নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সুমন বল্লভ।
অতিমারির তৃতীয় তরঙ্গ প্রশমিত হয়নি। এই পরিস্থিতিতে করোনাকে প্রতিহত করতে মানুষের সচেতনতার উপরেই জোর দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে প্রশাসনিক বৈঠকে তিনি বলেন, “মানুষ সচেতন হলে এমনিতেই ভাইরাস দুর্বল
হয়ে যাবে। আর কত লড়বে? লড়তে লড়তে ভাইরাসও এক সময় দুর্বল হয়ে যায়।”
তৃতীয় ঢেউয়ে রাজ্যে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা সর্বাধিক ২৪ হাজারের ঘরে পৌঁছে গিয়েছিল। এখন সংক্রমণের রেখচিত্র নিম্নমুখী। এ দিন প্রশাসনিক বৈঠকের শুরুতে মুখ্যমন্ত্রীও সেই পরিসংখ্যানের কথা উল্লেখ করে বলেন, “কোভিড প্রতিদিন বিশ হাজার হচ্ছিল। এখন দেড়-দু’হাজারের মধ্যে রয়েছে। এক সময় পজ়িটিভিটি রেট ৩৬ শতাংশের মতো হয়ে গিয়েছিল। সেটা এখন চার শতাংশ। এটাকেও কমিয়ে ফেলতে হবে।” স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় (বুধবার) আক্রান্ত হয়েছেন ১৯১৬ জন। যা মঙ্গলবারের (২৯৫০) থেকে অনেকটা কম। ওই দিনের পজ়িটিভিটি রেটের (৪.৬১%) থেকে কমে বুধবার হয়েছে ৩.৯৪%। এখন বহু মানুষই বাড়িতে র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করে জেনে নিচ্ছেন, তিনি আক্রান্ত কি না। এ দিনের বৈঠকে ওই অ্যান্টিজেন পরীক্ষার উপরে জোর দেন মুখ্যমন্ত্রীও। তিনি বলেন, “আরটিপিসিআর রিপোর্ট আসতে তিন দিন পর্যন্ত সময় লেগে যাচ্ছে। সঙ্কটজনক হলে আরটিপিসিআর পরীক্ষা করাতে হবে। কিন্তু যাঁদের উপসর্গ নেই বা সামান্য জ্বর আছে, তাঁরা বাড়িতে কিট কিনে র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করছেন। পজ়িটিভ হলে তাঁরা বাড়িতে সতর্ক থাকুন। বিশ্রাম নিন। ভাল খাওয়াদাওয়া করলে সেরে যাবেন।”
করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্য দফতরের কাজের প্রশংসা করে স্বাস্থ্যসচিব নায়ারণস্বরূপ নিগমের কাছে মুখ্যমন্ত্রী এ দিন ওমিক্রনের নতুন প্রজাতি সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। তিনি জানতে চান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) যে-নতুন প্রজাতির কথা বলছে, সেটি অত্যন্ত দ্রুত ছড়ায়। তবে তার ভয়াবহতা কম বলে যেটা জানা যাচ্ছে, সেটি কি ঠিক? উত্তরে স্বাস্থ্যসচিব জানান, ৫৪টি দেশে ওই নতুন প্রজাতির খোঁজ মিলেছে। তবে নিশ্চিত ভাবে কিছু বলার জন্য আরও প্রামাণ্য তথ্যের প্রয়োজন। এ-সবের পাশাপাশি এক শ্রেণির মানুষের টিকার দ্বিতীয় ডোজ় নিতে অনীহা দেখে মুখ্যমন্ত্রী এ দিন পরামর্শ দেন, “প্রয়োজনে বাড়ি বাড়ি গিয়ে দ্বিতীয় ডোজ় দিতে হবে।“ রাজ্যে প্রথম ডোজ় ৯৫ শতাংশ, দ্বিতীয় ডোজ় ৭২ শতাংশ এবং ১৫-১৮ বছর বয়সিদের সাত শতাংশ প্রতিষেধক পেয়েছেন বলে পরিসংখ্যান পেশ করেন মমতা।
প্রত্যন্ত অঞ্চলে চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দিতে সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র তৈরির বিষয়ে স্বাস্থ্যসচিব জানান, নতুন করে আরও কেন্দ্র তৈরির জন্য জমি চিহ্নিত করা হচ্ছে। গ্রামাঞ্চলে ১৫ হাজারের বেশি এবং শহরাঞ্চলে প্রায় ২০০০ সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র রাখার পরিকল্পনা হয়েছে। পল্লি চিকিৎসকদেরও সেই সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রে বসিয়ে মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “ওই চিকিৎসকেরা নিজেরা চেম্বার করে বসে পড়ছেন। যে-সব চিকিৎসায় ঝুঁকি নেই, যেমন সামান্য জ্বর, পেটের গন্ডগোলের ক্ষেত্রে তাঁরা চিকিৎসা করতে পারেন।” পল্লি চিকিৎসকদের ব্যবহারের ক্ষেত্রে রাজ্যের গ্লোবাল অ্যাডভাইজ়রি বোর্ডের দেওয়া পরামর্শও দেখে নিতে বলেন মমতা। স্বাস্থ্যসচিব জানান, পল্লি চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy