Advertisement
E-Paper

কুণাল-সাক্ষাতে আবারও ‘মিত্র’ হলেন মদন! ‘মিথ্যা বলা হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীকে’, নিশানা এসএসকেএমকেই

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মদনের বিরুদ্ধে ‘গুন্ডামি’র অভিযোগ তুলেছে। এর পরেই বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে বিধায়ক পদ ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেন মদন।

An image of Kunal Ghosh and Madan Mitra

মদনের নিশানায় ছিলেন দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষও। ফাইল ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২৩ ২২:৪৫
Share
Save

এসএসকেএমকাণ্ডে নিজের অবস্থানে অনড় থেকে কার্যত দলের বিরুদ্ধে সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে দেখা গিয়েছিল তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রকে। নাম না করলেও কামারহাটির বিধায়কের লক্ষ্যে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী বন্দ্যোপাধ্যায়ও। মদনের নিশানায় ছিলেন দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষও। সেই সাংবাদিক বৈঠকের ঘণ্টা দু’য়েকের মধ্যে কুণালের সঙ্গে সাক্ষাতের পর ‘সুরবদল’ করে ফেললেন মদন। দলের সঙ্গে তাঁর কোনও সংঘাত নেই জানিয়ে বিধায়কের হুঁশিয়ারির অভিমুখ এ বার পুরোপুরি ঘুরে গেল এসএসকেএম কর্তৃপক্ষের দিকে! মদন বললেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকে মিথ্যে বলা হয়েছে।’’

শুক্রবার রাতে এক দুর্ঘটনাগ্রস্ত যুবককে ভর্তি করানো নিয়ে এসএসকেএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন মদন। শনিবার তা নিয়েই দিনভর টানাপড়েন চলে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মদনের বিরুদ্ধে ‘গুন্ডামি’র অভিযোগ তুলেছে। এর পরেই বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে বিধায়ক পদ ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেন মদন। জানিয়ে দেন, প্রয়োজনে টিউশনি করেই পেট চালাবেন! নাম না করলেও মমতাকে লক্ষ্য করে মদন বলেছেন, ‘‘দরকার পড়লে পদ ছেড়ে দেব। একটা তো বিধায়ক পদ। আমি সোনালি গুহ, শুভেন্দু অধিকারী, দীনেশ ত্রিবেদী বা মুকুল রায় নই। আমি মদন মিত্র! উনি আমাকে কী দিয়েছেন?’’ কুণাল সম্পর্কেও বলেন, ‘‘ওঁর বিরুদ্ধে তো সাড়ে চারশ মামলা রয়েছে।’’ এর পরেই মদনের ক্ষোভ প্রশমনে মাঠে নামে তৃণমূল। কুণালই জানান, বিষয়টি নিয়ে তিনি মদন’দার সঙ্গে কথা বলবেন।

মদনের এই ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণায় জোর চর্চা শুরু হয় দলের অন্দরে। বিস্তর জল্পনার মধ্যেই শনিবার সন্ধ্যায় কুণালের সঙ্গে দেখা করলেন মদন। সাক্ষাতের পর বাইরে বেরিয়ে বিধায়ক বললেন, ‘‘সামনে দিয়েই যাচ্ছিলাম। তাই ভাবলাম দেখা করে যাই। কথা বলতে এসেছি। চা খেতে এসেছি। তবে হ্যাঁ, রাজনীতির কথাই হয়েছে। কুণালের সঙ্গে আমার আর অন্য কী বিষয় নিয়ে কথা হতে পারে।’’ দল সম্পর্কে বলতে গিয়ে সুর কার্যত নরম করে মদন জানিয়ে দেন, তাঁর সঙ্গে দলের কোনও সংঘাতে নেই। কুণালের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘‘কুণালের বিরুদ্ধে অনেক মামলা হয়েছে। ও এখন দলের মুখপাত্র। ঝুঁকি নিয়ে ও দলের জন্য যা করে, তা অনেকেই করে না।’’ দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদের প্রসঙ্গে মদন বলেন, ‘‘আমরাও সিএমের সঙ্গে রয়েছি। অভিষেককে আমরাও ভীষণ ভালবাসি। ওঁর গায়ে আঁচড় লাগলে আমাদের গায়েও আঁচড় লাগে।’’

শুক্রবার রাতে দুর্ঘটনাগ্রস্ত যুবককে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভর্তি না নেওয়ায় দালালরাজের অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দাবি করেছিলেন মদন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শনিবার সাংবাদিক বৈঠক করে পাল্টা ‘গুন্ডামি’র অভিযোগ করেন। এসএসকেএমের ডিরেক্টর জানিয়ে দেন, শনিবার সকালে ওই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। এ বিষয়ে ‘জ়িরো টলারেন্স’ নীতি নেওয়ার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রীও। কুণালের সঙ্গে সাক্ষাতের পর তা নিয়ে মদনের বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকে মিথ্যে তথ্য দেওয়া হয়েছে।’’ এর পরেই মদনের আক্রমণের অভিমুখ পুরোপুরি ঘুরে এসএসকেএম কর্তৃপক্ষের দিকে। হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘‘কারা চমকাচ্ছে! আমি মদন মিত্র। আবার কাল পিজিতে যাব।’’

প্রসঙ্গত, বাম আমলে এসএসকেএম হাসপাতালে কার্যত মদনই ছিলেন শেষকথা। তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পরেও দীর্ঘ দিন মদনের সেই প্রতিপত্তি বজায় ছিল। সারদাকান্ডে গ্রেফতার হয়ে তিনি য়খন অসুস্থ হয়ে এসএসকেএমের উডবার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি, তখনও তিনি এসএসকেএম হাসপাতাল নিয়ন্ত্রণ করতেন। কিন্তু তার পরে তাঁকে দলের তরফেই ওই হাসপাতালের ‘দায়িত্ব’ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ওই হাসপাতালের রোগী পরিচালন সমিতিতে আনা হয়েছিল মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে। পরে তাঁকেও সরিয়ে দিয়ে ওই দায়িত্বে আনা হয়েছে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে। কিন্তু মদনের একটা ‘অলিখিত কর্তৃত্ব’ এখনও ওই হাসপাতালে রয়েছে বলে অনেকে বলেন। শুক্রবার রাতে সেই ‘কর্তৃত্ব’ জোর ধাক্কা খেয়েছিল। তা আরও জোরাল হয় শনিবার হাসপাতালের ডিরেক্টরের বক্তব্যে। তার পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন মদন। কুণালের সঙ্গে সাক্ষাতের পর দল নিয়ে তাঁর ক্ষোভ ‘প্রশমিত’ হলেও এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ বিধায়কের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হয়েই থাকল!

Madan Mitra Kunal Ghosh SSKM TMC

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।