Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

মৃত্যুর আগে স্বামীর ফোন, বাঁচলেন ববিতা 

ট্রলার-মালিকের সঙ্গে মাসে ৪০ হাজার টাকার চুক্তিতে মাছ ধরার কাজ করতেন সঞ্জয়। সেই কাজেই দুর্গাপুজোর পরে বাড়ি ছেড়েছিলেন তিনি। তার পরে শনিবার দুপুরের আগে স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর আর কথা হয়নি।

ছবি এএফপি।

ছবি এএফপি।

শুভাশিস ঘটক 
কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৪১
Share: Save:

মাঝদরিয়া থেকে আসা স্বামীর ফোনে ঘর ছেড়ে তাঁর প্রাণ বেঁচেছে। বেঁচেছে ছেলেমেয়েও। কিন্তু স্বামী বাঁচেননি।

কাকদ্বীপ স্টিমারঘাটের নতুন পল্লির বাসিন্দা ববিতা দাসের স্বামী সঞ্জয়কে (৩৫) কেড়ে নিয়েছে বুলবুল। জম্বু দ্বীপের কাছে মাছভর্তি ট্রলার উল্টে শনিবার যে ১৩ নিখোঁজ হয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যেই ছিলেন সঞ্জয়। পরে তাঁর মৃতদেহ মেলে। সোমবার জেলা প্রশাসনের কর্তারা সন্তান-সহ ববিতাকে কাকদ্বীপ স্পোর্টস কমপ্লেক্সে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে নিয়ে আসেন। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার জন্য ববিতা কাকুতি-মিনতি করছিলেন। পরে মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক শেষে ববিতার কাছে আসেন। ২ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণের চেক তুলে দেন তাঁর হাতে। চাকরির আশ্বাসও দেন। ববিতা বলেন, ‘‘টাকা খরচ হয়ে যাবে। একটা কাজ আমার দরকার। না হলে ছেলে-মেয়েকে মানুষ করব কী ভাবে?’’

ট্রলার-মালিকের সঙ্গে মাসে ৪০ হাজার টাকার চুক্তিতে মাছ ধরার কাজ করতেন সঞ্জয়। সেই কাজেই দুর্গাপুজোর পরে বাড়ি ছেড়েছিলেন তিনি। তার পরে শনিবার দুপুরের আগে স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর আর কথা হয়নি। শনিবার ববিতাকে কী বলেছিলেন সঞ্জয়? ববিতা বলেন, ‘‘ফোনটা আচমকা এল। ও বলল, আমাদের নদীর ধারে বাড়ি। তুমি ছেলেমেয়েকে নিয়ে পাশের গ্রামে দিদির বাড়ি চলে যাও। বড় ঝড় আসছে। আমি ফিরতে পারছি না। মালিক মাছ-পাহারা দিতে বলেছে। তারপরেই ফোন কেটে যায়।’’

ফোনের পরেই সাত মাসের ছেলে ও দশ বছরের মেয়েক নিয়ে ঘর ছাড়েন ববিতা। রবিবার ফিরে দেখেন, ঘরের সব জিনিস নষ্ট হয়ে গিয়েছে। টালির ছাদ ভেঙে পড়েছে। ঘরে থাকলে মৃত্যু নিশ্চিত ছিল, এ কথা যখন ভাবছেন, তখনই স্বামীর মৃত্যুসংবাদ পান। কাকদ্বীপ মৎস্যজীবী সংগঠনের এক নেতা জানান, ট্রলার-মালিকের ফরমানেই জম্বু দ্বীপের কাছে সঞ্জয়দের ট্রলার নোঙর করা ছিল। প্রবল ঝড়ে তা উল্টে যায়।

অন্য বিষয়গুলি:

Cyclone Bulbul Death Trawler Accident
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE