Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Cyclone Yaas

সমুদ্রে মিশে গিয়েছে ৭০টির বেশি হোটেল, মুকুট হারিয়ে বাঁচার রসদ খুঁজছে মন্দারমণি

প্রকৃতির রোষ কাকে বলে তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে মন্দারমণি। চারপাশে শুধু ধ্বংসস্তূপ আর শূন্যতা। মুকুট হারিয়ে মন্দারমণি এখন একেবারেই অচেনা।

মন্দারমণিতে জলোচ্ছ্বাসে ভেঙে গিয়েছে হোটেলের পাঁচিল।

মন্দারমণিতে জলোচ্ছ্বাসে ভেঙে গিয়েছে হোটেলের পাঁচিল। নিজস্ব চিত্র।

কেশব মান্না
মন্দারমণি শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০২১ ০৫:৩৫
Share: Save:

ভাঙাচোরা হোটেলটার দিকে চোখ রেখে থম মেরে দাঁড়িয়েছিলেন। সাংবাদিক দেখে এগিয়ে এলেন। নিজেকে হোটেলের মালিক পরিচয় দিয়ে বললেন, ‘‘ইয়াস-এর দিন সমুদ্রের বিশাল বিশাল ঢেউ সোজাসুজি হোটেলের ভিতরে আছড়ে পড়ে। ঢেউয়ের আঘাতে হোটেলের এক একটা স্যুট ভেঙে গিয়েছে। ইয়াস সব শেষ করে দিল।’’ ইয়াসের পর এক সপ্তাহ কাটলেও তাণ্ডবের চিহ্ন নিয়ে মন্দারমণি এখনও খণ্ডহর।

গোটা সৈকত জুড়ে থাকা হোটেলগুলির অধিকাংশেরই ভগ্নদশা। সৈকতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বোল্ডারের মধ্যে পড়ে রয়েছে কংক্রিটের ভাঙা পিলার, দরজা-জানলা, ভাঙা খাট থেকে রান্নাঘরের সরঞ্জাম। প্রকৃতির রোষ কাকে বলে তা এ বার হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে মন্দারমণি। চারপাশে শুধু ধ্বংসস্তূপ আর শূন্যতা। হোটেল মালিক সুমন মিশ্র বলেন, ‘‘এই যন্ত্রণা আমাদের কতদিন নিয়ে বয়ে বেড়াতে হবে কে জানে? একটা ঝড় আর জলোচ্ছ্বাস আমাদের পথে বসিয়ে দিয়েছে।’’

মন্দারমণিতে হোটেল, রিসর্ট মিলিয়ে সংখ্যাটা প্রায় ২০০। তার মধ্যে প্রায় ৭০টি হোটেল, রিসর্ট আছে যা সমুদ্রে প্রায় মিশে গিয়েছে। দিন দিন যে সমুদ্রতটের টানে মানুষ ভিড় জমাচ্ছিলেন এখন সেই সমুদ্রতট এখানকার মানুষের কাছে আতঙ্কের হয়ে দাঁড়িয়েছে। জলোচ্ছ্বাসে ভেঙে যাওয়া হোটেল, রাস্তায় উপড়ে পড়া বিদ্যুতের খুঁটি, মাটি ধসে রাস্তায় তৈরি হয়েছে বড় বড় ফাটল। মাঝেমধ্যে বিদ্যুৎ থাকলেও সন্ধের পর প্রায় অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছে এলাকা। যা অবস্থা তাতে আবর্জনা সরিয়ে, ফের পরিকাঠামো গড়ে তুলতে কতটা সময় লাগবে তা বলতে পারছেন না স্থানীয়রাই। স্থানীয় দোকানদার অশোক পন্ডার কথায়, ‘‘এ মন্দারমণি আমাদের অচেনা। যেন ‘মৃত্যুপুরী’। একের পর এক হোটেলের ঘর ভাসিয়ে দিয়ে চলে গেছে সমুদ্র। ফের কবে এ সব সামলে পর্যটকের পা পড়বে কে জানে! আমাদের ব্যবসাপত্তরও গেল।’’

তবে দিঘা ও তাজপুরে বিদ্যুৎ পরিষেবা অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে। জলোচ্ছ্বাসে সমুদ্র সৈকতে চলে আসা বড় বড় পাথর সরানো হয়েছে। ধীরে ধীরে ছন্দে ফেরার চেষ্টা শুরু হয়েছে।

এখন কার্যত লকডাউন চলছে। ফলে পর্যটক নেই। পুজোর সময় পর্যটক আসার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু তার আগে সংস্কারের কাজ শেষ হবে না বলে মনে করছেন মন্দামণির বহু হোটেল মালিক। স্থানীয় হোটেল মালিক সংগঠনের সভাপতি সন্দীপন বিশ্বাস বলেন, ‘‘সব তছনছ হয়ে গিয়েছে। বহু হোটেল ভেঙে গিয়েছে। সব ঠিক করে ওঠা সময় সাপেক্ষ তো বটেই। তা ছাড়া আর্থিক ক্ষতির বিষয়টিও রয়েছে।’’

মুকুট হারিয়ে মন্দারমণি এখন একেবারেই অচেনা।

অন্য বিষয়গুলি:

digha Mandarmani Cyclone Yaas
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy