ধৃত শেখ ইউসুফ। —নিজস্ব চিত্র।
সম্পত্তির ভাগ নিয়ে ছোট ছেলের সঙ্গে মন কষাকষি ছিল বাবার। এই ‘অপরাধে’ ঘুমন্ত ছেলেকে ঘরে তালা বন্ধ করে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে বাবার বিরুদ্ধে। গুরুতর জখম নিহতের স্ত্রী এবং দুই মেয়েও।
পূর্ব বর্ধমানের গলসি ২ ব্লকের খানো-ডাঙাপাড়ায় মঙ্গলবার রাতের ওই ঘটনায় বৃদ্ধ শেখ ইউসুফ ও তাঁর বড় ছেলে শেখ একরামকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বর্ধমান মেডিক্যাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শেখ ইকবালের (৩৬) স্ত্রী তুহিনা বেগম ৯০ শতাংশ ও দুই নাবালিকা মেয়ে সোহনা খাতুন ও বিলকিস খাতুন ৮০ শতাংশের বেশি পুড়ে গিয়েছে। পুলিশের দাবি, জেরায় তাদের কাছে ঘটনার কথা স্বীকার করেছেন ইউসুফ।
জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই বৃদ্ধ ও তাঁর বড় ছেলেকে পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ওঁদের বাড়ি থেকে ছোট মাপের গ্যাস সিলিন্ডার মিলেছে।’’
আরও পড়ুন: ‘নাতনি দু’টোকে পোড়াল কেন!’
ইউসুফ অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মী। ১৩ বিঘার কিছু বেশি জমি এবং পাকা ও মাটির মিলিয়ে তিনটি বাড়ি রয়েছে তাঁর। ইকবাল কর্মসূত্রে কলকাতায় থাকলেও, তাঁর পরিবার গ্রামে থাকে। প্রতিবেশীদের একটা বড় অংশের দাবি, মাস দু’য়েক আগে সম্পত্তির বাঁটোয়ারা নিয়ে বাবা-ছোট ছেলের মারপিট হয়। থানায় অভিযোগ হয়। গ্রামে সালিশিসভা বসে। সিদ্ধান্ত হয়, ইকবালকে বাড়ি তৈরি করতে চার লক্ষ টাকা ও জমি দেবেন ইউসুফ। বিনিময়ে আর কোনও সম্পত্তিতে দাবি জানাবেন না ইকবাল। মঙ্গলবার সম্পত্তির সে ভাগ বুঝে নিতে এসেছিলেন ইকবাল।
ইউসুফের স্ত্রী মাবিয়া বিবি জানান, রাতে পাকা বাড়িতে সপরিবার শুয়েছিলেন তাঁর ছোট ছেলে। লাগোয়া দোতলা মাটির বাড়িতে এক নাতিকে নিয়ে শুতে যান ইউসুফ। গভীর রাতে ইকবালের আর্তনাদে ঘুম ভাঙে মাবিয়া বিবির। উঠে গিয়ে বন্ধ দরজার তালা ভাঙার চেষ্টা করেন। লাগোয়া বাড়িতে থাকা বড় ছেলে, পড়শিদেরও ডাকেন। ইউসুফ পালিয়ে যান। পরে গুসকরা স্টেশন থেকে তাঁকে ধরে পুলিশ।
অভিযোগ, ইকবালদের ঘরের পিছনের জানলার নীচে টুল রেখে তার উপরে পাঁচ কিলোগ্রামের গ্যাসের সিলিন্ডার বসান ইউসুফ। পাইপ দিয়ে গ্যাস ছেড়ে দেন ওই ঘরে। তার পরে বাইরে থেকে তালা ঝুলিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। পুলিশ জানিয়েছে, ওই সিলিন্ডার, টুল ও পাইপ উদ্ধার হয়েছে। মাবিয়া বিবি বলেন, ‘‘স্বামীই ছোট ছেলেকে পুড়িয়ে মেরেছে। বউমা এবং নাতনিদেরও পুড়িয়ে মারতে চেয়েছিল। ওর শাস্তি চাই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy