নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র
তিনি যে সরকারি চাকরিতে অবসর নিতে চান, তা সোমবার সকালে নবান্নে পৌঁছেই মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে বলেছিলেন অধুনা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। বিকেলে নবান্নে মমতা নিজেই সে কথা জানিয়েছেন। মমতা জানান, সোমবার সকালে আলাপন নিজেই তাঁকে বলেছিলেন, ‘‘ম্যাডাম আমাকে অবসর নেওয়ার অনুমতি দিন।’’ আলাপনের ওই আর্জি মেনেই মুখ্যসচিব পদ থেকে তাঁকে অবসর নেওয়ার অনুমতি দেন মুখ্যমন্ত্রী। পরে মমতা জানান, কেন্দ্রের নির্দেশের সামনে আলাপন মাথা নত করেননি। সে কারণে আলাপনের নাম ইতিহাসে লেখা থাকবে।
সোমবারই রাজ্যের মুখ্যসচিব হিসেবে কর্মজীবনের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল আলাপনের। গত ১০ মে তাঁর মেয়াদ আরও তিন মাস বৃদ্ধির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন করেছিল রাজ্য। কারণ, রাজ্যে কোভিড পরিস্থিতি। রাজ্যের সেই আবেদনে অনুমতি দিয়ে ২৪ মে চিঠি পাঠায় কেন্দ্র। কিন্তু গত শুক্রবার হঠাৎ দিল্লি থেকে বদলির নির্দেশ আসে আলাপনের। সে চিঠি রাজ্য সরকারের কাছে না পাঠিয়ে সরাসরি আলাপনের কাছেই পাঠানো হয়েছিল। তখন থেকেই আলাপনকে কেন্দ্র করে কেন্দ্র-রাজ্য সঙ্ঘাত শুরু।
সেই সঙ্ঘাতে ইতি পড়ল সোমবার আলাপনের অবসরের মধ্য দিয়ে। যার পরেই মমতা তাঁকে আগামী তিন বছরের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা পদে নিয়োগ করেন। মমতা নিজেই জানান, মুখ্যসচিব পদ থেকে অবসর নিয়েছেন আলাপন। মঙ্গলবার থেকে নতুন দায়িত্বে যোগ দিচ্ছেন তিনি। মমতা বলেন, ‘‘আমি চাইলে মেয়াদ বাড়িয়ে আলাপনকে রেখেও দিতে পারতাম। কেন্দ্র কিছুই করতে পারত না। কিন্তু মুখ্যসচিব নিজেই অবসরের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। সোমবার আলাপন নিজেই এসে বলেন, ম্যাডাম আমাকে অবসর নিতে অনুমতি দিন। তাঁর সেই সিদ্ধান্তকে আমি সম্মান জানাই। সে জন্যই আমি তাঁকে মুখ্যসচিব পদ থেকে অবসর দিয়েছি।’’
মমতার আরও বক্তব্য, ‘‘আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় সাহসের পরিচয় দিয়েছেন। তিনি দিল্লির দ্বিতীয় চিঠি আসার আগেই অবসর নিয়েছেন। ইতিহাসে তাঁর নাম লেখা থাকবে। তিনি এতদিন ধরে দেশের হয়ে কাজ করেছেন, অবসরের মুহূর্তে এসে তাঁর সঙ্গে যা করা হল, তা ঠিক নয়। আমি বলেছি, তাঁর অবসরের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত বিষয়। আমি সেই সিদ্ধান্তকে সম্মান করি। কিন্তু এই লড়াই থেকে তাঁকে আমরা ছাড়ছি না। তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করবেন। তিন মাস নয়। তিন বছর।’’
১৯৮৭ ব্যাচের আইএএস অফিসার আলাপন বরাবর মমতার ‘আস্থাভাজন’ হিসেবেই পরিচিত। মুখ্যসচিব পদ থেকে তিনি অবসর নিলেও অন্য কোনও পদে রাজ্য তাঁকে বসাতে পারে বলে জল্পনা চলছিল। সোমবার তাই-ই সত্যি হল। আলাপনকে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘‘ওঁর মতো সৎ অফিসারের প্রয়োজন। কোভিড ও ঘূর্ণিঝড়ে ভাল কাজ করেছেন তিনি। ওঁকে আমার প্রয়োজন। ওঁকে রাজ্যের মানুষেরও প্রয়োজন। তাই আলাপনকে অন্য পদে নিয়ে আসা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy