অভিযোগ, মালদহের একটি স্কুল পরীক্ষার্থীদের ভারতের মানচিত্রে ‘আজাদ কাশ্মীর’ চিহ্নিত করতে বলেছে। — নিজস্ব চিত্র।
বিভিন্ন স্কুলের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র নিয়ে সদ্যই প্রকাশ পেয়েছে মাধ্যমিকের টেস্ট পেপার। সেই প্রশ্নমালা নিয়েই এ বার বিতর্ক। অভিযোগ, মালদহের একটি স্কুল পরীক্ষার্থীদের ভারতের মানচিত্রে ‘আজাদ কাশ্মীর’ চিহ্নিত করতে বলেছে। টেস্ট পেপারে রাখা হয়েছে সেই প্রশ্ন। মঙ্গলবার সেই প্রশ্নমালা প্রকাশ্যে আসতেই বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সরব হয়েছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীও। যদিও মধ্য শিক্ষা পর্ষদ জানিয়েছে, এই বিষয়ে স্কুলের যাঁরা জড়িত, তাঁদের বিরুদ্ধে ‘আইনানুগ’ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মঙ্গলবারই ‘ভুল সংশোধনী’ দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে পর্ষদ। যদিও ‘আজাদ কাশ্মীর’ নিয়ে তাঁরা কোনও ভুল করেননি বলেই দাবি করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।
টেস্ট পেপারে মালদহের রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরের প্রশ্নপত্র প্রকাশিত হয়েছে। অভিযোগ, সেখানেই পাক অধিকৃত কাশ্মীরকে উল্লেখ করা হয়েছে ‘আজাদ কাশ্মীর’ বলে। তা নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করেছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার। তিনি বলেন, ‘‘এ নিয়ে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীকে খোঁজ নিতে হবে। কে বা কারা এর পিছনে রয়েছেন, জানতে হবে। অভিযোগ সত্যি হয়, প্রকাশকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। যদি সত্যিই হয়, তা হলে তা রাজ্যের তোষণ নীতির পরিণাম। এর মধ্যে জাতীয়তাবাদবিরোধী একটা প্রচ্ছন্ন সুর রয়েছে। বিচ্ছিন্নতাবাদীদের উৎসাহিত করবে এ সব।’’ কেন্দ্রীয় সরকার আলাদা ভাবে স্বাধীন তদন্ত করবে বলেও জানিয়েছেন সুভাষ।
ওই প্রশ্নপত্রের ছবি সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে একহাত নিয়েছেন বিজেপি সাংসদ তথা দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি লিখেছেন, ‘‘মমতা সরকার বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সমর্থক। ২০২৩ সালের টেস্ট পেপারের ১৩২ নম্বর পাতায় ইতিহাসের প্রশ্নপত্রটি দেখুন। পাক অধিকৃত কাশ্মীরকে আজাদ কাশ্মীর হিসাবে চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে।’’
কংগ্রেসও বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে। দলীয় নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য মনে করেন, শিক্ষকদের এ ধরনের প্রশ্ন থেকে দূরে থাকা উচিত। তিনি বলেন, ‘‘আজাদ কাশ্মীর কেন পাকিস্তানে, তার সুদীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। আমি মনে করি এ ধরনের প্রশ্ন থেকে বিরত থাকা উচিত।’’
এ বিষয়ে পর্ষদ সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পর্ষদ খোঁজ নিয়ে দেখেছে, ওই স্কুলের ইতিহাসের শিক্ষক প্রশ্ন করেননি, অন্য কেউ করেছিলেন। টেস্ট পেপার তৈরির ক্ষেত্রে পর্ষদের ভূমিকা থাকে না। বিভিন্ন স্কুলের টেস্টের প্রশ্ন সংগ্রহ করে সেগুলি ছাত্রছাত্রীদের সুবিধার্থে এক সঙ্গে করে টেস্ট পেপার প্রকাশ করা হয়।’’ তিনি জানিয়েছেন, এ নিয়ে দু’টি পদক্ষেপ করবে পর্ষদ। এক, মঙ্গলবাই ভুল সংশোধনী দেওয়া হবে। ওই প্রশ্ন যেখানে যেখানে রয়েছে, তা সরিয়ে দেওয়া হবে। দুই, ওই স্কুলে যাঁরা এই বিষয়ের সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যে স্কুলের প্রশ্ন নিয়ে বিতর্ক, মালদহের সেই রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরের প্রধান শিক্ষক তর্পহারানন্দ বিতর্ক উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের মাধ্যমিকের টেস্ট পেপার নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। ছেলেদের কাছে ইতিহাস তুলে ধরেছি। অন্য কিছু নয়।’’ তিনি এ-ও জানিয়েছেন, এর মাধ্যমে ছাত্রদের মধ্যে কোনও নেতিবাচক ভাবনা তাঁরা ঢোকাতে চান না। তাঁর কথায়, ‘‘নেতিবাচক ভাবনা ছাত্রদের মধ্যে ঢোকাতে চাই না। ছাত্রদের মধ্যে জাতীয়তাবোধ, দেশপ্রেমের ভাবনা যাতে জাগ্রত হয়, এটাই স্বামীজির ভাবনা। এই কাজটাই করি। যে সত্য ইতিহাসের পাতায় রয়েছে, তাকেই তুলে ধরা হয়েছে। সরকারি বইয়ের নিরিখে প্রশ্ন করি। পড়াশোনা করাই। বই থেকেই প্রশ্ন করা হয়েছে।’’
1.1 The #MamataGovt is a supporter of the separatist forces
— Dilip Ghosh (@DilipGhoshBJP) January 17, 2023
Check the Marked Section of History Question Paper on page 132 in Madhyamik Test Paper 2023. Students have been asked to identify the part of Pakistan occupied Kashmir as Azad Kashmir. pic.twitter.com/1c2npeR0Um
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy