প্রতীকী ছবি।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ তবু টেস্ট নেওয়ার জন্য গোটা ডিসেম্বরটা সময় দিয়েছে। যদিও ৩১ ডিসেম্বরও টেস্টের পক্ষে যথেষ্ট সময় নয় বলে উচ্চ মাধ্যমিকের বহু পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকের অনুযোগ। সেই তুলনায় সময়সীমা আরও কমিয়ে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ বুধবার জানিয়েছে, সব স্কুলকেই মাধ্যমিকের টেস্ট নিতে হবে ১৩ থেকে ২৪ ডিসেম্বরের মধ্যে। প্রশ্নপত্র করবে স্কুলই। প্রশ্নের ধাঁচ এবং পূর্ণমান হবে মাধ্যমিকের প্রশ্নের মতোই।
পর্ষদ টেস্টের কথা আগে বললেও তখন দিনক্ষণ জানায়নি। সংসদ টেস্ট নেওয়ার সিদ্ধান্ত স্কুলগুলির উপরেই ছেড়ে দিয়েছিল। প্রশ্ন উঠছে, সংসদ এত পরে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে টেস্ট বাধ্যতামূলক করল কেন? শিক্ষা দফতরের কর্তাদের একাংশের মতে, করোনায় আবার যদি মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়া না-যায়, তখন এই টেস্টের নম্বরের ভিত্তিতেই মূল্যায়ন হবে উভয় ক্ষেত্রে।
শিক্ষকদের একাংশের প্রশ্ন, বোর্ড পরীক্ষা না-হলে টেস্টের নম্বরকে যদি চূড়ান্ত মূল্যায়ন হিসেবে ধরা হয়, তা হলে এই টেস্ট তো খুব গুরুত্বপূর্ণ। স্কুল খুলতে না-খুলতেই তাড়াহুড়ো করে এ-হেন গুরুত্বপূর্ণ টেস্ট নেওয়া হচ্ছে কেন? নবম থেকে দ্বাদশের পড়ুয়ারা রোজ ক্লাসে আসছে না। শিক্ষকদের বক্তব্য, ১৬ নভেম্বর স্কুল খোলার পরে দেখা গিয়েছে, বহু পড়ুয়া পিছিয়ে আছে। বেশ কিছু জায়গায় খটকা রয়েছে তাদের। সেগুলোর সমাধান না-করেই এত দ্রুত টেস্ট শুরু হলে তারা কি যথাযথ প্রস্তুতি চালিয়ে তা দিতে পারবে? অধিকাংশ শিক্ষকের বক্তব্য, টেস্ট ডিসেম্বরের শেষে বা জানুয়ারির প্রথমে শুরু হলে পড়ুয়ারা আরও বেশি প্রস্তুতি চালাতে পারত।
কলকাতার কিছু স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, ১৯ ডিসেম্বর পুরভোটের জন্য তাঁদের স্কুলভবন নেওয়া হচ্ছে। পুরভোটের নির্ঘণ্টের মধ্যে ডিসেম্বর জুড়ে স্কুলগুলো টেস্টের আয়োজন কী ভাবে করবে? কিছু শিক্ষক সংগঠনের প্রশ্ন, ঘোষণা অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ে টেস্ট শেষ করতে গেলে প্রশ্নপত্র চাই। এত দ্রুত সব প্রশ্নপত্র ছাপা যাবে তো?
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বুধবার বলেন, ‘‘উচ্চ মাধ্যমিকের ফর্ম পূরণ শুরু ৬ জানুয়ারি। শুধু টেস্ট-উত্তীর্ণ পড়ুয়ারাই সেই ফর্ম পূরণ করতে পারে। তাই ফর্ম পূরণের পরে কোনও ভাবেই টেস্ট নেওয়া যায় না। ডিসেম্বরের শেষে বা জানুয়ারির প্রথমে টেস্ট শুরু হলে ৬ জানুয়ারির আগে শেষ করা যেত না। ফর্ম পূরণের পরেই বুঝতে পারব, কত পরীক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে।’’
প্রশ্ন উঠছে, ফর্ম পূরণের তারিখ কি পিছোনো যেত না? চিরঞ্জীববাবু বলেন, ‘‘অন্যান্য বারের থেকে এ বার উচ্চ মাধ্যমিকে পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা অনেক বেশি। কত পড়ুয়া পরীক্ষা দেবে, ফর্ম পূরণ শেষ না-হলে আমরা সেটা বুঝতে পারব না। সেই অনুযায়ী পরীক্ষা কেন্দ্র লাগবে। সংসদেরও তো একটা প্রস্তুতির প্রয়োজন।’’
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ এ দিন বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, মিউজ়িক, ভিজ়ুয়াল আর্টসের মতো যে-সব বিষয়ের পূর্ণমান ৫০-এর কম, সেই ১২টি বিষয়ের টেস্ট পূর্ণমানেরই হবে। যে-সব থিয়োরি বিষয়ের পূর্ণমান ৭০ বা ৮০, সেগুলির টেস্ট হবে ৫০ নম্বরের প্রশ্নে। শিক্ষকদের একাংশের বক্তব্য, টেস্টের ৫০ নম্বরের প্রশ্নপত্রের ক্ষেত্রে প্রশ্নের ধাঁচও পাল্টাতে হতে পারে। তা ছাড়া যে-সব বিষয়ে ৫০ নম্বরের টেস্ট হচ্ছে, পরে সেগুলিতে পরীক্ষার্থীরা ৮০ বা ৭০-এর মধ্যে কত নম্বর পেল, তার হিসেব জটিল হয়ে যাবে। শিক্ষকদের প্রশ্ন, পরবর্তী কালে কোনও কারণে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা না-হলে টেস্টের নম্বরের ভিত্তিতেই মূল্যায়ন করা হবে। তখন ঠিকমতো মূল্যায়ন করা যাবে তো?
চিরঞ্জীববাবু বলেন, ‘‘এক জন পরীক্ষার্থী ৫০ নম্বরে যত পাবে, সেই নম্বর ৭০ বা ৮০-তে কত হবে, আনুপাতিক হার অনুযায়ী সেটা বার করে নিলেই সমাধান হয়ে যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy