ছবি পিটিআই।
বাংলার রবীন্দ্র-আবেগ সামনে রেখে এ বার বিজেপির বিরুদ্ধে নেমে পড়লেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রবিবার বিশ্বভারতীতে গিয়েছিলেন। পরে বোলপুরে রোড শো করেন। মমতা সেখানে মিছিল করবেন ২৯ ডিসেম্বর। তাঁর বক্তব্য, ‘‘রবীন্দ্র-সংস্কৃতি আমাদের গর্ব। তাকে তুলে ধরে রাঙা মাটির মানুষদের নিয়ে মিছিল করা হবে।’’
বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নড্ডা থেকে শাহ— সকলেই রাজ্য সফরে এসে রবীন্দ্র-ঐতিহ্যের কথা বড় করে তুলে ধরেছেন। যার মূল উদ্দেশ্য বাঙালি আবেগকে টেনে নেওয়া। কিন্তু বিজেপির বিভিন্ন টুইট, হোর্ডিং এবং নেতাদের কথায় রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে যে সব ‘তথ্য’ দেওয়া হয়েছে, তা বিভ্রান্তিতে ভরা। ভাষাও অনেক ক্ষেত্রেই ত্রুটিপূর্ণ। একটি উদাহরণ— ‘‘বিশ্বভারতী হলেন রবীন্দ্রনাথের জন্মস্থান।’’
মুখ্যমন্ত্রী সোমবার বলেন, ‘‘আমাকে তো দেখছি এ বার গবেষণা করতে হবে! রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নাকি শান্তিনিকেতনে জন্মেছেন! তিনি নাকি জোড়াসাঁকোয় জন্মাননি!’’ রবীন্দ্রনাথের লেখা জাতীয় সঙ্গীত ‘জনগণমন অধিনায়ক’ পরিবর্তন করার যে দাবি বিজেপির ভিতর থেকে তোলা হয়েছে, তার বিরোধিতা করে মমতার বক্তব্য, ‘‘রক্ত দেওয়ার জন্য তৈরি থাকব। ‘জনগণমন অধিনায়ক’কে অপমান করতে দেব না।” রবীন্দ্র-ভাবনায় একাত্মবাদ, বহুত্ববাদ, জাতীয়তাবাদের কথা তুলে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে কোনও অবমাননা মানব না। বিশ্বকে সঙ্কীর্ণতা দিয়ে যে ভাঙা যায় না, সে কথা রবীন্দ্রনাথ, বিবেকানন্দ লিখতে পারেন। প্রথমে ওদের (বিজেপি-কে) পড়াশোনা করতে বলুন। রবীন্দ্রনাথ, নেতাজি, গাঁধীজি, নজরুল, স্বামী বিবেকানন্দ, অম্বেডকরকে অপমান করতে দেব না।’’
দল হিসেবে বিজেপি বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয় বলে বাংলায় একটা ধারণা চালু আছে। বঙ্গ বিজেপির নেতাদেরও ভাষা ব্যবহারে, প্রণামের ভঙ্গিমায়, খাদ্যাভ্যাসে, এমনকি ধর্মাচরণে এমন কিছু নিদর্শন দেখা যায়, যেটা সাধারণ ভাবে প্রচলিত বাঙালিয়ানার সঙ্গে মেলে না। অনেকটাই মেলে হিন্দি বলয়ের সঙ্গে। রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু তার উল্লেখ করে এ দিন বলেছেন, ‘‘বঙ্গ বিজেপির নেতারা প্রভারি, কার্যকর্তা, আগ্রহ করছি— এই ধরনের ‘বাংলা’ বলতে অভ্যস্ত। ওই দলের বাঙালি নেতাদের প্রণামের ভঙ্গিতেও হাঁটুতে হাত দিতে দেখা যায়। পা ছুঁতে দেখা যায় না। কোনও সংস্কৃতিকেই মন্দ বলব না। তা ভাবিও না। তবে যা সাধারণ ভাবে বাঙালির জীবন-যাপনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়, তাকে বাঙালিয়ানা বলতে পারব না। বঙ্গের বিজেপি সেই বাঙালিয়ানা থেকে বহু দূরে। বাঙালি এটা মেনে নিতে পারে না।’’ তাঁরও বক্তব্য, ‘‘রবীন্দ্রনাথ আজীবন অসাম্প্রদায়িক মনোভাব দেখিয়ে গিয়েছেন। কোনও সম্প্রদায়কে বাদ দিয়ে সঙ্কীর্ণ জাতীয়তাবাদের কথা কখনও বলেননি। তাই বিজেপির রবীন্দ্রপ্রীতির সবটাই কৃত্রিম। বাংলার মানুষ তা প্রত্যাখ্যান করছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy