শনিবার পাঁশকুড়ায় মঞ্চে দেব। অথচ ফাঁকাই রয়েছে চেয়ার। যা নিয়ে আশা দেখছে বিজেপি।
সুপারস্টার দেবের কর্মিসভায় মাঠ ভরেনি। মঞ্চে যখন বক্তৃতা করছেন ঘাটাল কেন্দ্রে তৃণমূলের তারকা প্রার্থী তখনও পাঁশকুড়া সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডের ওই সভাস্থলে অনেক চেয়ারই ফাঁকা ছিল।
শনিবার বিকেলের এই ঘটনায় এক দিকে যেমন অস্বস্তিতে পড়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব, অন্য দিকে তেমনই উজ্জীবিত বিজেপি। পাঁশকুড়ার বিজেপি নেতা সিন্টু সেনাপতি বলছেন, ‘‘পাঁশকুড়ার মানুষ তৃণমূলকে আর চাইছে না। শনিবার দেবের সভায় যে ক’জন গিয়েছিলেন তাঁরা অভিনেতা দেবকে দেখতে গিয়েছিলেন, তৃণমূলকে ভালবেসে যাননি।’’ এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পাঁশকুড়ায় প্রচারের পারদ চড়াতে তৎপর হচ্ছে পদ্ম শিবির। বিজেপি সূত্রে খবর, চলতি সপ্তাহে অন্তত দু’দিন ঘাটলের দলীয় প্রার্থী ভারতী ঘোষকে নিয়ে এসে পাঁশকুড়ায় প্রচারের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
পাঁশকুড়া পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রটি ঘাটাল লোকসভার অন্তর্গত। শুক্রবারই এই এলাকায় বাড়ি বাড়ি প্রচারে এসেছিলেন ভারতী। আর শনিবার পাঁশকুড়ায় ছিল দেবের কর্মিসভা। সভার মাঠ পুরোপুরি না ভরায় তৃণমূলের অন্দরেও জোর চর্চা চলছে। দলের একাংশই বলছেন, শহর ও ব্লক নেতৃত্বের বিরোধের জেরে এই পরিস্থিতি। তা ছাড়া, পাঁশকুড়া পুরসভার কাউন্সিলর আনিসুর রহমান তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় এলাকার রাজনৈতিক অঙ্ক বদলে গিয়েছে। আনিসুর অনুগামী অনেকেও চলে গিয়েছে গেরুয়া শিবিরে। পরিসংখ্যান বলছে, বছর তিনেক আগে বিধানসভা নির্বাচনে পাঁশকুড়া পশ্চিমে তৃণমূলের ফল আশানুরূপ হয়নি। তৃণমূলের ফিরোজা বিবি জিতেছিলেন মাত্র ৩ হাজার ভোটে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
পাঁশকুড়ায় দীর্ঘ দিন ধরেই কোন্দল কাঁটায় জেরবার ঘাসফুল। ২০১৭ সালে পুরসভার প্রধান নির্বাচন ঘিরে প্রকাশ্যে আসে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল। দলীয় হুইপ উপেক্ষা করায় চেয়ারম্যান পদ ছাড়তে হয় সেসময় পাঁশকুড়ার তৃণমূলের ডাকসাইটে নেতা আনিসুর রহমানকে। সবং উপ-নির্বাচনের প্রাক্কালে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন আনিসুর। পাঁশকুড়া পুরপ্রধান হন নন্দকুমার মিশ্র। তৃণমূলের একাংশের অভিযোগ, নন্দবাবু চেয়ারম্যান হওয়ার পরে পাঁশকুড়া শহরে দলের বিভিন্ন কর্মসূচি আয়োজনের রাশ নিজের হাতেই রাখছেন। ব্লক তৃণমূল নেতৃত্বকে গুরুত্ব কম দিচ্ছেন বলে অভিযোগ। শহর ও ব্লক নেতৃত্বের এই সংঘাতে সংগঠন দুর্বল হচ্ছে আর তার জেরেই শনিবার দেবের কর্মিসভার মাঠ ভরেনি বলে তৃণমূলেরই একাংশের ব্যাখ্যা। অন্য দিকে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে একাধিক মামলায় জর্জরিত হয়ে আনিসুর এখন জেলে থাকলেও পাঁশকুড়া ব্লকে আনিসুর অনুগামীরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে তৃণমূল থেকে। সেই অঙ্কেও ঘাসফুলে বিঁধছে বিক্ষুব্ধ কাঁটা।
তবে তৃণমূল নেতৃত্ব দেবের সভায় লোক না হওয়ার বিষয়টিতে গুরুত্ব দিতে নারাজ। পুরপ্রধান নন্দবাবুর ব্যাখ্যা, দেবকে দেখতে ভিড় জমেছিল মঞ্চের সামনে। তাই হয়তো পিছনে কিছু চেয়ার ফাঁকা থেকে গিয়েছিল। ফলে, চেয়ার ফাঁকার দৃশ্য দেখে বিজেপি-র চাঙ্গা হওয়ার বিষয়টিতেও গুরুত্ব দিচ্ছে না তৃণমূল।
দলের পাঁশকুড়া ব্লক কার্যকরী সভাপতি কুরবান শা বলেন, ‘‘আমরা মানুষের সঙ্গে ৩৬৫ দিন থাকি। তামিলনাড়ু থেকে পাঁশকুড়ায় এসে ভারতীদেবী দু’দিন কেন একশো দিন প্রচার চালালেও তৃণমূলের ভোট কমবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy