মধ্যমগ্রামে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ছবি বিশ্বনাথ বণিক
ব্যস্ততা থাকায় বাতিল হল সাংবাদিক সম্মেলন। প্রশাসনিক বৈঠক সেরেই তড়িঘড়ি গাড়িতে উঠছেন তিনি। অন্য নেতা-মন্ত্রী, পুলিশ প্রশাসনের কর্তারাও দ্রুত নিজেদের গাড়িতে উঠে পড়ছেন। এমন সময় সমস্বরে আকাশ ফাটানো চিৎকার দিদি, দি-দি….।
এক মুহূর্ত থমকালেন। গাড়ির দরজা সপাটে ঠেলে মাটিতে নেমে পড়লেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জনস্রোতে মিশে গেলেন নিমেষে। দিদির পাশে-পিছনে রাস্তা ধরে ছুটছিলেন ফিরহাদ হাকিমের মতো কেউ কেউ। তাঁদের কথায়, ‘‘এই হল অরিজিনাল দিদি।’’ গত রবিবার ২১ জুলাই তৃণমূলের ‘শহিদ দিবস’-এর মঞ্চ থেকে দলীয় নেতা-কর্মীদের জনসংযোগের নির্দেশ দিয়েছিলেন মমতা। বলেছিলেন, পুলিশের ঘেরাটোপ ছেড়ে বেরনোর কথাও। শুক্রবার নিজেই সেই কাজে নেতৃত্ব দিয়ে গোটা দলকে এ বিষয়ে ফের পথ দেখালেন তিনি।
তবে উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামে প্রশাসনিক বৈঠক শেষে আচমকা এই ঘটনায় হতচকিত হয়ে পড়েন মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা কর্মী থেকে শুরু করে পুলিশ-প্রশাসনের আধিকারিকরা। নজরুল মঞ্চ, পুরসভা ছাড়িয়ে মধ্যমগ্রাম চৌমাথা হয়ে সোজা জাতীয় সড়ক ধরে রাস্তার মাঝখান দিয়ে এয়ারপোর্টের দিকে হাঁটতে থাকেন মমতা। পিছনে জনস্রোত। রাস্তার দু’পাশ মোটা দড়ি দিয়ে কর্ডন করে রাখে পুলিশ। চারপাশ থেকে নানা বয়সী মহিলা-পুরুষ চিৎকার করতে থাকেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ’।
প্রশাসনিক বৈঠক উপলক্ষে এ দিন মধ্যমগ্রাম কার্যত মুড়ে দেওয়া হয়েছিল নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায়। এই পথ ধরে মুখ্যমন্ত্রীর হেঁটে যাওয়ার কথাও ছিল না। তবুও দুপুর থেকে দু’পাশে ভিড় জমিয়েছিলেন প্রচুর মানুষ। এলাকারই বাসিন্দা জয়িতা রায়, কিশোর চক্রবর্তী এবং সত্তরোর্ধ বৃদ্ধ শওকত আলিদের কথায়, ‘‘গাড়িতে গেলেও যদি দেখা যায় তাই দাঁড়িয়ে ছিলাম। কিন্তু এত কাছ থেকে দেখতে পাব ভাবিনি।’’
এই জেলায় এসে গাড়ি থেকে তাঁর নেমে পড়া নিয়ে অতীতে অনেক কিছুই হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর এই জেলা সদর বারাসতেই একটি বৈঠক সেরে জেলাশাসকের অফিস থেকে বের হওয়া মাত্র তাঁকে ঘিরে ধরে জনতা। তাঁদের সঙ্গে মিশে যান তিনি। অবস্থা এমন হয় যে তাঁর শরীরে একমাত্র অলঙ্কার বলতে যেটা ছিল, মায়ের দেওয়া সেই বালাখানিও হারিয়ে যায়।
এ দিন মমতা শুধু করজোড়ে বা হাত নাড়তে নাড়তেই হাঁটেননি, এক মহিলা ‘দিদি, হাতটা একটু ধরবো’ বলায় দু’হাতে তাঁকে ধরেছেন মমতা। বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, মহিলাদের দিকে এগিয়েও গিয়েছেন। কলেজ ছাত্রীদের আবদার মেনে মোবাইলে ছবিও তুলতে দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy