মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
স্কুল চলছে পুরোদমে। তার মধ্যে ধূমকেতুর মতো হঠাৎ এক বন্দুকধারী এসে এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করল বিদ্যাস্থানে। আমেরিকা বা ইউরোপের কিছু দেশে এমন উৎপাতের কথা শোনা গেলেও পশ্চিমবঙ্গ-সহ ভারতে এই ধরনের ঘটনার খবর এখনও নেই। তারই মধ্যে বুধবার পুরাতন মালদহের মুচিয়া চন্দ্রমোহন হাইস্কুলে দু’টি পিস্তল এবং অন্যান্য অস্ত্র নিয়ে এক ব্যক্তির আস্ফালনে ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা, অভিভাবক থেকে সর্বস্তরের মানুষ আতঙ্কিত। শ্রেণিকক্ষে কিছু ক্ষণ পড়ুয়াদের আটকে রাখা ছাড়া ওই ব্যক্তি আপাতদৃষ্টিতে কোনও ক্ষতি করতে না-পারলেও তার আকস্মিক দৌরাত্ম্য শিক্ষার্থীদের মনে ত্রাসের যে-ক্ষত তৈরি করল, তার নিরসন সহজ নয় বলেই শিক্ষা শিবিরের অভিমত।
এই অবস্থায় স্কুলে নিরাপত্তারক্ষী রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে শিক্ষকদের অভিযোগ, স্কুলে নিরাপত্তারক্ষী বা ঝাড়ুদারের পদে আর নিয়োগই হয় না। পদগুলির অস্তিত্বই আর নেই। স্কুলে দারোয়ান রাখার প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘দরকার হলে পুলিশের থেকে সহায়তা নেওয়া যেতে পারে।’’ এ দিন ওই ব্যক্তি কী ভাবে মালদহের স্কুলে ঢুকল, সেই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আই কার্ড ছাড়া তো কাউকে স্কুলে ঢুকতে দেওয়ারই কথা নয়। পড়ুয়াদেরও তো আই কার্ড আছে।’’
শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানাচ্ছেন, ১৯৮০ সালের আগে স্কুলে নৈশ প্রহরী ও নিরাপত্তারক্ষীর পদ ছিল। এসএসসি বা স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পরে নিরাপত্তারক্ষী ও ঝাড়ুদারের পদে নিয়োগ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কিছু স্কুল নিজেদের তহবিল থেকে নৈশ প্রহরী রাখে ঠিকই। কিন্তু নিয়মিত বেতন দেওয়ার সামর্থ্য অনেক স্কুলেরই নেই।
‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস’-এর রাজ্য সম্পাদক চন্দন মাইতির অভিযোগ, ‘‘দক্ষিণ ২৪ পরগনার বেশ কিছু স্কুলে রাতে নিয়মিত চুরি হয়। ল্যাবরেটরির কম্পিউটার লোপাট হয়ে যায়। এখন দিনের বেলাতেও যে পড়ুয়া ও শিক্ষকদের নিরাপত্তার জন্য রক্ষী দরকার, মালদহের স্কুলের ঘটনাই তা প্রমাণ করে দিল।’’ নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুকুমার পাইন জানান, স্কুলে নিরাপত্তারক্ষী রাখার দাবি তাঁরা বার বার জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy