মণীন্দ্র বর্মা ও তাঁর মেয়ে টিয়া নিজস্ব চিত্র
পরে জেনেছি কালবৈশাখীর জন্য এমন কাণ্ড। কিন্তু বিমানে বসে প্রথমটায় বুঝতেই পারিনি কী ঘটেছে। বিমান কী রকম যে দুলছিল সেটা ভাবলে এখনও ভয়ে গায়ে কাঁটা দিচ্ছে। একের পর এক যাত্রী সিট বেল্ট ছিড়ে বিমানের মধ্যে ছিটকে পড়ছেন। আমার মেয়ে টিয়া তো ভয়ে আমায় আঁকড়ে ধরেছে। টানা কেঁদেই চলেছে। নিজেও ভয়ে পেয়ে গিয়েছি। মনে হচ্ছিল, মৃত্যুকে দেখতে পাচ্ছি। উপর থেকে একের পর এক লাগেজ পড়ছে। বিমানের দুলুনি একটা সময়ে এমন বেড়ে যায়, নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলাম যে, এ যাত্রায় আর বেঁচে ফেরা হবে না। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ যে, এখনও মেয়ের পাশে জীবিত অবস্থায় বসে রয়েছি।
মেয়েকে নিয়ে মুম্বই থেকে বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছি। বাড়ি থেকে খুব আনন্দ নিয়েই আমরা বেরিয়েছিলাম। বিমানে অন্ডালে নেমে আসানসোলে বিয়ে বাড়ি। এখন যে সেখানে এসে পৌঁছেছি সেটা সত্যিই ঈশ্বরের কৃপা। তবে পাইলটকেও ধন্যবাদ জানাতে হবে যে, তিনি ওই রকম দুর্যোগের মধ্যেও বিমানকে মাটিতে নামাতে পেরেছেন। তার পরে অবশ্য আমায় হাসপাতালে যেতে হয়েছিল। সেখানে মেয়ে ও আমাকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিমানে আরও যাঁরা আহত হয়েছিলেন তাঁরা ছাড়া পাননি। শুনেছি ১৭ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা করা হচ্ছে।
কিন্তু কেন এমন হলে সেটা জানা দরকার। আমার মনে হয়, এর একটা তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। অনেকে নাকি সিটবেল্ট ঠিক করে বাঁধেননি বলে বেশি আহত হয়েছেন। তবে শুনেছি কারও কারও সিটবেল্ট ছিঁড়ে গিয়েছিল। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগকে তো আর এড়ানো যায় না সব সময়। তবে একটাই রক্ষা যে প্রাণে বেঁচে গিয়েছি।
বাড়ির অন্যরাও খুব টেনশনে পড়ে গিয়েছিলেন। বড় রকমের দুর্ঘটনা হতে পারত। একটা সময়ে মনে হচ্ছিল যেন বিমানটা ভেঙে যাবে। যাঁরা জানত যে আমরা ওই বিমানে রয়েছি, তাঁরা খুব উদ্বেগে ছিলেন। সবার ফোন আসছে। সবাইকেই বলছি, মৃত্যুকে দেখে ফিরছি। রাঁচী থেকে মুম্বই যাওয়ার বিমান ধরব। কিন্তু এখন মুশকিল হয়েছে যে, মেয়ে বড্ড ভয় পেয়ে গিয়েছে। আবার বিমানে উঠতে হবে শুনেই ভয় পাচ্ছে। মেয়েকে বোঝাচ্ছি। নিজেকেও বোঝাচ্ছি যে, ঈশ্বর আছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy