দিলীপ ঘোষ এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
রাজনৈতিক সৌজন্যের প্রশ্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়ালেন দিলীপ ঘোষ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে তার জন্য কুর্তা পছন্দ করে দেন, মিষ্টি পাঠান— দিন দুয়েক আগেই এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। মোদীর এই মন্তব্য প্রসঙ্গে মমতা নিজে এখনও স্পষ্ট করে কোনও মন্তব্য করেননি। রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ কিন্তু মুখ খুললেন। বৃহস্পতিবার ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে দিলীপ বললেন, নরেন্দ্র মোদীকে কুর্তা বা মিষ্টি পাঠিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কোনও ভুল করেননি।
বলিউড সুপারস্টার অক্ষয় কুমারকে যে সাক্ষাৎকার নরেন্দ্র মোদী সম্প্রতি দিয়েছেন, তা গত কয়েক দিন ধরে গোটা দেশের রাজনৈতিক চর্চার কেন্দ্রে। সেই সাক্ষাৎকারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের সমীকরণ প্রসঙ্গে মোদী যা বলেছেন, তা নিয়ে চর্চা আরও বেশি। কলকাতা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বাভাবিক ভাবেই রাজ্য বিজেপির সভাপতিকে বৃহস্পতিবার সে সংক্রান্ত প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। মোদীর জন্য নিজে বেছে কুর্তা কিনে এবং মিষ্টি পাঠিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও ভুল করেননি বলে দিলীপ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী কোনও অন্যায় করেননি। উনি আমাদের অভিভাবকও। আমি যখন অসুস্থ ছিলাম, তখনও উনি আমার খোঁজ নিয়েছিলেন।’’
এক জন রাজনৈতিক নেতা বা নেত্রী আর এক জনের সঙ্গে সৌজন্যমূলক সম্পর্ক রেখে চলবেন, এমনটাই স্বাভাবিক— মত দিলীপের। রাজনীতির ময়দানে লড়াই যতই থাক, রাজনৈতিক সৌজন্য বহাল থাকা খুব জরুরি বলে তিনি মন্তব্য করেন। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা প্রসঙ্গে মন্তব্য করে আগে যে রকম বিতর্কে দিলীপ ঘোষ জড়িয়েছিলেন, রাজনৈতিক সৌজন্যের বার্তা দিতে গিয়ে এ দিন ফের যাতে সে রকম কোনও বিতর্ক তৈরি না হয়, সে বিষয়টাও খেয়াল রেখেছিলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি। তৃণমূলের প্রতি কটাক্ষের সুর বহাল রেখে তিনি বলেন, ‘‘চৈতন্য মহাপ্রভু বলতেন, মেরেছ কলসির কানা, তা বলে কি প্রেম দেব না? আমরা সেই চৈতন্য সংস্কৃতিতে বিশ্বাসী।’’
আরও পড়ুন: গেরুয়া ধুলো উড়িয়ে জনতার সরণিতে মোদী, কাল মনোনয়নের আগে মেগা রোড শো
কুর্তা এবং মিষ্টি পাঠানো নিয়ে মোদী যে মন্তব্য করেছেন, সে সম্পর্কে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কিন্তু মুখ খুলেছেন। এক জনসভা থেকে অভিষেক প্রশ্ন তুলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি কুর্তা বা মিষ্টি পাঠিয়ে থাকেন, তা হলে সে কথা মোদী আগে কেন বলেননি? এখন কেন বলছেন? রাজ্য বিজেপির সভাপতি অবশ্য সে সব প্রশ্ন নিয়ে মাথা ঘামাতে নারাজ। মিট দ্য প্রেসে তাঁর বার্তা— সৌজন্য সৌজন্যের জায়গায় থাকবে, কিন্তু তার জন্য তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপির লড়াই বন্ধ হবে না।
যে দিলীপ ঘোষ এ দিন সৌজন্যের পক্ষে এত জোরদার সওয়াল করছেন, তাঁর বিরুদ্ধেই তো বার বার অসৌজন্যমূলক বা প্ররোচনামূলক কথাবার্তা বলার অভিযোগ উঠেছে। রাজ্য বিজেপির সভাপতির জবাব, ‘‘যাঁরা যে ভাষা বোঝেন, তাঁদের সেই ভাষাতেই বোঝাতে হয়। না হলে বুঝতে পারেন না।’’ তাঁর যে সব মন্তব্য নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিতর্ক হয়েছে, সেই মন্তব্যের কারণেই এ রাজ্যে বিজেপি ‘লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে’ বলেও দিলীপ ঘোষ এ দিন মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুন: সাঁইথিয়ায় ‘আগ্নেয়াস্ত্র’ নিয়ে তৃণমূলের মিছিল, কমিশনে যাচ্ছে বিজেপি
প্রথম তিন দফার ভোটগ্রহণে এ রাজ্যের যে ১০টি আসনে ভোট হয়ে গিয়েছে, তার মধ্যে ১টিতেও তৃণমূল জিততে পারবে না দিলীপের দাবি। প্রথম তিন দফায় তৃণমূলের বউনি হয়নি বলে তিনি মন্তব্য করেন এ দিন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রধানমন্ত্রিত্ব প্রসঙ্গেও এ দিন ফের তিনি মুখ খোলেন। তবে আগের অবস্থানের চেয়ে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে এ দিন বলেন, ‘‘দেশের ৫৪৩টি আসনের মধ্যে মাত্র ৪২টা আসনে লড়ছে যাঁর দল, তিনি প্রধানমন্ত্রী হবেন ভাবলে আর কী বলার থাকে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy