মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি পিটিআই।
বাংলার বিধানসভা ভোটে বিজেপিকে বিপুল ব্যবধানে হারানোর পরে এই প্রথম আজ, সোমবার দিল্লি আসছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিকেলে তাঁর দিল্লি পৌঁছনোর কথা।
পেগাসাস-কাণ্ড থেকে পেট্রল-ডিজেলের চড়া দাম— গত এক সপ্তাহ ধরে এমন বিভিন্ন বিষয় নিয়ে উত্তপ্ত রাজধানীর রাজনীতি। কার্যত অচল সংসদ। নরেন্দ্র মোদী সরকার বনাম তৃণমূল-সহ বিরোধীদের এই সংঘাতপূর্ণ আবহে চলতি সপ্তাহের প্রায় পুরোটাই দিল্লিতে থাকবেন তৃণমূলনেত্রী। কংগ্রেসনেত্রী সনিয়া গাঁধী, এনসিপি নেতা শরদ পওয়ার-সহ শীর্ষ বিরোধী নেতাদের অনেকের সঙ্গে তাঁর কথা বলার কর্মসূচি রয়েছে। আনুষ্ঠানিক ভাবে এখনই বিরোধী বৈঠক না-হলেও, মমতার সঙ্গে দেশের শীর্ষ স্থানীয় বিরোধী নেতাদের এই সব দেখা-সাক্ষাৎ ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে, মঙ্গলবারই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তাঁর বৈঠকের সম্ভাবনা। সেখানে রাজ্যের বিভিন্ন দাবিদাওয়ার কথা উঠতে পারে। সাক্ষাৎ হতে পারে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গেও। চার দিনের সফরে রবিবারই কোবিন্দ কাশ্মীরে পৌঁছেছেন। তাই তিনি দিল্লি ফেরার পরে মমতার সঙ্গে তাঁর সাক্ষাতের সময় চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা।
২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকেই বিরোধী শিবিরকে এক হওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন মমতা। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তৃণমূলনেত্রী দিল্লিতে পা রাখার চব্বিশ ঘণ্টা আগে বিরোধী ঐক্যের একটি অর্থবহ ছবি তৈরি হতেও দেখা গেল। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফোনে কেন্দ্রের আড়ি পাতার অভিযোগ সামনে এনে মোদী সরকারকে আক্রমণ করল সনিয়া গাঁধীর দল! কিছুটা অভূতপূর্ব ভাবে অভিষেকের ছবি দিয়ে টুইট করেছে কংগ্রেস। ছবির পাশে লেখা, ‘‘আপনারা সময়ক্রমটা (ক্রোনোলজি) বুঝে নিন। পেগাসাস স্পাইওয়্যারের নিশানায় কে? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কখন? ২০২১ সালে। কেন? পশ্চিমবঙ্গের ভোট। মোদী সরকারের নিরাপত্তাহীনতা সীমাহীন।’’ কংগ্রেসের টুইটার হ্যান্ডলে এই ছবি-সহ পোস্টটির উপরে লেখা রয়েছে, ‘‘শত্রুদের বেশি কাছে রাখতে হয়—এই প্রবচন নিয়ে একটু বেশিই এগিয়ে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।’’ তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন কংগ্রেসের এই পোস্টটিকে তুলে আবার রি-টুইট করেছেন। উপরে লিখেছেন, ‘খেলা হবে’!
দিল্লি এলে, এখন সাংসদ অভিষেকের সাউথ অ্যাভিনিউয়ের ফ্ল্যাটে থাকেন মমতা। এ বারেও মুখ্যমন্ত্রী সেখানে থাকবেন। শোনা গিয়েছে, সনিয়া, শরদের মতো শীর্ষ স্তরীয় প্রবীণ নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে দেখা করতে নিজে যাবেন মমতা। সনিয়া যেমন ইতিমধ্যেই তাঁকে চায়ের আমন্ত্রণ জানিয়ে রেখেছেন। এ নিয়ে বার্তা বিনিময়ও হয়েছে তাঁদের মধ্যে।
সূত্রের খবর, এর বাইরেও যাঁদের সঙ্গে মমতার কথা বলার সময় ও সুযোগ হবে, তাঁদের সঙ্গে তিনি তা বলতে চান সাউথ অ্যাভিনিউয়ের ফ্ল্যাটেই। সেই সম্ভাব্য সাক্ষাতের তালিকায় নাম রয়েছে এসপি নেতা অখিলেশ যাদব, আপ নেতা অরবিন্দ কেজরীবাল প্রমুখের।
২১ জুলাইয়ের মঞ্চেই মমতা জানিয়েছিলেন, দিল্লি গিয়ে সনিয়া, শরদ-সহ বিরোধী নেতাদের সঙ্গে কথা বলতে চান তিনি। শরদ পওয়ার, পি চিদম্বরমদের উদ্দেশে বলেছিলেন, যদি সবাই মিলে বসার ব্যবস্থা করা যায়, তবে আরও ভাল।
প্রাথমিক ভাবে কথা বলার জায়গা হিসেবে বঙ্গভবনের নাম শোনা গিয়েছিল। কিন্তু কোভিড-পরিস্থিতি বিবেচনা করে এখনই সবাই মিলে একসঙ্গে বসা উচিত হবে না বলে মনে করছেন মমতা। একই কারণে তিনি সংসদের সেন্ট্রাল হলেও যাবেন না বলে ভেবে রেখেছেন। সে ক্ষেত্রে তাঁর কর্মসূচি হবে একক ভাবে প্রবীণ নেতাদের কাছে যাওয়া এবং অন্যদের সঙ্গে তাঁর দিল্লির ঠিকানায় দফায়-দফায় দেখা করা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy