সিঙ্গুর থেকে টাটা বিদায় নিয়ে আবারও পূর্বতন বাম সরকারকে দায়ী করলেন মমতা। — নিজস্ব চিত্র।
আবারও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিশানায় বাংলার প্রাক্তন শাসকদল। সিঙ্গুর থেকে টাটা বিদায় নিয়ে আবারও পূর্বতন বাম সরকারকে দায়ী করলেন তিনি। আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটকে নজরে রেখে বৃহস্পতিবার বার বার আক্রমণ করেছেন সিপিএমকে। আগের সরকারের বিরুদ্ধে তাপসী মালিক এবং কৃষকদের পুড়িয়ে মারার অভিযোগও তুলেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গ সফর সেরে কলকাতায় ফিরেছেন মমতা। শহরে পৌঁছেই তিনি যান মধ্য কলকাতায় একটি কালীপুজোর মণ্ডপ উদ্বোধনে। সেখানেও তিনি সিপিএমকে ‘কৃষক-বিরোধী’ বলে মন্তব্য করেন। তারা যে শিল্প করতে জানে না, সেই অভিযোগও তোলেন। মমতার কথায়, ‘‘খড়্গপুর ঘুরে আসুন। আইটি সেক্টর ঘুরে আসুন। শিল্প করতে জানতে হয়। আপনারা (পড়ুন সিপিএম) জোর করে কৃষকদের জমি কেড়েছেন। মানুষ মেরেছেন। তাপসী মালিকের মতো মেয়েকে পুড়িয়ে মেরেছেন। কৃষকদের পুড়িয়ে মেরেছেন।’’
পাশাপাশি মমতা জানিয়েছেন, এ রাজ্যে যে সব সংস্থা বিনিয়োগ করতে এসেছে, কারও মধ্যে তাঁর সরকার বিভেদ করেনি। এমনকি টাটা গোষ্ঠীর সঙ্গেও নয়। এ প্রসঙ্গে তিনি বিজেপি এবং সিপিএমকে খোঁচা দিয়ে বলেন, ‘‘কেউ কেউ বলে বেড়াচ্ছে, টাটা কেন বাংলার ছেলেমেয়েদের চাকরি দেবে? বিজেপি-সিপিএম এ সব বলে বেড়াচ্ছে। আমরা বিভেদ করি না। এ টু জেড যাঁরা আসবেন শিল্প করতে, আমরা বিভেদ করি না। টাটা স্টিলের চাকরি, প্রশিক্ষণ দিতেই পারে। ওরা জানেই না টাটার কতগুলি সংস্থা রয়েছে এখানে।’’
মমতা পুজো উদ্বোধনী মঞ্চে দাঁড়িয়ে মনে করিয়ে দেন, তিনি বিভেদ না করলেও টাটারা করেছিল। ২০১১ বিধানসভা নির্বাচনের আগে সিপিএমকে সমর্থন করেছিল টাটা সংস্থা বলে বৃহস্পতিবার অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘টাটারা বিধানসভার আগে আমাদের বিরুদ্ধে বিজ্ঞাপন দিয়েছিল। আপনাদের ভোট দেওয়ার জন্য। আমরা কোনও দিন কিছু বলিনি।’’
সিঙ্গুরে ন্যানো কারখানা গড়ে তুলতে না পারার জন্য মমতাকেই একটা সময়ে দায়ী করেছিলেন সংস্থার কর্নধার রতন টাটা। রাজ্য থেকে কারখানা গুটিয়ে নেওয়া আগে বলেছিলেন, ‘‘দু’বছর আগে একবার আমি বলেছিলাম, কেউ আমার মাথায় বন্দুর ঠেকালে, হয় সে গুলি চালাবে, নয়তো বন্দুক সরিয়ে নেবে। কিন্তু আমি আমার মাথা সরাব না। আমার মনে হয় মিস ব্যানার্জি ট্রিগারটা টেনেই দিয়েছেন।’’ এই অভিযোগ আরও এক বার এড়িয়ে গেলেন মমতা। তিনি আরও এক বার জানিয়ে দিলেন, কৃষকদের কথা ভেবেই সে দিন ওই পদক্ষেপ করা হয়েছিল। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা বলেছিলাম, যেখানে জমি আছে তোমরা নাও। বিকল্প জমি নাও। জোর করে কৃষকদের জমি, দু’ফসলি, তিন ফসলি জমি নেওয়া যাবে না। আমাদের আইনটাই আজ সারা ভারতের আইন হিসাবে গৃহীত হয়েছে।’’
মমতার দাবি, ক্ষমতায় আসার ১১ বছর পরেও নিজের সেই নীতি থেকে সরেননি তিনি। বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আজও কিছু করতে হলে আগে জিজ্ঞেস করি, কোথাও কৃষকদের উচ্ছেদ করতে হচ্ছে না তো? যদি কোথাও একটুও জমি নিতে হয়, আমি বলি, টাকা নিয়ে যদি কৃষকরা চুক্তি করতে চায়, তবেই নাও।’’
বুধবার শিলিগুড়িতে বিজয়া সম্মিলনীর একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে সিঙ্গুর থেকে টাটা বিদায়ের দায় সিপিএমের উপর চাপিয়েছিলেন মমতা। তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমি টাটাকে তাড়াইনি। সিপিএম তাড়িয়েছে। ওরা জোর করে জমি নিতে গিয়েছিল। আমরা ফিরিয়েছি।’’ এ বিষয়ে ক্ষোভ জানায় সিপিএম। রাজনীতির কারবারিরা বলেন, টেট, এসএসসি-কাণ্ডে কোণঠাসা মমতা পঞ্চায়েত ভোটের আগে হারানো জমি ফিরে পেতেই এ সব বলছেন। সরব হয়েছে সিপিএম থেকে বিজেপি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy