একটু আরাম: রবিবার পার্ক সার্কাসে। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী।
একে রুদ্র বৈশাখের রক্তচক্ষু। তার উপরে ভোট-রাজনীতির লড়াই। ভরা বৈশাখের গনগনে তেজ আর রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্রমশ চড়তে থাকা পারদ! সব মিলিয়ে চড়া গরম গাঙ্গেয় বঙ্গের জেলায়, জেলায়। স্বাভাবিকের প্রায় দ্বিগুণ উত্তাপ!
আজ, সোমবার গাঙ্গেয় বঙ্গের চার জেলা— মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, বীরভূম ও বর্ধমানের মোট আটটি লোকসভা কেন্দ্রের ভোট। ফলে রাজনৈতিক উত্তাপ সপ্তমে চড়েই আছে। তাপের তাণ্ডবে পিছিয়ে থাকতে রাজি নয় প্রকৃতিও। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, ভোটের আগের দিন, রবিবার থেকেই পারদ তরতরিয়ে চড়ছে ওই সব জেলায়। ওই জেলাগুলিতে এ দিন তাপমাত্রা ৪০-৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছেপিঠে ঘোরাফেরা করেছে।
এবং আজ, চতুর্থ পর্বের ভোটের দিন পারদের নমনীয় হওয়ার কোনও লক্ষণই নেই। ‘‘কমার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। বরং সোমবার তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে,’’ বলছেন আলিপুর হাওয়া অফিসের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস। ফলে ভোট দিতে গিয়ে রোদের দাপট সইতে হবে ভোটারদের। নির্বাচন কমিশন ছাউনি, পানীয় জলের ব্যবস্থা রাখতে বলেছে। কিন্তু গাঁ-গঞ্জের ক’টি ভোটকেন্দ্রে সেই ব্যবস্থা থাকবে, তা নিয়ে সন্দিহান প্রশাসনিক কর্তাদের অনেকেই।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
বীরভূমে যেমন এ দিন দুপুরেই চোখেমুখে জ্বালা ধরিয়েছে গরম হাওয়া। সেই গরম অবশ্য গায়ে মাখছেন না ওই জেলার দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। স্বভাবসিদ্ধ ঢঙে তাঁর উপলব্ধি, ‘‘ভোটের উত্তাপ অনেক বেশি।’’
ভোটের উত্তাপ বেশি, নাকি বৈশাখী রোদের— তর্ক চলতেই পারে। কিন্তু ভোটের তাগিদেই যে এই তীব্র গরম উপেক্ষা করে নেতা, প্রার্থীরা পথে নামছেন, সেই ব্যাপারে নাগরিকদের বেশির ভাগই একমত। রবিবাসরীয় প্রচারেও তা ধরা পড়েছে। সকাল থেকেই সুতির শাড়ি, পাঞ্জাবি, শার্ট পরে পাড়ায় পাড়ায় প্রচার চলে। রোদ ঠেকাতে কেউ মাথা ঢেকেছেন বড় ছাতায়, কেউ বা দলীয় প্রতীক আঁকা টুপিতে। রোড শো চলাকালীন দক্ষিণ কলকাতার তৃণমূল প্রার্থী মালা রায়ের মুখের সামনে দেখা গেল ছোট একটি ব্যাটারিচালিত ফ্যানও। গরমে হেঁটে বেশ কাহিল দেখাল দমদমের বিজেপি প্রার্থী শমীক ভট্টাচার্যকে।
আজ, সোমবার হুগলির চণ্ডীতলা ও উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভা রয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে সভা রয়েছে অন্যান্য দলেরও। সেই সব সভায় যে-সব সমর্থক যাবেন, তাঁদেরও গরমের কষ্ট সইতে হবে।
গরম নিয়ে হাহুতাশ ছড়িয়েছে ফেসবুকেও। রবি-দুপুরে হাজারো ডাকেও যে তিনি ‘বাহিরমুখো’ হবেন না, সে-কথা সশব্দে ঘোষণা করেছিলেন এক তরুণ। বৈশাখী দুপুরে ছাদের ঘরে গরম কেমন লাগে, তা নিয়ে হাজারো ‘মিম’ ছড়িয়েছে ফেসবুকের দেওয়ালে দেওয়ালে।
এই পরিস্থিতিতে অনেকেই বলছেন, দিনে গরম হলেও বিকেলে বা সন্ধ্যায় ঝড়বৃষ্টিতে যেন একটু শরীর জুড়োয়। কিন্তু আবহবিজ্ঞানীরা বলছেন, ঝড়বৃষ্টি আপাতত দূর অস্ত্! দক্ষিণবঙ্গের আকাশে বৃষ্টি নামানো বা ঝড় তোলার মতো মেঘের লেশমাত্র দেখা যাচ্ছে না। গণেশবাবু বলছেন, ‘‘মেঘ তৈরি হতে গেলে জলীয় বাষ্প প্রয়োজন। সেই জোলো হাওয়ার জোগান দেয় বঙ্গোপসাগর। কিন্তু বঙ্গোপসাগর থেকে এখন সেই জোলো হাওয়া ঢুকছে না। তাই দাপট চলছে শুকনো গরমের।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy