আদিবাসী বিয়ের আসরে তালে তালে পা মেলালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার গাজলে। ছবি: জয়ন্ত সেন
আদিবাসীদের সঙ্গে নিবিড় সংযোগ স্থাপনে এ বারে চা বলয় এবং জেলায় জেলায় গণবিবাহের অনুষ্ঠান করার কৌশল নিল তৃণমূল। তবে দলগত ভাবে নয়, এই অনুষ্ঠান হবে পুলিশ-প্রশাসনের তদারকিতে। বৃহস্পতিবার মালদহের গাজলে এমনই এক অনুষ্ঠানে সক্রিয় ভাবে অংশ নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আদিবাসীদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নাচলেন, নতুন বর-বউদের হাতে উপহার তুলে দিলেন, বরকে পরিয়ে দিলেন বিয়ের টোপর। একই সঙ্গে জানিয়ে দিলেন, আদিবাসী প্রধান জেলাগুলিতে এ বার থেকে এমন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, লোকসভা ভোটে তৃণমূলের আদিবাসী ভোটব্যাঙ্কে যে ভাঙন দেখা গিয়েছে, তা সামলাতেই এই কৌশল নিয়েছেন দলীয় নেতৃত্ব। সম্প্রতি মালদহেই আদিবাসীদের গণবিবাহের অনুষ্ঠান করতে গিয়ে ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টির বিক্ষোভের মুখে পড়ে। দিশম পার্টির অভিযোগ ছিল, আদিবাসীদের বিয়ের অনেক রীতিনীতিই সেখানে মানা হয়নি। এ দিন অবশ্য মালদহ জেলা পরিষদের মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ সরলা মুর্মু বলেন, “মাঝির থান থেকে শুরু করে সিন্দুর খান্ডি, সবই হয়েছে। রীতির কোনও পরিবর্তন হয়নি এ দিন।” দিশম পার্টির কয়েক জন বিক্ষোভ দেখাতে এলেও পুলিশ আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের ধারেকাছে ঘেঁষতে পারেননি তাঁরা। পরে মালদহের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “আদিবাসীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়তে এবং রূপশ্রী প্রকল্পের বিষয়টি আদিবাসীদের মধ্যে তুলে ধরতে গণবিবাহের আয়োজন করা হয়। বিয়ের পর প্রত্যেকের অ্যাকাউন্টে রূপশ্রী প্রকল্পের টাকা চলে যাবে।”
দেখুন ভিডিও:
অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আগামী ২-৩ সপ্তাহের মধ্যে উত্তরবঙ্গের চা বলয়ে পুলিশ আদিবাসীদের গণবিবাহের অনুষ্ঠান করবে। রাজ্যের আদিবাসী প্রধান জেলাগুলিতে প্রতি বছর গণবিবাহের অনুষ্ঠান করা হবে। তাতে দশ হাজার গরিব মেয়ের বিয়ে দেব আমরা।” পাশাপাশি তিনি বলেন, “আদিবাসীদের জমি কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। আমাদের সরকার এই নিয়ে আইনও করেছে।” পরে এখান থেকে মুখ্যমন্ত্রী হেলিকপ্টারে কলকাতার দিকে রওনা দেন। পথে আবহাওয়া সামান্য খারাপ হলে বহরমপুরে নেমেছিলেন। কিন্তু পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে খবর পাওয়ার পরে তিনি মিনিট দশেকের মধ্যে সেখান থেকে কলকাতার দিকে উড়ে যান।
তৃণমূলের এই কৌশল সম্পর্কে উত্তর মালদহের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু অবশ্য বলেন, “তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে আদিবাসীদের কোনও উন্নতি হয়নি। তাই আদিবাসীরা বিজেপির সঙ্গে রয়েছে। গণবিবাহ দিয়েও কোনও লাভ হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy