বেফাঁস বলে বিপদ বাড়াবেন না। ভোটের আগে এই কথাটা বোঝাতে ক্লাস নিচ্ছে তৃণমূল।
প্রচারে বক্তব্য হতে হবে তথ্যে ঠাসা। সেখানে বেফাঁস বলে বিপদ বাড়াবেন না। ভোটের আগে এই কথাটা বোঝাতে ক্লাস নিচ্ছে তৃণমূল।
পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর ২ ব্লকের বরুণায় মঙ্গলবার এই প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করেছিল ব্লক তৃণমূল। বক্তৃতার তালিম দিতে হাজির ছিলেন জেলা পরিষদের কো-মেন্টর অরুণ মুখোপাধ্যায়, জেলা পরিষদের অধ্যক্ষ তপন দত্ত, দাসপুর-২ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি আশিস হুতাইত, পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী প্রতিমা দোলই প্রমুখ। তুলনায় অভিজ্ঞ এই নেতা-নেত্রীদের কাছে ক্লাস নিয়েছেন বিভিন্ন পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান, দলের অঞ্চল সভাপতি থেকে শাখা সংগঠনের সভাপতিরা।
কী শেখানো হল ক্লাসে? তৃণমূলের এক সূত্রে খবর, প্রচারে তুলে ধরার জন্য বিভিন্ন তথ্যের খুঁটিনাটি জানানো হয়েছে শিবিরে। পই পই করে বোঝানো হয়েছে কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, যুবশ্রী, শিক্ষাশ্রী, সবুজ সাথীর মতো বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে কত জন উপকৃত হয়েছেন, তৃণমূলের আমলে কতগুলি রাস্তা, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়, সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল হয়েছে, শিশু মৃত্যুর হার কত কমেছে— সে সব তথ্যে যেন কোনও ভুল না থাকে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
শুধু নিজেদের সাফল্য নয়, বিরোধীদের দুর্বলতা তুলে ধরতেও হাতিয়ার তথ্যই। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি আশিস হুতাইতের কথায়, “শুধু নিজেদের শক্তির কথা জানালে হবে না, বিরোধীদের দুর্বলতাও জানাতে হবে তথ্য-পরিসংখ্যান দিয়ে। নোটবন্দি, জিএসটির ফলে কী কী ক্ষতি হয়েছে, সেই সব তথ্য নীচুতলার নেতাদের জানানো হয়েছে।” এক কথা বারবার না বলা, সংক্ষিপ্ত মন ছুঁয়ে যাওয়া বক্তব্যে ভোটারের মন জেতার কৌশলও শেখানো হয়েছে।
তৃণমূলের অন্দরের খবর, লোকসভা ভোটের প্রচার শুরুর আগেই জেলা নেতৃত্বের তরফে ব্লকের নেতাদের ডেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, পথসভা থেকে মিছিল, স্থানীয় বিভিন্ন কর্মসূচিতে ঠিক কী বলতে হবে। সেই বলায় যাতে ফাঁক না থাকে তাই এই ক্লাস। তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতি মানছেন, “আমি সব ব্লক সভাপতিদের তথ্য এবং প্রচারের বিষয়বস্তু দিয়েছি। অঞ্চল নেতাদের তা বোঝাতেও বলা হয়েছে। দাসপুর-২ ব্লকের নেতৃত্ব নতুন ভাবে সেই বোঝানোর কাজটা করেছেন। খুবই ভাল উদ্যোগ।”
কিন্তু জেলার মধ্যে শুধু এই ব্লকে কেন এমন আয়োজন?
তৃণমূলেরই একাংশ মনে করিয়ে দিচ্ছেন, জেলার রাজনীতির সমীকরণে বরাবর বিরোধী স্বর রয়েছে দাসপুর ২ ব্লকে। বাম জমানায় যখন জেলা জুড়ে লাল পতাকার রমরমা, তখনও এখানে মাথা তুলেছিল তৃণমূল। ১৯৯৮ থেকে ২০০৩ পঞ্চায়েত সমিতি ছিল তৃণমূলের। পরে এক দফা বামেরা জিতলেও ২০০৮-এ ফের ব্লকের দখল নেয় তৃণমূল। এই মুহূর্তে ব্লকের ১৪টি অঞ্চলেই ক্ষমতায় রয়েছে তারা। তবে ব্লক সভাপতি আশিস হুতাইতের সঙ্গে প্রাক্তন ব্লক সভাপতি, বর্তমানে জেলা পরিষদ সদস্য তপন দত্তের অনুগামীদের কোন্দল কাঁটা বিঁধছে সংগঠনে। সেই সুযোগের ফায়দা যাতে বিজেপি না নিতে পারে, যাতে কোনও ভাবে ভোটে সুবিধা না পেতে পারেন পদ্ম প্রার্থী ভারতী ঘোষ, তা নিশ্চিত করতেই আগাম তৎপর ব্লক তৃণমূল।
বিজেপির ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অন্তরা ভট্টাচার্যের কটাক্ষ, “যে দল এতদিন ক্ষমতায় থাকার পরেও নেতাদের কথা বলার ক্লাস নিতে হয়, তাদের দুরবস্থা বোঝা যাচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy