শাজাহান শেখ
দু’দুটো খুনের অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে। বিজেপি নেতা মুকুল রায় বলছেন, তিনি নাকি বাংলাদেশে পালিয়েছেন।
সে সব শুনে তিনি বলছেন, ‘‘আমি কেন বাংলাদেশে পালাব। আমার নামে মিথ্যা মামলা হয়েছে। আর ভয়ে বাংলাদেশে পালানোর ছেলে শাজাহান নয়। আমি ঠিক জায়গাতেই রয়েছি। যারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও তো খুনের মামলা রয়েছে।’’ পুলিশ যদিও বলছে, শাজাহান শেখকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি নিজে বলছেন, ‘‘আমি শাজাহান। আমি কেন পুলিশের থেকে পালিয়ে বেড়াব। আমি নিজে বাড়িতেই আছি।’’
মঙ্গলবার সকাল থেকে তাঁর ফোন ‘নট রিচেবল’। দুপুরে কিন্তু দিব্যি ফোনে ধরা গেল গত তিন দিন ধরে সন্দেশখালি কাণ্ডে সব থেকে আলোচিত চরিত্র শাহাজানকে। গত কয়েক দিনে তাঁর বিরুদ্ধে তোলাবাজি থেকে শুরু করে একাধিক অভিযোগ এনেছেন বিরোধীরা। তাতে কিন্তু বিন্দুমাত্র রাগতে দেখা গেল না শাজাহানকে।তোলাবাজির প্রশ্নে তিনি বললেন, ‘‘সারা সন্দেশখালিতে কেউ যদি আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে যে আমি তার কাছ থেকে এক কাপ চা খেয়েছি, তা হলে সব অভিযোগ মাথা পেতে নেব। আমি মানুষের সঙ্গে থাকি।’’ কিন্তু তোলাবাজির অভিযোগ তো অনেকেই করছেন। তাতে শাজাহানের প্রতিক্রিয়া, ‘‘ও সব মনগড়া অভিযোগ। বিজেপির চক্রান্ত।’’
ভাঙিপাড়ার খুনোখুনির পর থেকে ওই এলাকায় সাধারণ মানুষ শাজাহানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। কেন তাঁর বিরুদ্ধে মানুষের এত রাগ। এ প্রশ্নেও কিন্তু বিন্দুমাত্র বিচলিত নন তিনি। তাঁর জবাব, ‘‘এলাকার মানুষের কোনও রাগ নেই আমার উপরে। একজনেরও রাগ নেই। মিথ্যে, ভিত্তিহীন অভিযোগ। কেউ আমার সামনে দাঁড়িয়ে বলুক, আমার উপরে তাঁর রাগ আছে।’’
গত শনিবার ভাঙিপাড়া গ্রামে ঢুকেছিল তাঁর বাহিনী। নিহত এবং নিখোঁজ বিজেপি কর্মীর বাড়ির লোকেরা বারবার সেই অভিযোগ করেছেন। কিন্তু বাহিনীর কথা শুনে প্রায় আকাশ থেকে পড়ার অবস্থা হল শাজাহানের। বললেন, ‘‘বাহিনী! কিসের বাহিনী। আমার কোনও বাহিনী-ফাহিনী নেই। আমি সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে রাজনীতি করে। আমজনতাকে সঙ্গে নিয়ে চলি। সে জন্যই আমার উপরে এত রাগ বিজেপির।’’কিন্তু তিনি যদি মানুষের সঙ্গে মিশে রাজনীতি করেন, তাঁর উপরে যদি মানুষ এতই প্রসন্ন, তা হলে তাঁর নিজের এলাকায় বুথে বুথে বিজেপি তৃণমূলের থেকে বেশি ভোট পেল কী করে?
সন্দেশখালি ১ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি শাজাহান বলেন, ‘‘না, না তা নয়। কোথাও হয় তো একটা বুথে বিজেপি একটু বেশি ভোট পেয়েছে। গত বিধানসভা ভোটে সন্দেশখালিতে কি একজনেরও রক্ত ঝরেছে? এই লোকসভা ভোটে কি কোনও গোলমাল হয়েছে? কয়েকটা আসনে জিতে বিজেপি সারা রাজ্যকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে।’’
তা হলে তাঁর এলাকায় তিন তিনটে প্রাণ ঝরে গেল কী করে? বিজেপির দু’জনকেই বা কারা খুন করল? শাজাহানের জবাব, ‘‘যে কোনও মৃত্যুই দুঃখের। সে বিজেপিরই হোক বা সিপিএমের। আমি কিন্তু এটা চাইনি। তবুও দুঃখজনক ঘটনা ঘটে গেল। পুলিশ তদন্ত করছে।’’
পুলিশের তদন্তের উপরে সম্পূর্ণ আস্থা রয়েছে জানিয়ে শাজাহান বলেন, ‘‘সে দিন তো অনেক লোকই ছিল। তারা সকলে দেখেছে, কারা খুন করেছে। কয়েকটা দিন অপেক্ষা করুন, দেখুন পুরো ঘটনা পরিষ্কার হয়ে যাবে। যারা খুন করেছে, পুলিশ নিশ্চই তাদের ধরতে সক্ষম হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy