মানিক ভট্টাচার্য। ফাইল চিত্র।
নিজের এবং পরিবারের সম্পত্তির হিসেব জমা দিতেই হবে মানিক ভট্টাচার্যকে। তৃণমূল বিধায়ক এবং প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতির আর্জি খারিজ করে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দেওয়া রায়ই বহাল রাখল কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। ফলে, রক্ষাকবচের আশা করলেও তা মিলল না। মানিককে সম্পত্তি সংক্রান্ত তদন্তের মুখোমুখি হতেই হচ্ছে।
টেট মামলায় অভিযুক্ত মানিককে নিজের এবং পরিবারের সম্পত্তির হিসেব দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই নির্দেশে মানিক যে অত্যন্ত বিরক্ত, তা বুঝিয়ে দিয়েই মানিক বলেন, ‘‘সম্পত্তির হিসাব তো ভোটের মনোনয়ন পত্রেই দেওয়া আছে। তবে আবার জানতে চাওয়া হচ্ছে কেন?’’
সম্পত্তি নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের একক বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করেছিলেন মানিক। আদালত তাঁর কাছে সম্পত্তির হিসাব চাওয়ায় তিনি যে ক্ষুব্ধ হয়েছেন, সে কথা আরও এক বার বোঝা গিয়েছিল ডিভিশন বেঞ্চে ওই মামলা চলাকালীন মানিকের আরও একটি বক্তব্যে। আইনজীবীর মাধ্যমে বিধায়ক আদালতে বলেছিলেন, ‘‘ভাগ্য ভাল যে, ওঁরা আমার মৃত শ্বশুরের সম্পত্তির হিসেব চাননি।’’
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে স্থগিতাদেশ চেয়েই ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মানিক। কিন্তু শুক্রবার কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ও তাঁর বিরুদ্ধেই গেল। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি লপিতা গঙ্গোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিককে তাঁর এবং তাঁর পরিবারের সম্পত্তির হিসেব দিতেই হবে আদালতে।
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে মানিককে পর্ষদের সভাপতির পদ থেকে অপসারণ করেছিল আদালত। তখনই তাঁর এবং তাঁর পরিবারের সম্পত্তির হিসাব চাওয়া হয়। হাই কোর্টের একক বেঞ্চ মানিকের স্ত্রী, তাঁর ছেলে এমনকি বিয়ের আগে পর্যন্ত তাঁর মেয়ের সম্পত্তিরও হিসেব চেয়েছিল। সেই প্রসঙ্গে ক্ষোভপ্রকাশ করে আইনজীবী মারফত মানিক বলেছিলেন, ‘‘অভিযোগ এক জনের বিরুদ্ধে। অথচ সবার সম্পত্তির হিসাব চেয়েছে। গোটা পরিবারের সম্পত্তির কথা জানতে চাওয়া হয়েছে। ভাগ্য ভাল আমার মৃত শ্বশুরের সম্পত্তির কথা জানতে চায়নি।’’
কী কী সম্পত্তি রয়েছে মানিকের? সেই প্রশ্নে বিধায়ক যে হিসেব দিয়েছিলেন, তা চোখে পড়ার মতো বিশেষ কিছু নয়। হিসেব দেখেই তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ‘‘আপনার বিদেশে সম্পত্তি নেই তো? যা হিসেব দিয়েছেন তার বাইরে যদি আপনার নামে কোনও সম্পত্তি থেকে থাকে, তবে তার দাবি করবেন না তো?’’ তাতে মানিক বেশ জোরের সঙ্গেই জানিয়ে দেন, তিনি তেমন কোনও সম্পত্তি দাবি করবেন না।
উল্লেখ্য, প্রাথমিকে নিয়োগের মামলায় মানিককে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি পদ থেকে অপসারনের নির্দেশকেও চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন মানিক। শুক্রবার হাই কোর্টের রায়ে সেই আর্জিও খারিজ হয়েছে মানিকের। ফলে আপাতত তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআই এবং ইডির তদন্তও চলবে। শুক্রবারের এই রায়ের পর বিধায়ক মানিককে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি। তবে ঘনিষ্ঠসূত্রে জানা গিয়েছে, তিনি বিচারাধীন বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy