মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: পিটিআই।
হাইকোর্টে পেশ করা জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরে ‘চক্রান্ত’ ও ‘প্রতিহিংসা’র অভিযোগ তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘যে রিপোর্ট আদালতে জমা পড়ল তা বাইরে আসে কী ভাবে? কী ভাবে তারা কোর্টকে অসম্মান করে!’’ রাজ্য বিজেপি অবশ্য স্বাভাবিক ভাবেই ওই রিপোর্ট সামনে চলে আসায় ‘খুশি’।
রাজ্যে ভোট-পরবর্তী ‘হিংসা’র অভিযোগ খতিয়ে দেখে জাতীয় মামবাধিকার কমিশনকে রিপোর্ট দিতে বলেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার সেই রিপোর্ট জমা পড়ে। পাশাপাশি তা চলে আসে প্রকাশ্যেও। এরপরেই বিষয়টি নিয়ে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘‘ভোটের হার ওরা (বিজেপি) মানতে পারছে না। পুরোটাই বৈষম্যমূলক রাজনীতির চক্রান্ত। নিরপেক্ষ কিছু সংস্থাকে দখল করে নানা রকম ভাবে এ সব করা হচ্ছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা সরকারে রয়েছি। আদালত আমাদের বক্তব্য জানানোর জন্য হলফনামা পেশ করার সময় দিয়েছে।’’ মমতার অভিযোগ, ‘‘এটা হচ্ছে শুধুমাত্র বাংলার মানুষকে অসম্মান করার জন্য। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা না থাকলে এই ভাবে সমস্ত রিপোর্ট প্রকাশ করে দেওয়া হয় কেন?’’
আদালতে জমা পড়া কমিশনের ওই রিপোর্টে রাজ্যের পুলিশ, প্রশাসনের বিরুদ্ধে কঠোর ভাষায় মন্তব্য, পর্যবেক্ষণ ও সেই সঙ্গে কিছু সুপারিশ রয়েছে। ভোট- পরবর্তী ‘হিংসা’র উল্লেখ করে রাজ্যের এক মন্ত্রী সহ শাসকদলের একাধিক বিধায়ক ও নেতাকে ‘কুখ্যাত দুষ্কৃতী’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছেন বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, বিধায়ক পার্থ ভৌমিক, শওকত মোল্লা, খোকন দাস। একই বন্ধনীতে নাম রয়েছে প্রাক্তন বিধায়ক তথা তৃণমূল নেতা উদয়ন গুহ, নন্দীগ্রামের মুখ্যমন্ত্রীর নির্বাচনী এজেন্ট সেখ সুফিয়ানের মতো আরও কয়েক জনের।
মুখ্যমন্ত্রী কমিশনের এইরকম মন্তব্য বা সুপারিশ সম্পর্কে কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি। কিন্তু মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে রাজ্যে বা রাজ্যের বাইরে কোনও থানায় কোনও অভিযোগ নেই। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে আমার নাম দেওয়া হয়েছে।’’ তৃণমূল বিধায়ক পার্থের জবাব, ‘‘রাজনৈতিক লড়াইয়ে না পেরে উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত ভাবে এটা করা হয়েছে। বিজেপির নির্দেশে তৈরি রিপোর্টের কোনও মূল্য নেই।’’ শাসক দলের আরেক বিধায়ক শওকতের কথায়, ‘‘কমিশন বিজেপির দালালি করেছে।’’ দিনহাটার প্রাক্তন বিধায়ক উদয়নবাবু বলেন, ‘‘আমি আক্রান্ত হয়ে গুরুতর জখন হলাম। কিন্তু কমিশনের কেউ আমার সঙ্গে কথা বলার প্রয়োজন মনে করেননি।’’
রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য অবশ্য বলেন, ‘‘কমিশনের প্রতিনিধিরা যে সব জায়গায় গিয়েছিলেন, সেখানে আইনশৃঙ্খলার কোনও চিহ্ন দেখতে পাননি। তাঁদের মনে হয়েছে, পুলিশ, সমাজবিরোধী এবং রাজনৈতিক দলের যোগসাজশে মানুষের উপর আক্রমণ হয়েছে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে তাই ওই রিপোর্ট তাদের পক্ষপাতদুষ্ট বলে মনে হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy