বিতর্কিত রসিদ। নিজস্ব চিত্র
শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের নামে রসিদ কেটে মাঘমেলায় ব্যবসায়ীদের কাছে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠল মেলা কমিটির বিরুদ্ধে। চলতি বছরে শান্তিনিকেতনে নয়া বিতর্ক মাঘমেলাকে ঘিরে। প্রতি বছর ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে শ্রীনিকেতনে শুরু হয় মাঘমেলা। মেলা চলে তিনদিন। এই বছরই প্রথম ট্রাস্টের পক্ষ থেকে মেলায় বসা দোকানগুলি থেকে টাকা আদায় করা হয়েছে বলে অভিযোগ। যদিও তার সত্যতা মানতে চাননি ট্রাস্টের কর্মকর্তারা। এতেই জটিলতা বেড়েছে। শেষ পর্যন্ত বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হয়েছেন মেলার দোকানদারেরা।
১৮৮৮ সালে শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট্রের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। ১৯২২ সালে ৬ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়েছিল কবিগুরুর প্রথম গ্রাম উন্নয়ন কর্মসূচি। তারপর তৈরি হয় শ্রীনিকেতন। ১৯২৩ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে শ্রীনিকেতন বার্ষিক উৎসব শুরু হয়। স্থানীয়দের কাছে যা শ্রীনিকেতন মেলা বা মাঘ মেলা নামে পরিচিত। প্রথম থেকেই এই মেলা গ্রামীণ আঙ্গিকে গড়ে উঠেছিল। সেই ঐতিহ্য আজও অমলীন।
এই বছর মেলাতে একশোটিরও বেশি বিভিন্ন দোকান বসেছিল। মেলায় দোকান দেওয়া ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের নাম করে রসিদ দিয়ে টাকা নেওয়া হচ্ছে অথচ তা বৈধ কী না বোঝার উপায় নেই। পুরন্দরপুর থেকে আসা ব্যবসায়ী বাপি বাগদি, ইলামবাজারের আশাপূর্ণ দাস বৈরাগ্য, বোলপুরের ব্যবসায়ী মনোরঞ্জন বিশ্বাসরা বলেন, ‘‘শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের নাম করে রসিদ ছাপিয়ে স্টলের ভাড়া নেওয়া হচ্ছে এবার, যা আগে কখনও হয়নি। এই নিয়ে আমরা মেলা কমিটিকে জানিয়েছি। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান ও বিশ্বভারতীকেও জানিয়েছি।’’ শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোনার বলেন, ‘‘মাঘ মেলায় এই ভাবে টাকা তোলার কোনও ঘটনা ঘটেছে বলে আমার জানা নেই।’’
শনিবারই মেলায় আসা দোকানদারেরা মেলা কমিটিকে জানানোর পরে স্থানীয় রূপপুর পঞ্চায়েতেও লিখিতভাবে বিষয়টি জানান। রূপপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রণেন্দ্রনাথ সরকার বলেন, ‘‘ব্যবসায়ীরা আমাদের কাছে অভিযোগ করেন শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের নামে রসিদ দিয়ে মেলায় টাকা তোলা হচ্ছে। সেই রসিদে শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের কোনও স্ট্যাম্প বা কর্মকর্তাদের কারও সই ছিল না। এই বিষয়টি নিয়ে বিশ্বভারতীর আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তাঁরাও কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি।’’ বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার বলেন, ‘‘আমরা মেলায় আসা দোকানদারদের কাছ থেকে এই ধরনের অভিযোগ পেয়েছি। হয়তো কিছু একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে, যে কারণে এই ঘটনা ঘটেছে। আমরা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy