পুলিশ-বিজেপি সংঘর্ষে রণক্ষেত্র মেদিনীপুর। নিজস্ব চিত্র।
জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি ছিল বিজেপির। সেই কর্মসূচিকে ঘিরেই সোমবার কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নিল মেদিনীপুর শহর। ইটবৃষ্টির পাশাপাশি পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ার অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। পাল্টা বিজেপির দাবি, এলোপাথাড়ি লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাসের সঙ্গে শূন্যে গুলি এবং বোমা ছোড়া হয়েছে পুলিশের দিক থেকেই। এই সংঘর্ষে আহত হয়েছেন বিজেপি এবং পুলিশ— দু’পক্ষের অনেকেই।
পুলিশ পশ্চিম মেদিনীপুরে শাসক দলের হয়ে কাজ করছে, একের পর এক মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের— এই সব অভিযোগেই এ দিন এসপি অফিস ঘেরাওয়ের ডাক দিয়েছিল বিজেপি। ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, এ দিন বেলা ১১টা থেকেই জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিজেপি কর্মীরা জমায়েত শুরু করেন এসপি অফিসের সামনে। বেলা ১টা নাগাদ বিজেপির জেলা এবং রাজ্য স্তরের নেতৃত্ব এসপি অফিসের সামনের অস্থায়ী মঞ্চে ভাষণ দেওয়া শুরু করেন। উপস্থিত ছিলেন রাজ্য বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু-সহ ভারতী ঘোষ, অন্তরা ভট্টাচার্যের মতো নেতৃত্ব।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মঞ্চের অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরেই বিজেপি কর্মীরা আইনঅমান্য কর্মসূচির অংশ হিসাবে এসপি অফিসে ঢোকার চেষ্টা করেন। প্রস্তুত ছিল পুলিশ বাহিনীও। তারা একাধিক ব্যারিকেড তৈরি করে বিজেপি কর্মীদের রোখার চেষ্টা করেন। বিজেপি কর্মীরা প্রথম ব্যারিকেড ভেঙে দ্বিতীয় ব্যারিকেড ভাঙার জন্য এগোলে পুলিশ বাধা দেয়।
আরও পড়ুন: বিল নয়, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতাতেই কাজ হাসিল বিজেপির, রাজ্য পুনর্গঠনে আনতে হবে বিল
পুলিশের অভিযোগ, ওই সময়ে বিজেপি কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাথর, জলের বোতল ছোড়া শুরু করেন। পাল্টা পুলিশও লাঠিচার্জ করে। মুহূর্তের মধ্যে পুলিশ এবং বিজেপি কর্মীদের সংঘর্ষে কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় গোটা এলাকা। বিজেপি কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে। সেই সময় বোমা ছোড়ার অভিযোগ ওঠে। পুলিশের দাবি, বিজেপি কর্মীরা তাদের লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ে। বিজেপি যদিও পাল্টা দাবি করেছে, পুলিশের দিক থেকেই তাদের উদ্দেশে বোমা ছোড়া হয়েছিল। এমনকি শূন্যে গুলিও চালানোর অভিযোগও তারা তুলেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘বিক্ষোভকারীদের ছোড়া ইট এবং পাথরের ঘায়ে আহত হয়েছেন খড়্গপুরের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সুকোমল দাস-সহ ৯ পুলিশ কর্মী। তাঁরা খড়্গপুরের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।’’ অন্য দিকে বিজেপির দাবি, পুলিশের লাঠিতে তাঁদের শ’খানেক কর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন। আঘাত পেয়েছেন বিজেপি নেত্রী ভারতী ঘোষের দেহরক্ষী-সহ অন্তরা ভট্টাচার্যের মতো নেত্রীও।
রাজ্য বিজেপির অন্যতম রাজ্য সম্পাদক সায়ন্তন বসু এ দিন বলেন, ‘‘শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে আমরা যাচ্ছিলাম। পুলিশ বেনজির বলপ্রয়োগ করেছে। লাঠি চালিয়েছে, শূন্যে গুলি চালিয়েছে, কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়েছে। এমনকি পুলিশের দিক থেকে বোমা এবং ইট-পাটকেলও উড়ে এসেছে। পুলিশের ছোড়া ইটের ঘায়ে ভারতী ঘোষের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফ-র জওয়ানও জখম হয়েছেন।’’ পুলিশের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘ ক্যামেরায় সব কিছু ধরা আছে। পুলিশ প্রমাণ দিক যে আমরা ইট ছুড়েছি।”
আরও পড়ুন: 'এই দিনও কেটে যাবে', জম্মু-কাশ্মীর প্রসঙ্গে লিখলেন জাইরা
পুলিশের দাবি এ দিনের কর্মসূচিতে ছিলেন প্রায় ৬০০ বিজেপি কর্মী। বিজেপি জানিয়েছে, এ দিন তাদের প্রায় তিন হাজার কর্মী সমর্থক যোগ দিয়েছিলেন ওই কর্মসূচিতে।
আরও পড়ুন: কাশ্মীর নিয়ে তোলপাড় সংসদ, পক্ষে-বিপক্ষে ওলটপালট জোটের হিসাব
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy