মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি পিটিআই।
দলের নানা স্তরের জন প্রতিনিধিরা কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় ‘নড়াচড়া’ করছেন না। জনহিতে তৈরি প্রকল্পের কথা জনতাকে বোঝানোতেও যেন ‘খামতি’ থেকে যাচ্ছে। বিধানসভা ভোটের মুখে দাঁড়িয়ে কার্যত এই অভিযোগগুলো নিজেই সামনে আনলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার বাঁকুড়ায় প্রশাসনিক বৈঠকের শেষ পর্বে তাঁর নিদান, ‘‘পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদের সবাইকে বলব, একটু বেশি করে সক্রিয় হোন। আর এমএলএ-রাও একটু সক্রিয় হোন।’’ বিরোধীদের টিপ্পনী, ‘‘এগুলো ভোটের আগে বলার জন্য বলা। জনপ্রতিনিধিরা নড়াচড়া করেন না জানতে, মুখ্যমন্ত্রীর এত দিন লাগল!’’ রাজনীতির পর্যবেক্ষকদেরও একটা বড় অংশের মতে, গত লোকসভা ভোটে বাঁকুড়ায় তৃণমূলের খারাপ ফলের পরেও দলের একাংশ যে তা থেকে শিক্ষা নেননি, তা মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে স্পষ্ট।
বৈঠক শুরুর মুখেই এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘যাঁরা মিটিংয়ে আসেন, একটা কাগজকলম নেন কি কখনও লেখার জন্য? না কি আমি বলে চলে যাই, আর আপনারা চুপচাপ বসে বাড়ি চলে যান? লিখতে তো হবে। কাগজ-পেন বার করুন। লোককে তো বোঝাবেন। হঠাৎ একটা প্রকল্প তৈরি হল কেন?’’
এ প্রসঙ্গে তিনি ‘মাটির সৃষ্টি’ প্রকল্পে বাঁকুড়া জেলার কথা তুলে ধরেন। বলেন, ‘‘১,৭১৬ একর জমি। ৫৫টা জায়গা বাছাই করা হয়েছে। উপকৃত হবে ৪২,৫০০ গ্রাম। এটা খুব বড় কাজ। এলাকায় এলাকায় এই বার্তাটা দেবেন। শ্যামল (জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা) লিখে সব পাঠিয়ে দেবে।’’
আরও পড়ুন: কোভিড মোকাবিলায় প্রায় ৪ হাজার কোটি খরচ রাজ্যের, মোদীকে মমতা
বৈঠকের মাঝে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, ‘‘গ্রামে গ্রামে গিয়ে পঞ্চায়েত সমিতিগুলিকে কাজগুলো দেখতে হবে। দীর্ঘদিন পঞ্চায়েত সমিতিকে কোনও কাজ দেওয়া হত না। এটা খুব লড়াই করে আমরা করিয়েছি। পঞ্চায়েতের টাকার ১৫ শতাংশ জেলা পরিষদ এবং ১৫ শতাংশ পঞ্চায়েত সমিতি পাবে। তাতে আপনারাও কাজের সুযোগ পেলেন। কিন্তু সুযোগ যখন পেলেন, তখন আপনাদেরও ভাল করে কাজ করতে হবে।’’
আরও পড়ুন: কোভিডের প্রতিষেধক কবে ভারতে পাওয়া যাবে, জানেন না প্রধানমন্ত্রী
বৈঠকের শেষ দিকে বিধায়ক এবং অন্য জন প্রতিনিধিদের উদ্দেশে মমতার পরামর্শ, ‘‘একটু লোকের বাড়ি-বাড়ি যান। গিয়ে বসুন। তাঁদের সুখ-দুঃখের কথা শুনুন। আমার কাছেও অনেক লোক অনেক রকম দাবি-অভিযোগ দেয়। সব কি আমি করতে পারি? কিন্তু আমি ১০০ শতাংশ চেষ্টা করি। তাতে ৯৯ শতাংশ করে দিতে পারি। সুতরাং, এটা আপনাদেরও করতে হবে।’’
বিজেপির বাঁকুড়ার সাংসদ সুভাষ সরকারের কটাক্ষ, ‘‘প্রশাসনিক বৈঠককে ভোট-মঞ্চে নামিয়ে আনলেন মুখ্যমন্ত্রী। ওঁর জনপ্রতিনিধিরা যে কাজ করেন না, সেটা মানুষ জানেন। এখন ক্ষমতা হারানোর ভয়ে এ কথা বলতে হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে।’’ যদিও বাঁকুড়া জেলা তৃণমূল সভাপতি শ্যামল সাঁতরার দাবি, ‘‘সাধারণ মানুষ যাতে সমস্ত সুবিধা পান সে দিকে মুখ্যমন্ত্রীর সব সময় নজর থাকে। তাই বারবার আরও সক্রিয় হতে নির্দেশ দেন। এটা ভোটের জন্য নয়, দ্রুত উন্নয়ন করার জন্যই বলা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy