Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Majid Master

‘সিপিএমের আমলে চিরকুটে চাকরি হলে রাজ্য সরকার তদন্ত করে ব্যবস্থা নিক’, মত মজিদ মাস্টারের

চিরকুটে নিয়োগ বিতর্কে রাজ্য রাজনীতি সরগরম হলেও শুক্রবার শাসনের একদা প্রভাবশালী সিপিএম নেতা মজিদ মাস্টারের দাবি, সক্রিয় রাজনীতিতে থাকাকালীন তেমন ক্ষমতাধর ছিলেন না তিনি।

Picture of Majid Master

শাসনে একদা ‘প্রভাবশালী’ মজিদ মাস্টার অবশ্য নিজের আমলে তাঁর এক ছাত্রীর জন্য ‘ডেপুটেশনে চাকরি’ করিয়ে দিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শাসন শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২৩ ১৬:০৫
Share: Save:

বামফ্রন্ট জমানায় চিরকুটের মাধ্যমে অর্থাৎ সুপারিশে চাকরি হলে তা নিয়ে তদন্তের পর উপযুক্ত পদক্ষেপ করুক তৃণমূল সরকার। এমনই মনে করেন উত্তর ২৪ পরগনার শাসনের একদা দোর্দণ্ডপ্রতাপ বাম নেতা মজিদ মাস্টার। চিরকুটে নিয়োগ বিতর্কে রাজ্য রাজনীতি সরগরম হলেও শুক্রবার মজিদ মাস্টারের দাবি, সক্রিয় রাজনীতিতে থাকাকালীন তেমন ক্ষমতাধর ছিলেন না তিনি। তাঁর মন্তব্য, এককালে তিনি পঞ্চায়েতের কিছু কাজকর্ম করলেও চাকরি করিয়ে দেওয়ার মতো ক্ষমতা ছিল না তাঁর।

বাম জমানায় শাসনে ভেড়ি নিয়ে রাজনীতিতে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা ভোগ করতেন সিপিএম নেতা মজিদ মাস্টার। সে সময় বিরোধী দলগুলির কাছে ত্রাস ছিলেন তিনি। তবে ক্ষমতার পরিবর্তনের পর এককালে গ্রামছাড়া মজিদ ২০১৫ সালের পর থেকে সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেছেন। ৩-৪ বছর আগে অবশ্য শাসনে নিজের বাড়িতে ফিরতে পেরেছেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা ঝুলছে। শুক্রবার তেমনই একটি মামলায় বারাসত আদালতে হাজিরা ছিল। আদালত থেকে বেরিয়ে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে আনন্দবাজার অনলাইনের প্রশ্নের উত্তরে মজিদ মাস্টার বলেন, বিষয়টি কোর্টের বিচারাধীন। আমি মন্তব্য করাটা সমীচীন মনে করি না। সিপিএম যদি চিরকুট দিয়ে চাকরি দিয়ে থাকে, তবে বর্তমান সরকার তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিক।’’

একদা ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা তথা অধুনা রাজ্যের মন্ত্রী উদয়ন গুহের দাবি ছিল, বাম জমানায় সুপারিশে নিয়োগ করা হত। একই মত রাজারহাট এলাকার প্রাক্তন সিপিএম নেতা তথা অধুনা তৃণমূল নেতা তাপস চট্টোপাধ্যায়েরও। তবে তাঁদের নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি নন মজিদ। তাঁর কথায়, ‘‘উদয়ন গুহকে আমি কখনও দেখিনি। তিনি কেমন লোক, আমি জানি না। তাপস চ্যাটার্জিকে দেখিনি। তিনি উপরের লোক। ওঁরা অনেক কিছু বলতে পারেন। আমি ওঁদের ব্যাপারে জানি না। আমি পাড়াগেঁয়ে লোক। পঞ্চায়েতের কাজকর্ম করেছি। আমার চিরকুট পাঠানোর ক্ষমতা ছিল না।’’

শাসনে একদা ‘প্রভাবশালী’ মজিদ অবশ্য নিজের আমলে তাঁর এক ছাত্রীর জন্য ‘ডেপুটেশনে চাকরি’ করিয়ে দিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন। ওই সম্প্রদায়ের মানুষজনকে উৎসাহিত করার জন্যই তেমন করেছিলেন বলেও দাবি তাঁর। মজিদের কথায়, ‘‘এক বার কাওড়াপাড়ার আমার এক ছাত্রীকে ডেকে এনে আমাদের স্কুলে (চাকরিতে) ঢুকিয়ে দিয়েছিলাম। অনেকে দরখাস্ত করেছিলেন। আমি বলেছিলাম, কাওড়াপাড়ার ওই মেয়েটিকে চাকরি দিলে তফসিলিদের মধ্যে উৎসাহ জাগবে। তা-ই করেছি। বাকিরা যাঁরা চাকরির দরখাস্ত করেছিলেন, তাঁদের সরে যেতে বলেছিলাম। ভয় দেখিয়ে নয়, তফসিলিদের জন্য কিছু করার তাগিদেই এমন করেছিলাম।’’

প্রসঙ্গত, বাম আমলে ‘ডেপুটেশনে’ চাকরির বন্দোবস্ত ছিল। স্কুলে চাকরিরত অবস্থায় যাঁরা বিএড পড়াশোনার জন্য যেতেন, তাঁর জায়গায় ১ বছরের জন্য অস্থায়ী চাকরি হত। সে ক্ষেত্রে অস্থায়ী শিক্ষক-শিক্ষিকাকে বেতনের ৮০ শতাংশ দেওয়া হত।

মজিদের অবশ্য দাবি, ‘‘সারা জীবনে ওই একটি তফসিলি সম্প্রদায়ের মেয়েকে চাকরি দেওয়ার জন্য তদ্বির করেছিলাম। সেটা হয়েছিল। কিন্তু তা ছাড়া আর যা যা তদ্বির করেছিলাম, তার একটি চাকরিও হয়নি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

majid master Recruitment Scam TMC CPM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE