মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের মূল অর্থ বুঝতে মরিয়া রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
প্রয়োজনে অন্য আর কারও কাছে যাওয়ার দরকার নেই কলেজ শিক্ষকদের, বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। যে কোনও সমস্যায় রাজ্যের নির্বাচিত সরকারের কাছে যাওয়ারই পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। এই ‘অন্য কারও’ বলতে তিনি কার বা কাদের কাছে যাওয়ার কথা বলতে চেয়েছেন, তা অবশ্য মঙ্গলবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে উপস্থিত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছে খোলসা করেননি মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু বুধবার সকালে মুখ্যমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের উল্লেখ করেই নতুন ‘যুদ্ধ ঘোষণা’ করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। টুইটারে লিখলেন, “এই মন্তব্যের প্রকৃত অর্থ বুঝতে চাইছি।”
কেন রাজ্যপালের এই প্রতিক্রিয়া? নিজেকে কেন জড়াচ্ছেন রাজ্যপাল? মমতা কারও নাম না করে বললেও, বিষয়টিকে রাজ্যপাল নিজের দিকেই টেনে নিয়েছেন বলে রাজনৈতিক মহলের মত। নেতাজি ইন্ডোরে গতকাল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলেজ শিক্ষকদের নতুন পে স্কেল দেওয়ার ঘোষণামঞ্চে বলেছিলেন, ‘‘আমাদের সরকার জনাদেশে নির্বাচিত। ঠিক যেমন কেন্দ্রেও ভোটে জিতে সরকার তৈরি করেছে একটি রাজনৈতিক দল। সংবিধান আমাদের হাতেও কিছু ক্ষমতা দিয়েছে। কাজেই আপনারা যে কোনও সমস্যায় আমাদের কাছে আসুন, অন্য কারও কাছে যাওয়ার দরকার নেই।’’
মমতা কারও নাম না করলেও, তিনি মঙ্গলবার এই মন্তব্যের জন্যে বেছে নিয়েছিলেন এমন এক মঞ্চ যেখানে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা। জল্পনা, এই স্থান থেকে দেওয়া বার্তার তাই অন্য তাৎপর্য রয়েছে। রাজ্যের বেশির ভাগ সরকারি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই আচার্যের পদ অলংকৃত করেন রাজ্যপাল। ‘আলংকারিক’ পদমর্যাদা উপভোগ না করে, দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন বিষয়ে সক্রিয় হতে দেখা যাচ্ছে বর্তমান রাজ্যপালকে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলমালে নিজেই উদ্যোগ নিয়ে গিয়েছেন বাবুল সুপ্রিয়কে বের করে আনতে। আবার ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে ডি-লিট প্রাপকদের নাম ঘোষণা নিয়েও মতামত দিয়েছেন তিনি। ইতিপূর্বে অন্য কোনও রাজ্যপালের তরফে শিক্ষাঙ্গনে এমন ঘনঘন তত্পরতা দেখা যায়নি।
আরও পড়ুন:সরকার গড়ুক বিজেপি-শিবসেনা, বিরোধী আসনে বসবে এনসিপি-কংগ্রেস: শরদ পওয়ার
আরও পড়ুন:ফের রাজ্যে সক্রিয় ডি-কোম্পানির লটারি, পাকিস্তান থেকে আসা ফোনে প্রতারিত অনেকে
রাজ্যপালের এ দিনের টুইটও সেই সক্রিয়তার প্রসঙ্গ ছুঁয়ে গিয়েছে। বুধবার সকালে মমতার বক্তব্য নিয়ে নিজের টুইটার হ্যান্ডলে রাজ্যপাল লেখেন, “আমি এই মন্তব্যের প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত বোঝার চেষ্টা করছি। এটুকু বলতে পারি রাজ্যপাল বা আচার্য হিসেবে যা করেছি, তা সংবিধান মেনেই করেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মাবলী মেনেই চলেছি।’’
রাজ্যপাল নিযুক্ত হওয়ার পর থেকেই বার বার জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে রাজ্যের শাসকদলের সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যাদবপুর কাণ্ড, জিয়াগঞ্জ হত্যাকাণ্ড থেকে শুরু করে পুজো কার্নিভাল— রাজ্যপাল বার বার অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। শাসকদল তৃণমূলের প্রথম সারির নেতারা পাল্টা মন্তব্যও করেছেন। রাজ্যপালের জন্য কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা নিয়েও বাদানুবাদ চলেছে। কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে আমন্ত্রণ না পেয়েও উষ্মা প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল। যদিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে এ সব নিয়ে এখনও সরাসরি কোনও প্রতিক্রিয়া আসেনি। বরং এর মধ্যেই, তিনি রাজ্যপালকে নিজের বাড়ির কালীপুজোয় সস্ত্রীক আমন্ত্রণ জানিয়ে আপ্যায়ন করেছেন। রাজ্যপাল নিজে অবশ্য ভাইফোঁটায় যেতে চেয়েছিলেন মমতার বাড়িতে। মমতা ভাইফোঁটার বদলে কালীপুজোতেই তাঁকে আমন্ত্রণ করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy