ছবি: পিটিআই।
রাজ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের পিএম কিসান প্রকল্প চালু করতে শর্ত দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ৯ সেপ্টেম্বর এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রীর কাছে এক চিঠিতে প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ অর্থ বণ্টনের দায়িত্ব রাজ্য সরকারের হাতে দেওয়ার কথা বলেছেন তিনি। কৃষি বিল নিয়ে বিতর্কের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর এই চিঠি নিয়ে শাসক ও বিরোধীদের মধ্যে নতুন তরজা শুরু হয়েছে। কেন্দ্রের ওই কৃষি-প্রকল্প ছাড়াও আয়ুষ্মান ভারত চালু করতেও একই শর্ত জানিয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমরকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, পিএম কিসান প্রকল্পের আওতায় কৃষকদের সুবিধা দিতে রাজি রাজ্য। সে ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় তহবিল সরাসরি রাজ্য সরকারকে দেওয়া হোক। রাজ্যই দায়িত্ব নিয়ে তার প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনায় উপভোক্তার হাতে আর্থিক সুবিধা পৌঁছে দেবে। প্রসঙ্গত, এই প্রকল্পে সরাসরি উপভোক্তার অ্যাকাউন্টে টাকা দেয় কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধনের উদ্দেশে মমতার আর্জি, আয়ুষ্মান প্রকল্পে খরচের পুরোটা কেন্দ্রই বহন করুক। প্রকল্পের পুরো বরাদ্দ রাজ্য সরকারের মাধ্যমেই খরচ করা হোক।
কৃষকদের জন্য পিএম কিসান এবং চিকিৎসা বিমার সুবিধাযুক্ত আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প এত দিন মানেনি রাজ্য সরকার। তা নিয়ে রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক তরজা অব্যাহত। যদিও রাজ্য সরকারের দাবি, এই কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলি চালু হওয়ার অনেক আগেই রাজ্যে কৃষকবন্ধু এবং স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প চালু হয়েছে। উপরন্তু, সুবিধার দিক থেকে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের তুলনায় অনেক এগিয়ে রাজ্যের প্রকল্প। অন্য দিকে কেন্দ্রের দাবি, রাজ্য প্রকল্পগুলি মানলে বহু মানুষের উপকার হত। পর্যবেক্ষক শিবিরের ধারণা, আগামী বছর বিধানসভা ভোটের আগে এই কৌশলী পদক্ষেপ করলেন মমতা। তবে শর্তসাপেক্ষে হলেও রাজ্য কেন এই প্রকল্প চালু করতে চাইছে, তা নিয়ে মন্তব্য করতে নারাজ প্রশাসনিক মহল।
আরও পড়ুন: ‘ভূতের দলে’ সর্ষেই সাফল্যের কারণ?
আরও পড়ুন: ‘আমার পোলাটা তো সব সময় আতিউরের সঙ্গে ঘুরত, ওর কী হবে গো!’
মুখ্যমন্ত্রীর এমন দাবিকে হাতিয়ার করেছেন বিরোধীরা। বিজেপি’র কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ বলেন, ‘‘কেন্দ্রের যে প্রকল্পে তৃণমূলের কাটমানি খাওয়ার সুযোগ রয়েছে, সেই প্রকল্পকে রাজ্যে চালু করতে তারা রাজি আছে। মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া চিঠি থেকে সেটাই প্রমাণিত।’’ এই অভিযোগের প্রতিবাদ করেছে শাসকদল। দলের মহাসচিব ও শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিজেপি সরকার শুধু মিথ্যা ছড়াতে ব্যস্ত। কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রীকে লেখা মুখ্যমন্ত্রীর চিঠিটাই তাদের পড়া হয়নি। সহযোগিতা শব্দটি কখনও শুনেছেন?’’
২০১৮ থেকে শুরু পিএম কিসান প্রকল্প। কেন্দ্রের দাবি, ওই প্রকল্পে সাড়ে আট কোটি ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক বার্ষিক ছ’হাজার টাকা করে অর্থ সাহায্য পান। রাজ্যের বক্তব্য, কৃষকবন্ধু প্রকল্পে তা পাঁচ হাজার টাকা। উপরন্তু, কৃষকের মৃত্যু হলে ওই পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয়। রাজ্যে প্রায় ৭৩ লক্ষ কৃষক এই সুবিধা পাচ্ছেন। সরকারি খরচে কৃষকদের জন্য ফসল বিমাও করে দেওয়া হয়েছে। আবার আয়ুষ্মানের সুবিধা নিলে রাজ্যের প্রায় দেড় কোটি পরিবার বছরে পাঁচ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্যবিমা পেত। উল্টে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে খরচের ৪০ ভাগ দিতে হত রাজ্যকে। কিন্তু রাজ্যের স্বাস্থ্যসাথীতে এখনই প্রায় সাড়ে সাত কোটি মানুষ সুবিধা পাচ্ছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy