নিখোঁজ শেরপা দাওয়া ওয়াংচুকের স্ত্রী পেম্বিকে অর্থসাহায্য মুখ্যমন্ত্রীর। বৃহস্পতিবার দার্জিলিঙে।
সম্পর্কের উন্নতি করতে সচেষ্ট হল তৃণমূল ও গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। বৃহস্পতিবার মোর্চার সভাপতি বিমল গুরুঙ্গের জন্মদিনে ফুল-মিষ্টি-চিঠি পাঠিয়ে শুভেচ্ছা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দার্জিলিঙের ম্যাল চৌরাস্তায় প্রশাসনিক জনসভায় আধ ঘণ্টার বক্তৃতাতেও বারেবারেই মোর্চার সঙ্গে একযোগে উন্নয়নের বার্তা দিয়েছেন। মিলেমিশে পাহাড়ের উন্নয়নে জোর দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন জিটিএ প্রধান গুরুঙ্গও। আজ, শুক্রবার দার্জিলিঙে মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়ের উন্নয়নমূলক কাজকর্ম পর্যালোচনা করতে যে বৈঠক ডেকেছেন, সেখানে দলের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের পাঠানো হবে বলেও জানিয়েছেন গুরুঙ্গ।
তবে এ দিন ম্যালের সভায় জিটিএ-র কোনও প্রতিনিধি ছিলেন না। ম্যালের মঞ্চ থেকেই এ দিন তামাঙ্গদের জন্য উন্নয়ন পর্ষদ ও দার্জিলিঙের বালাসন জল প্রকল্পের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। এপ্রিলে কাঞ্চনজঙ্ঘায় ইয়ালুং কাং শৃঙ্গ অভিযানে গিয়ে নিখোঁজ শেরপা দাওয়া ওয়াংচুকের স্ত্রী পেম্বির হাতে এদিন ১ লক্ষ টাকার একটি চেক তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। বালাসন জল প্রকল্পের পরীক্ষাগারে তাঁকে চাকরির নিয়োগপত্রও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি চেয়েছিলাম সকলেই সভায় থাকুন। সকলকেই ডেকেছিলাম। কিন্তু আজ বিমল গুরুঙ্গের জন্মদিন। তা নিয়ে উনি ব্যস্ততার জন্য হয়তো আসতে পারেননি।” দার্জিলিঙের পাতলেবাসে মোর্চার দলীয় অফিসে গুরুঙ্গের জন্মদিন পালিত হয়। সেখানে গুরুঙ্গ বলেছেন, “মুখ্যমন্ত্রীর চিঠি পেয়েছি। তাঁর দিক থেকে এটি শুভ ইঙ্গিত। মুখ্যমন্ত্রী একসঙ্গে কাজ করার কথা বলেছেন। এটা দার্জিলিঙের উন্নয়নের পক্ষে সদর্থক।” তামাঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদে সঞ্জয় মোক্তানকে চেয়ারম্যান করা হয়েছে। অখিল ভারতীয় গোর্খা লিগের প্রয়াত নেতা মদন তামাঙ্গের ছেলে সংযোগ তামাঙ্গকেও বোর্ডের সদস্য করা হয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রী সভামঞ্চ থেকে ঘোষণা করেছেন।
এ দিন ফেসবুকে মুখ্যমন্ত্রী দার্জিলিঙের প্রতি তাঁর ভালবাসার কথা উল্লেখ করেছেন। মমতারকথায়, দার্জিলিঙের সৌন্দর্য ও মানুষের প্রতি ভালবাসার টানে অন্তত ৪০ বার এখানে এসেছেন। যে প্রকল্পগুলির উদ্বোধন করেলন, সেগুলির সংক্ষিপ্ত পরিচয়ও দিয়েছেন ফেসবুকে। মোর্চা সম্পর্কে অবশ্য সেখানে কোনও বক্তব্য নেই।
লোকসভা ভোটের পরে মুখ্যমন্ত্রীর প্রথম দার্জিলিং সফরের মুখে মোর্চা-তৃণমূল উভয়পক্ষই সংযত থাকার কৌশল নিয়েছে। কেন্দ্রে বিজেপি ক্ষমতাসীন হওয়ায় তাদের জোটসঙ্গী মোর্চা এখন সরাসরি দিল্লির সঙ্গেও যোগাযোগ রাখতে পারছে। জিটিএ চুক্তিতে রাজ্য ও মোর্চা ছাড়াও কেন্দ্র হল তৃতীয় পক্ষ। রাজ্য-জিটিএ সম্পর্কে জটিলতা হলে কেন্দ্র চুক্তি সমীক্ষা করার জন্য বৈঠক ডাকতে পারে। এই প্রেক্ষাপটে রাজ্য ও জিটিএ উভয়েই মেপে পা ফেলছে।
সরকারি অনুষ্ঠানের শেষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দাবি-দাওয়া জানাচ্ছেন পাহাড়ের মহিলারা।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “আমরা ৯০ শতাংশ দফতর জিটিএকে হস্তান্তর করেছি। জিটিএ স্বাধীনভাবে কাজ করবে।” তিনি জানান, রাজ্য নিজের দায়িত্ব পালন করবে। তাঁর কথায়, রাজনীতি থাকবে, কিন্তু উন্নয়নে যেন রাজনীতি বাধা না হয়ে দাঁড়ায়, সেটা দেখতে হবে।
এ দিনের সভায় মুখ্যমন্ত্রী একাধিক প্রকল্পের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। দার্জিলিঙের বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের জন্য আইটি সংস্থা গড়ার কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। ক্ষুদ্র শিল্পের উদ্যোগীদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য মেলাও হবে বলে জানিয়েছেন। পাহাড় লাগোয়া সমতলেও পর্যটক টানতে শিলিগুড়ির উপকণ্ঠে একটি সাফারি পার্কেরও এ দিন শিল্যানাস করেন তিনি। বক্তব্যের শেষের
দিকে ফের জিটিএ-র প্রসঙ্গ তুলে বলেন, জিটিএ-র কাজ করতে কোনও সমস্যা হলে তিনি নিজেই তা দেখবেন। আর বাসিন্দাদের মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, “সব কাজ করে দেব। কিন্তু ভরসা রাখতে হবে, বিশ্বাস করতে হবে। ভোটে কিছু হয় না, আপনাদের ভালবাসা চাই।”
বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy