মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
আমপানের ক্ষতিপূরণ দেওয়া নিয়ে পঞ্চায়েত স্তরে দুর্নীতি তৃণমূলের উপরতলায় নাড়া দিয়েছে। সূত্রের খবর, খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এমন ১৬০০ অভিযোগের কথা জানতে পারেন। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, এগুলির প্রায় সবই পঞ্চায়েতের পদাধিকারীদের ‘দুষ্কর্মে’র ফল। কয়েকটি ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিডিওদের ভূমিকাও প্রশ্নের মুখে পড়েছে। তার পরেই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছে সরকার ও শাসকদল। ওই ১৬০০ অভিযোগের প্রতিবিধান করার নির্দেশও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
আজ বুধবার সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। সেখানে বিরোধী দলগুলি ত্রাণ বিলির ব্যাপারে দুর্নীতির অভিযোগ আনবে বলে কোমর বাঁধছে। তার আগে দলের হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার মতো কয়েকটি জেলায় পঞ্চায়েতের পদাদিকারীদের বহিষ্কৃত করেছে তৃণমূল। পাশাপাশি কয়েক জন বিডিও নিজেরা যাচাই না করে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতের উপর দায় ছেড়ে দিয়েছিলেন, সেই অভিযোগে তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
রাজনৈতিক মহলের ধারণা, আগামী নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণই তৃণমূলের বাধ্যবাধকতা। কারণ, বিষয়টি আর বাড়তে দিলে জনমনে তার বিরূপ প্রভাব তৈরি হতে পারে। এবং ভোটে তার মাশুল দিতে হতে পারে তৃণমূলকে। সে জন্য ব্যবস্থা গ্রহণে শিথিলতা দেখাতে চাননি মুখ্যমন্ত্রী।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ত্রাণ বিলি যাতে সুষ্ঠু ও দল-নিরপেক্ষ হয়, তা নিশ্চিত করতে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে নীচের তলা পর্যন্ত টাস্ক ফোর্স গড়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে পঞ্চায়েত কর্তা, এমএলএ, জেলা পরিষদের প্রতিনিধিত্ব যেমন আছে, তেমনই আছেন বিডিও এবং স্থানীয় থানার আইসি। উদ্দেশ্য, পঞ্চায়েতের দেওয়া তালিকা প্রশাসন খতিয়ে দেখবে এবং পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে নিজস্ব নজরদারিতে ত্রাণের কাজ করা হবে।
আরও পড়ুন: ত্রাণে দুর্নীতিই আজ মূল সুর বিরোধীদের
এই ব্যবস্থা বেশ কিছু ক্ষেত্রে কাজে আসেনি। তৃণমূল নেতৃত্ব জানতে পারেন, তাঁদেরই দলের পঞ্চায়েত প্রধান, সদস্য বা অন্য পদাধিকারীদের একাংশ নিজেদের মতো তালিকা তৈরি করছেন। এবং কিছু ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিডিও-রা তাতেই ‘সিলমোহর’ দিচ্ছেন। এর পরেই প্রশাসন এবং শাসকদল দু’তরফেই ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু হয়। দুই ২৪ পরগনায় এই ক্ষতিপূরণ নিয়ে অভিযোগ সব থেকে বেশি। উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটা ছাড়াও, হাবরা ও দেগঙ্গায় প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের বাদ দিয়ে তালিকা তৈরির অভিযোগ উঠেছে। তবে দেগঙ্গার ঘটনা সম্পর্কে অবশ্য তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতার বক্তব্য, এটা নিছক ত্রাণের বিষয় নয়। এ ক্ষেত্রে গোলমালের চরিত্র অনেকটা ভাঙড়ের ‘পাওয়ার গ্রিড’ আন্দোলনের মতো। যেখানে বাইরে থেকে রাজনৈতিক উস্কানির খবর আসছে।
যে সব জায়গায় ত্রাণ ও ক্ষতিপূরণ বিলি নিয়ে বিক্ষোভ হয়েছে, সর্বত্রই বিরোধী রাজনৈতিক দলের উপস্থিতি রয়েছে বলেও মনে করছেন শাসকদলের নেতারা। তবে দলের এক নেতা বলেছেন, ‘‘সব অভিযোগ যাচাই করে দেখা হবে। রাজ্য সরকার ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য যে অর্থ বরাদ্দ করেছে তা কোনওভাবেই আত্মসাৎ করতে দেওয়া হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy