বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী ৩ শতাংশ ডিএ ঘোষণা করায় বৈঠকে উপস্থিত ফেডারেশন নেতারা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
রাজ্য সরকারি কর্মীদের জন্য মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০২১-এর জানুয়ারিতে ৩ শতাংশ ডিএ দেওয়া হবেবলে বৃহস্পতিবারজানান তিনি। তৃণমূলের ছাতার তলায় থাকা কর্মচারী সংগঠন ফেডারেশনের সঙ্গে বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসেছিলেন মমতা। সেই বৈঠকেই তিনি এই ডিএ ঘোষণা করেছেন। সিপিএম এবং বিজেপি-র কর্মী সংগঠন ডিএ-র এই হারে খুশি নয়। তবে তৃণমূলের কর্মী সংগঠনে এই ঘোষণার মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে।
ডিএ ইস্যুতে বিভিন্ন কর্মচারী সংগঠনের সঙ্গে রাজ্য সরকারের টানাপড়েন চলছে কয়েক বছর ধরেই। রাজ্য প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল (স্যাট) থেকে হাইকোর্ট, বারবার মামলা গড়িয়েছে নানা এজলাসে। কিন্তু টানাপড়েন মেটেনি। পরে রাজ্য সরকার ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করার কথা ঘোষণা করে। কিন্তু সে ঘোষণাও ছিল ডিএ-হীন। তাই বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী ৩ শতাংশ ডিএ ঘোষণা করায় বৈঠকে উপস্থিত ফেডারেশন নেতারা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই ৩ শতাংশ ডিএ দিতে রাজ্য সরকারের অতিরিক্ত খরচ হবে ২ হাজার কোটি টাকা।
সরকারের এই ঘোষণায় সন্তোষ প্রকাশ করা তো দূরের কথা, এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে সিপিএমের ছাতার তলায় থাকা কর্মচারী সংগঠন কোঅর্ডিনেশন কমিটি। সংগঠনের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক বিজয়শঙ্কর সিংহ বলেছেন, ‘‘২০১১ সালের পর থেকেই আমরা কেন্দ্রীয় হারে ডিএ পাই না। বছরে একটা করে ডিএ ঘোষণা হয়। ফলে প্রতি বছর বকেয়া ডিএ-র পরিমাণ বাড়তে থাকে। ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর হওয়ার পরেও সে বৈষম্য কাটেনি। এই মুহূর্তে অন্তত ২১ শতাংশ ডিএ বকেয়া। জানুয়ারিতে গিয়ে যেটা ২৪ শতাংশে পৌঁছবে। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করছেন মাত্র ৩ শতাংশ। এ ভাবে ভিক্ষের দানে চলতে পারে না।’’ বিজয়শঙ্করের কথায়, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা তো বটেই, অন্যান্য রাজ্য সরকারের কর্মীরাও নিয়ম অনুযায়ী ডিএ পাচ্ছেন। পাচ্ছেন না শুধু পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কর্মীরা। সুতরাং আমরা এই ঘোষণায় খুশি হতে পারছি না। সম্পূর্ণ ডিএ-র দাবিতে আমরা অনড় থাকছি।’’
আরও পড়ুন: উৎসবের মরসুম যেতেই ফের শ্লথ পরিষেবা ক্ষেত্র, নামল উৎপাদন সূচকও
তাৎপর্যপূর্ণ, বিজেপি-র ছাতার তলায় থাকা সংগঠন রাজ্য সরকারি কর্মচারী পরিষদও ‘ভিক্ষা’ শব্দবন্ধই ব্যবহার করেছে। সংগঠনের রাজ্য আহ্বায়ক দেবাশিস শীল বলেছেন, ‘‘সামনে নির্বাচন বলে আমাদের ভিক্ষা দেওয়া হল। গত ১ বছর ধরে কোনও ডিএ দেওয়া হয়নি। ২০২১-এর জানুয়ারিতে গিয়ে বকেয়া পৌঁছে যাবে ২৪ শতাংশে। সুতরাং ৩ শতাংশ ডিএ ঘোষণা করা আসলে কর্মীদের সঙ্গে তামাশা ছাড়া আর কিছু নয়।’’
তৃণমূলের কর্মী সংগঠনের যাঁরা বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, তাঁরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেও গোটা সংগঠনে কিন্তু এক সুর শোনা যায়নি। ফেডারেশনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা তথা প্রবীণ নেতা মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এই বৈঠকের খবর অনেককেই দেওয়া হয়নি। কোর কমিটির অনেক সদস্য বৈঠকে ডাক পাননি।’’ মনোজের কথায়, ‘‘ফেডারেশনের তরফ থেকে যাঁরা বৈঠকে উপস্থিত হয়েছিলেন, তাঁরা ডিএ-র দাবিই তোলেননি বলে জানতে পেরেছি। মুখ্যমন্ত্রী দয়ালু হয়ে ৩ শতাংশ ঘোষণা করেছেন।’’ ফেডারেশনের তরফ থেকে উপযুক্ত দাবি তোলা হলে ডিএ-র পরিমাণ আরও বেশি হতে পারত বলে মনোজ মনে করছেন।
আরও পড়ুন: মূল্যবৃদ্ধি ইস্যুতে কেন্দ্রকে আক্রমণ মমতার, তুললেন আইন প্রত্যাহার করার দাবি
শুধু সরকারি কর্মীদের জন্য অবশ্য নয়, পড়ুয়াদের জন্যও এ দিন বড় ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, অনলাইন ক্লাসের জন্য রাজ্যের সাড়ে ৯ লক্ষ পড়ুয়াকে ট্যাব দেবে সরকার। তিনি আরও জানান, উচ্চমাধ্যমিক এবং মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রীদের জন্য ট্যাব দেওয়া হবে। অষ্টম শ্রেণির ক্ষেত্রে প্রতি স্কুলকে একটি করে কম্পিউটার দেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy