জাকিরের বাড়ি এবং দফতরে আয়কর হানার নেপথ্যে শুভেন্দুর ভূমিকা রয়েছে বলে ইঙ্গিত করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
জঙ্গিপুরের তৃণমূল বিধায়ক জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্র’ করা হয়েছে। প্রাণে মারার চেষ্টাও করা হয়েছে। সোমবার মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘিতে গিয়ে এমনই অভিযোগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জাকিরের বাড়ি, দফতর এবং চালকলে আয়কর অভিযানের নেপথ্যে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দিকে আঙুল তুলেছেন তৃণমূলনেত্রী। তবে তাঁর নাম করেননি। বলেছেন, ‘‘আমার দুর্ভাগ্য। কোনও এক জনকে দলের পক্ষ থেকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল কাজ করার জন্য। তিনি লাইন করে তৃণমূলের কোন লোকটা শক্তিশালী, তার বাড়িতে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। পরের বাড়িতে পাঠানোর আগে আয়নায় নিজের মুখটা তো দেখুন। আগে নিজেদের বাড়িতে ইডি-সিবিআইকে দিয়ে তল্লাশি করান।’’
সোমবার সাগরদিঘির সভায় উপস্থিত ছিলেন জাকিরও। তাঁর উপস্থিতিতেই মমতা ওই কথা বলেন। যা থেকে স্পষ্ট যে, দল হিসাবে তৃণমূল জাকিরের পাশেই দাঁড়াচ্ছে। তবে এর আগেই দলের তরফে জাকির সম্পর্কে ওই অবস্থান জানানো হয়েছিল। মমতার বক্তব্যে তা সিলমোহর পেল।
গত বুধবার জাকিরের বাড়ি, দফতর ও চালকলে তল্লাশি চালান আয়কর কর্তারা। বৃহস্পতিবার আয়কর দফতরের তরফে দাবি করা হয়, বিধায়কের বাড়ি থেকে ১১ কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। বিধায়কের কাছে কী ভাবে এত টাকা এল, তা নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়। যদিও বিধায়ক জানান যে, তাঁর কাছে ওই টাকার উৎসের ব্যাখ্যা রয়েছে। আয়কর দফতরের কথা মতোই নথিও জমা দেওয়ার কথা বলেন তিনি। বস্তুত, জাকির দাবি করেন, তাঁর হেফাজত থেকে ১১ কোটি নয়, ১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করেছে আয়কর বিভাগ।
জাকির তৃণমূল করেন বলেই তাঁর বাড়িতে আয়কর দফতর অভিযান চালাল কি না, সোমবার সেই প্রশ্নও তুলেছেন মমতা। সাগরদিঘির সভায় বলেছেন, ‘‘জাকির এক জন বিড়ি শিল্পপতি। দোষ থাকলে আইন ব্যবস্থা নেবে। তাঁর অনেক বিড়ি শ্রমিক রয়েছেন, ক’জন বিড়ি শ্রমিকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে? ক’জন কৃষকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট আছে, বলতে পারেন? এ সব চলবে না।’’ শ্রমিকদের বেতন দিতে হয় নগদ টাকায়। তাই জাকিরের বাড়িতে নগদ টাকা থাকা ‘দোষের নয়’ বলে আগেই ব্যাখ্যা দিয়েছিল তৃণমূল। মমতার অভিযোগ, ‘‘জাকিরের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। প্রাণে মারার চেষ্টা হয়েছে।’’ তার পরেই নাম না করে শুভেন্দুকে ওই ঘটনার ‘নেপথ্যচারী’ বলে উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
তৃণমূলে থাকাকালীন মুর্শিদাবাদের পর্যবেক্ষক করা হয়েছিল শুভেন্দুকে। ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন শুভেন্দু। তার পর থেকেই শুভেন্দু বনাম তৃণমূল সংঘাতের পারদ চড়ছে। ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রামে শুভেন্দুর কাছে পরাজিত হন মমতা। নন্দীগ্রামের ফলপ্রকাশের পর সেই সংঘাত আরও তীব্র হয়। নারদকাণ্ডে নাম জড়িয়েছিল শুভেন্দুর। ‘নিজেকে বাঁচাতে’ শুভেন্দু বিজেপিতে গিয়েছেন বলে বার বার সরব হয়েছে বাংলার শাসকদল। শুভেন্দু বিজেপি নেতা বলেই তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না, এই অভিযোগও করেছে তৃণমূল। শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার পদক্ষেপের নেপথ্যে রাজ্য বিজেপি নেতাদের ভূমিকা রয়েছে বলেও সরব হয়েছে জোড়াফুল শিবির।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy