প্রতীকী ছবি।
দুই ছাত্রীর যৌন হেনস্থার অভিযোগে তুলকালাম কাণ্ড মালদহের ইংরেজবাজারের এক স্কুলে। ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের প্রতিবাদের জেরে পুলিশ অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে আটক করে। বুধবার বালুচর এলাকার জোহরমল শেঠিয়া হিন্দি হাইস্কুলের ঘটনা।
পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন দুপুরে পঞ্চম ও ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীদের একসঙ্গে বসিয়ে ভাল ও খারাপ স্পর্শের ফারাক বোঝাচ্ছিলেন এক শিক্ষিকা। সাপ্তাহিক সেই সচেতনতার পাঠ যখন চলছিল, তখন আচমকাই কেঁদে উঠল পঞ্চম শ্রেণির দুই ছাত্রী। শিক্ষিকার কাছে দুই ছাত্রী জানায়, স্কুলের দুই শিক্ষক তাদের মাঝেমধ্যেই যৌন নিগ্রহ করেন। বিবরণ শুনে আতঙ্কে ততক্ষণে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে দিয়েছে বাকি ছাত্রীরা। ছুটে আসে অন্য শ্রেণির ছাত্রেরাও। সব শুনে ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষকদের রেস্টরুমে আটকে তালা বন্ধ করে দেয়। খবর পেয়ে স্কুলে ছুটে আসেন অভিভাবকেরা। অভিযুক্ত দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে তাঁরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন।
পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে পুলিশ ডাকেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। পুলিশ গিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষকদের আটক করে। তবে ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা দুই শিক্ষককে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এ নিয়ে বিকেল থেকে দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বেধে যায় অভিভাবকদের। পুলিশকে লক্ষ করে তাঁরা এলোপাথাড়ি ইট ছোড়েন বলে অভিযোগ। এতে জখম হন দুই পুলিশ অফিসার। পুলিশও লাঠিচার্জ এবং কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় বলে দাবি স্থানীয়দের। তাঁদের দাবি, ঘটনায় জখম হয়েছে এক কিশোরও। পরে অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে আটক করে পুরাতন মালদহ থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। এই পরিস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আনন্দ রামের নিরাপত্তা দিতে তাঁকেও থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
তুলকালাম: ইংরেজবাজারের স্কুল চত্বরে কাঁদানে গ্যাস ছুড়ছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র
এ দিন গোলমালের খবর পেয়ে স্কুলে যান মালদহ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক তাপস বিশ্বাস। অভিযোগ, তাঁর সামনেও অভিভাবকেরা পুলিশকে লক্ষ করে ইট ছুড়তে থাকেন। জখম হন ইংরেজবাজার থানার এসআই সুবীর সরকার, এএসআই রাজীব পাল। ছুটে আসেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী। তিনি ক্ষুব্ধ অভিভাবকদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে পরিদর্শক বলেন, “অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। তারপর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।”
রাতের দিকে ইংরেজবাজার মহিলা থানায় দুই শিক্ষকের নামে অভিযোগ দায়ের করে নিগৃহীতা ওই দুই ছাত্রী। তারা দু’জনেই জানিয়েছে, ওই দুই শিক্ষক মাঝেমধ্যেই ক্লাসে তাদের যৌন নিগ্রহ করতেন। এতদিন ভয়ে কাউকে কিছু বলতে পারেনি তারা। এ দিন ভাল ও খারাপ স্পর্শ নিয়ে বিশেষ সচেতনতার ক্লাসে শিক্ষিকার কথায় সাহস পেয়ে তারা বলতে পেরেছে।
মালদহের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “অভিযু্ক্ত শিক্ষকদের আটক করা হয়েছে। পুলিশের উপরে হামলা চলেছে। বেশ কয়েক জন পুলিশ জখম হয়েছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy