Advertisement
১৫ অক্টোবর ২০২৪
Death

Rampurhat Clash: বদনাম করতেই চক্রান্ত, ‘ষড়যন্ত্রের’ তত্ত্বেই ‘সিলমোহর’ দিলেন মমতা

তাঁর অভিযোগ, ‘‘পেট্রল, ডিজ়েল, রান্নার গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে। যাতে এ নিয়ে কেউ কিছু বলতে না পারে, তাই হট করে একটা ঘটনা ঘটিয়ে দিয়েছে।’’

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২২ ০৮:০৫
Share: Save:

রামপুরহাট-কাণ্ডে ‘ষড়যন্ত্রের’ তত্ত্বেই ‘সিলমোহর’ দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নাম না করলেও, এ জন্য বিরোধী দলগুলির দিকে আঙুল তুলেছেন তিনি।

আজ বৃহস্পতিবার রামপুরহাটে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার আগে বুধবার কলকাতায় এক সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চে তাঁর অভিযোগ, ‘‘পেট্রল, ডিজ়েল, রান্নার গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে। যাতে এ নিয়ে কেউ কিছু বলতে না পারে, তাই হট করে একটা ঘটনা ঘটিয়ে দিয়েছে।’’ যদিও এ দিনই সংসদে লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনাকে রাজনৈতিক রেষারেষির বদলে পারিবারিক বিবাদের জের বলে দাবি করেছেন। মঙ্গলবার রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালবীয়ও বলেছিলেন, রাজনৈতিক শত্রুতা নয়, অন্য কোনও ধরনের শত্রুতা এই ঘটনার কারণ হতে পারে।

মমতা এ দিন বলেন, ‘‘যারা সরকারে থাকে না, তারা সরকারকে ব্যতিব্যস্ত করার জন্য এই চক্রান্তগুলো করে, যাতে আমাদের বদনাম হয়।’’ তবে সেই সঙ্গেই তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, ‘‘রামপুরহাটে দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটেছে। যারা ঘটিয়েছে, তারা ছাড় পাবে না।’’

বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য অবশ্য বলেন, ‘‘তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে পুলিশের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় গণহত্যা সংগঠিত হয়েছে। এখন প্রকৃত ঘটনা আড়াল করতে মুখ্যমন্ত্রী ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব খাড়া করছেন।’’

এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে শাসকদল ও প্রশাসনের দিকে আঙুল তুলেছেন বাম ও বিজেপি নেতারা। বিধানসভার বাইরে বিক্ষোভ দেখায় এসইউসি।

আর বিরোধীদের অভিযোগ নস্যাৎ করে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, ‘‘আমরা সরকারে আছি। আমরা কি চাই, কেউ বোমা মারুক?’’ তারপরেই ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘‘এখানে তোমরাই ঘটনা ঘটাবে, আর তার পরে হয় কোর্টে যাবে, নয়তো টিভিতে সেজেগুজে যে যত পারবে গালাগালি দেবে! আমরা সিপিএম, বিজেপির মতো চক্রান্তকারী দল নই।’’

মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘একটা ঘটনা ঘটলে, পদক্ষেপ করা হচ্ছে কি না সেটা বড় ব্যাপার। নিজে পঞ্চাশ বার ফোন করেছি। আমরা পদক্ষেপ করেছি।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘দাঙ্গা করতে পারছে না। লোকে খেতে পাচ্ছে না, মেয়েরা পড়াশোনা করতে পারছে না, বাচ্চারা মিড-ডে মিল পাচ্ছে না, মানুষ চিকিৎসা পাচ্ছেন না— এ সব বলতে পারছে না। তাই ধরে নিয়েছে, একটা দেশলাই জ্বালিয়ে দেওয়া খুব সহজ!’’

বগটুই গ্রামে এ দিন সকালেই পৌঁছন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। দুপুরের পরে বিজেপি বিধায়কদের নিয়ে সেখানে গিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বাংলা উত্তরপ্রদেশ নয়। যা ঘটেছে, তা জাস্টিফাই করছি না। সিট তৈরি করা হয়েছে।’’ তাঁর মন্তব্য, ‘‘হাথরস, উন্নাও, লখিমপুর নিয়ে তো কিছু হয় না। দিল্লিতে দাঙ্গায় এত লোক মারা গেল, তখন কিছু হয় না।’’ মমতা এ দিন মনে করিয়েছেন, হাথরসে, লখিমপুরে, উন্নাওয়ে কিংবা এনআরসি-অশান্তির সময়ে অসমে তিনি প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছিলেন। তাঁদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তবে বিজেপি বা অন্য কোনও দলের রামপুরহাট যাওয়ায় তিনি বাধা দিচ্ছেন না। মমতার কথায়, ‘‘উত্তরপ্রদেশে আমাদের এমপিদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আমাদের এখানে এটা আমরা করি না। সবাইকে যেতে দিই। এটা আমাদের সহমর্মিতা, সহযোগিতা।’’

রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের প্রতিক্রিয়ার জবাবে তাঁকেও পাল্টা বিঁধেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এক জন লাটসাহেব কথায় কথায় বলে বেড়াচ্ছেন বাংলা সব থেকে খারাপ। রোজ সরকারকে গালাগাল দিচ্ছেন। বাংলার জন্য এ সব সহ্য করছি।’’ রামপুরহাট নিয়ে রাজ্যপালের প্রতিক্রিয়ার জবাবে মঙ্গলবার কড়া চিঠি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এ দিন সকালেই সেই চিঠির জবাব দিয়ে শপথের কথা মনে করিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে রাজ্যপাল বলেছেন, ‘কী করছেন সেটা ভাবুন। সংঘাত এবং সংবিধান বহির্ভূত অবস্থান ছেড়ে এখনই একসঙ্গে কাজ করার কথা বিবেচনা করুন।’

এ দিন সংবাদমাধ্যমের ভূমিকার সমালোচনা করে মমতা বলেন, ‘‘একটা ঘটনা ঘটলেই সারা দিন রক্ত, মৃতদেহ দেখাচ্ছে!’’ তাঁর অভিযোগ, ইতিবাচক খবর দেখানো হচ্ছে না।

অন্য বিষয়গুলি:

Death Rampurhat Mamata Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE