্ষিতা হচ্ছেন। গণধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। অত্যাচারিতরা থানায় অভিযোগ জানাতে পারছে না। কোনও থানা অভিযোগ নিয়ে মামলা করলে মামলা প্রত্যাহার করতে বাধ্য করা হচ্ছে। রাজ্যের বিভিন্ন শহর থেকে বেওয়ারিশ লাশ উদ্ধার হচ্ছে। কোথাও কোনও বিচার নেই। জঙ্গলের শাসন, স্বৈরতন্ত্র চলছে। মানুষ কাজ পাচ্ছে না। অর্ধাহারে, অনাহারে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।’’
এ রাজ্যের বাম-কর্মী, সমর্থকদের উদ্দেশে সতর্কতার সুরে মানিক বলেন, ‘‘পশ্চিমবাংলায় গণতন্ত্র নেই। তৃণমূলের নেতারা দুর্নীতিতে জড়িয়ে। তৃণমূলকে হটাতে হবে। কোনওভাবেই ভুলের ফাঁদে পা দেবেন না। খাল কেটে কুমির আনবেন না। গরম তেলের কড়াই থেকে জ্বলন্ত চুলায় ঝাঁপ দেবেন না। বিজেপি এবং তৃণমূলকে হটাতে হবে। বামপন্থীরাই সেই বিকল্প পথ। বামেদের শক্তি বাড়াতে হবে।’’
সম্প্রতি দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় ও কলকাতার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচনে বাম ছাত্র সংগঠনের সাফল্য তুলে মানিক বলেন, ‘‘বিজেপি এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে যেখানেই ভোট দেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন মানুষ, সেখানেই বামপন্থীদের জিতিয়েছেন।’’ এনআরসি প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘অসমে এনআরসির পর পশ্চিমবঙ্গেও একটা ভীতির পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে। তৃণমূল মুখে কিছু কথা বললেও লড়াইয়ে নামছে না। তাই বিজেপি এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বামেদের শক্তিশালী করতে হবে।’’
অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য দেবলীনা হেমব্রম, জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি। সমাবেশে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদের সভাপতি পদে জয়ী মিমোসা ঘোড়াইকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। ছিলেন দলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক তরুণ রায়, তাপস সিংহ সহ জেলা বামফ্রন্টের নেতারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy