বিবেক দুবে। —ফাইল চিত্র।
ভোটে কোনওরকম অশান্তি বরদাস্ত করা হবে না। মঙ্গলবার রাজ্যে পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের সে কথা স্পষ্টই জানিয়ে দিয়েছেন রাজ্যের বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে। এ ছাড়াও প্রথম দফায় কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারে নির্বাচনের জন্য অতিরিক্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে নির্বাচন সদনের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।
কোচবিহারে তুফানগঞ্জে বিরোধী দলের উপর আক্রমণ নিয়ে রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্রকে বিবেক জানান, এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না হয়, তা রাজ্য প্রশাসনকেই নিশ্চিত করতে হবে। এ নিয়ে বিবেককে আশ্বস্ত করেছেন বীরেন্দ্র।
এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ নবান্নে গিয়ে ডিজির সঙ্গে বৈঠক করেন দুবে। বৈঠক শেষে কোনও প্রশ্নের উত্তর তিনি দেননি। বৈঠক নিয়ে সরাসরি মুখ খুলতে চাননি প্রশাসনিক কর্তারাও। তবে বাহিনী নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি তাঁদের অনেকেই। স্পর্শকাতর এবং অতি স্পর্শকাতর বুথের সর্বশেষ হিসেব জেনে তবেই বাহিনীর সংখ্যা নির্দিষ্ট করবে কমিশন। এ দিন সেই কাজই করে গিয়েছেন দুবে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
প্রশাসনের একাংশের ব্যাখ্যা, স্পর্শকাতর বুথগুলিতে রাজ্যের সশস্ত্র পুলিশ এবং অতি স্পর্শকাতর বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে পারে কমিশন। বুথকে স্পর্শকাতর হিসাবে চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে কতগুলি মাপকাঠি রয়েছে। যেমন অতীতের নির্বাচন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, ভোটে গোলমাল পাকানোর লোকের সংখ্যা ইত্যাদি। কমিশনের সঙ্গে বিভিন্ন বৈঠকে জেলা প্রশাসনগুলি বুথের বিষয়ে রিপোর্ট জমা দিয়েছিল। কিন্তু সেগুলি নিয়মিত পরিমার্জিত হয়ে চূড়ান্ত হয় নির্বাচনের পাঁচ দিন আগে।
সূত্রের খবর, এ দিন স্বরাষ্ট্রসচিব এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি’র থেকে পৃথক ভাবে বুথ সম্পর্কে বিশ্লেষণ জেনেছেন দুবে। তার নিরিখে কত বাহিনী প্রয়োজন, প্রশাসনিক কর্তাদের সেই মনোভাবও জানতে চেয়েছেন তিনি। এ বার জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারদের মনোভাব জেনে নিয়ে বাহিনীর সংখ্যা চূড়ান্ত করবে কমিশন। আজ, বুধবার সকালে শিলিগুড়ি সার্কিট হাউসে প্রথম তিন দফার সাধারণ, খরচ সংক্রান্ত এবং পুলিশ পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে বিবেকের। সেই বৈঠক থেকে বুথ এবং বাহিনীর বিষয়ে ধারণা তৈরি হতে পারে বলে মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের। এ দিন শিলিগুড়ি যাওয়ার আগে কলকাতা বিমানবন্দরে বিবেক বলেন, ‘‘ওখানের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দেখতে যাচ্ছি।’’
এই পরিস্থিতিতে ১১ এপ্রিল উত্তরবঙ্গে প্রথম দফার ভোটের আগে পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনীর ব্যবস্থা করা যাবে কি না, তা নিয়ে নিশ্চিত নন অনেকেই। প্রশাসনের একাংশের মতে, হাতে আর সময় নেই। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং রাজ্যের সশস্ত্র পুলিশের ব্যবহারের রূপরেখা স্থির করে ফেলতে হবে। রাজ্যে আসা ১০ কোম্পানির মধ্যে সাত কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী উত্তরবঙ্গে পাঠানো হয়েছে। কমিশন সূত্রের খবর, ১১ তারিখ কোচবিহার কেন্দ্রে ৬ কোম্পানি এবং আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রে ৪ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখা হবে বলে এখনও পর্যন্ত ঠিক হয়েছে। আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রের মধ্যেই রয়েছে জলপাইগুড়ির নাগরাকাটা। ৪ কোম্পানির মধ্যে সেখানে এক কোম্পানি পাঠানো হবে।
সূত্রের দাবি, জঙ্গলমহল থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রত্যাহার করে তা ভোটের কাজে অন্যত্র ব্যবহার না করার দাবি এ দিনের বৈঠকে ফের এক বার করেছে রাজ্য সরকার। কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রত্যাহার না করা হলে তার পরিবর্তে প্রয়োজনীয় সশস্ত্র পুলিশ দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে রাজ্যের তরফে। এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রত্যাহার না করার আর্জি আগে থেকেই জানিয়ে আসছে রাজ্য। সব বুথে হয়তো
কেন্দ্রীয় বাহিনী দেওয়া সম্ভব হবে না। রাজ্যের সশস্ত্র পুলিশ পর্যাপ্ত সংখ্যায় রয়েছে। কমিশনের চাহিদামতো তা দেওয়া হবে।’’
এ দিন কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওরা (কেন্দ্র) জঙ্গলমহল থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী তুলে নেওয়ার জন্য চিঠি দিয়েছিল। ওঁদের অন্য কাজে ব্যবহার করবে। আমরা জানিয়েছি, এটা কোরো না। বাইরে থেকে যখন কেন্দ্রীয় বাহিনী আসছে, এখানে যারা আছে, তাদের আশেপাশে কোনও জায়গায় ভোটের কাজে ব্যবহার করো। ঝাড়খণ্ড থেকে মাঝে মাঝে এখানে আসে। গোলমাল করতে পারে। এলাকাটা খালি কোরো না। এদের আশেপাশে অন্য কোনও জায়গায় ভোটের কাজে ব্যবহার করো। এলাকাটি ফাঁকা কোরো না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy