আয়কর দফতরে আশিস বর্মা ও দেবাশিস মজুমদার। কলকাতায় বৃহস্পতিবার। —নিজস্ব চিত্র।
নির্বাচনী আচরণবিধি বলবৎ হওয়ার পরে আয়কর দফতরের তৎপরতাও বেড়েছে। ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এই রাজ্যে তারা হিসেব-বহির্ভূত নগদ ও সোনা মিলিয়ে ২১ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে। তার মধ্যে কলকাতায় বরদান মার্কেটের বেসমেন্টে ৬৪৯টি লকার থেকে প্রচুর নগদ ও গয়না। তার মধ্যে ২০০ লকারের মালিকানা এখনও পর্যন্ত কেউ স্বীকার করেননি!
রাজ্যে আয়কর দফতরের নোডাল অফিসার দেবাশিস মজুমদার জানান, ১৯৮৪ সাল থেকে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নিয়ম না-মেনেই বরদান মার্কেটের ওই সব লকার চালু ছিল। ৪৪৯টি লকারের মালিকেরা এসে তাঁদের লকারে পাওয়া নগদ ও গয়নার বিষয়ে কিছু কাগজপত্র দেখিয়েছেন। যে-সব গয়না ও টাকার নথি পাওয়া যায়নি, সেগুলো বাজেয়াপ্ত করা হয়। ২০০ লকারের মালিকদের হদিস মেলেনি। ‘‘লকারের সঙ্গে ‘কেওয়াইসি’ (‘নো ইয়োর কাস্টমার’) নথি না-থাকায় মালিকদের সবিস্তার পরিচয় জানা যায়নি। ওই সব লকার ভেঙে প্রচুর নগদ ও গয়না পাওয়া গিয়েছে,’’ বলেন দেবাশিসবাবু। তিনি জানান, যে-সংস্থা ওই সব লকার ভাড়া দিচ্ছিল, আয়কর দফতরের তরফে তাদের সম্পর্কেও সবিস্তার তথ্য জোগাড় করে রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে জানানো হবে।
আয়কর দফতরের প্রিন্সিপাল ডিরেক্টর (তদন্ত) আশিস বর্মা জানান, বাজেয়াপ্ত করা বেআইনি টাকা বা গয়নার সঙ্গে এখনও পর্যন্ত সরাসরি কোনও রাজনৈতিক নেতা বা দলের নাম জড়ায়নি। ওই সব টাকা বা গয়না বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে। বিশেষ কোনও উদ্দেশ্যে অন্য কেউ ব্যবসায়ীদের কাছে ওই টাকা বা গয়না গচ্ছিত রেখেছিলেন কি না, তাঁদের পক্ষে সেটা বোঝা সম্ভব নয়। ‘‘সেটা দেখা আমাদের কাজও নয়। পুরো বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে জানিয়ে দিচ্ছি,’’ বলেন বর্মা।
ওই আয়কর-কর্তা জানান, নির্বাচনী বিধি চালু হওয়ার পরে তাঁদের সতর্কতা অনেক গুণ বেড়ে গিয়েছে। যেখানেই হিসেব-বহির্ভূত টাকা বা গয়না বা সোনার খোঁজ মিলছে, সেখানেই অভিযান চলছে। নির্বাচন শেষ হওয়া পর্যন্ত নিয়মিত নজরদারি চলবে। নজরদারি জোরদার করতে পাঁচ জন অতিরিক্ত কমিশনারের অধীনে পাঁচটি আলাদা টাস্ক ফোর্স গড়া হয়েছে। বালুরঘাট ও শিলিগুড়ি থেকেও টাকা ও সোনা বাজেয়াপ্ত করেছে আয়কর দফতর।
বরদান মার্কেটের বেসমেন্টে আয়কর হানা চলছে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে। শুধু সেখানেই নগদ ৫.১৬ কোটি টাকা এবং ১৩.৬২ কোটি টাকার গয়না পাওয়া গিয়েছে। তবে আচরণবিধি বলবৎ হওয়ার আগেই সেখান থেকে কিছু সোনা ও টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়। ভোট ঘোষণার পর থেকে এ-পর্যন্ত বরদান মার্কেট-সহ এই রাজ্য থেকে নগদ মোট ৮.৯৮ কোটি টাকা নগদ এবং ১২.১৩ কোটি টাকার সোনা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এ ছাড়াও দেড় কোটি টাকা পুলিশ ধরেছে। তা-ও বাজেয়াপ্ত করা হবে। ফলে আটক নগদ ১০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে বলে জানানো হয়েছে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রায় আট কোটি নগদ টাকা বাজেয়াপ্ত করেছিল আয়কর দফতর। এ বার এর মধ্যেই সেটা ১০ কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছে। তা হলে কি রাজ্যে কালো টাকার পরিমাণ বাড়ছে? সরাসরি এই বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি আয়কর-কর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy