হাওড়া শহরে পথে নেমেছে পুলিশ। ছবি: রণজিৎ নন্দী
সমস্যা একই। রাস্তায় অহেতুক ভিড়।
সেই ভিড় আটকাতে হাওড়া সিটি পুলিশ চালু করল ‘সাইরেন দাওয়াই’। বৃহস্পতিবার রাত থেকে চালু করে শুক্রবার সারা দিন সেই ‘ওষুধ’ প্রয়োগে ফল মিলছে বলেই দাবি পুলিশ আধিকারিকদের। কিন্তু গ্রামীণ হাওড়ায় পুলিশ শুধু টহলদারি এবং মাইকে প্রচার চালাচ্ছে। তা সত্ত্বেও লকডাউন পর্বে এতদিনেও গ্রামীণ এলাকায় সকালের দিকে ভিড় পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি।
সিটি পুলিশ সূত্রের খবর, তাদের টহলদারি গাড়ি, মোটরবাইকে অবিরত বেজে চলা ওই সাইরেন সতর্ক করার সঙ্কেত। তাতে বিনা প্রয়োজনে রাস্তায় থাকা লোকজনকে ঘরে ঢোকার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। তার পরেও নির্দেশ না মানলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। শুক্রবার বিভিন্ন এলাকায় গাড়ি ঘোরার সময় সাইরেনের আওয়াজ শুনে রাস্তায় আড্ডা দেওয়া, ঘুরে বেড়ানো লোকজন বাড়ি ঢুকে গিয়েছেন। দূর থেকে আওয়াজ কানে আসতেই পুলিশের হাতে পাকড়াও হওয়ার ভয়ে ফাঁকা হয়ে গিয়েছে এলাকা। আর যাঁরা আওয়াজ শুনেও সতর্ক হননি, এমন বেশ কিছু জনকে ধরা হয়েছে।
সরকারি স্তরে সকলে বারবার লকড়াউন মেনে চলার কতা বলা হচ্ছে। কিন্তু হাওড়া শহরের বেশ কিছু এলাকায় শেষ কয়েক দিন ক্রমশ বদলাচ্ছিল বাস্তব ছবিটা। দেখা যাচ্ছিল, নানা অজুহাতে লোকজন বাজারে ভিড় করছেন, পাড়ার মোড়ে জটলা করছেন। পুলিশ সূত্রের দাবি, সরকারের শীর্ষ স্তর থেকে লাঠিপেটা করতে নিষেধ করায় একটা বড় অংশের লোকজন লকডাউন নির্দেশ মানছিলেন না। নতুন পন্থা অনেক কার্যকর হচ্ছে। প্রতিটি থানা ও ট্র্যাফিক গার্ডকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এলাকার মূল রাস্তা এবং পাড়ার রাস্তায় দু’টি গাড়ির কনভয় বারবার টহল দেবে। প্রথম গাড়িতে বাজবে সাইরেন। পিছনের গাড়িতে থাকা মাইকে বাজবে পুলিশের সতর্কবার্তা। সেই মতো এ দিন ভোর থেকে পুরোমাত্রায় অভিযান শুরু হয়।
শহরে টহল দিচ্ছেন পুলিশ কমিশনার কুণাল আগরওয়াল-সহ হাওড়া কমিশনারেটের অন্য শীর্ষকর্তারাও। নাগরিকেরা যাতে পুলিশি অভিযান সম্পর্কে ওয়াকিবহল হতে পারেন, সে জন্য বিভিন্ন এলাকার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড়ের বাতিস্তম্ভে চোঙা লাগিয়ে বাজানো হচ্ছে ‘সতর্কবার্তা’ও। বাংলা ও হিন্দিতে তৈরি সেই বার্তার আগেও সাইরেন বাজছে। শহরের সাতটি সীমানা ছাড়াও অন্যান্য রাস্তায় মাঝেমধ্যেই হানা দিচ্ছেন ট্র্যাফিক পুলিশেরকর্মীরা। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া পথে বেরোনো গাড়ি, মোটরবাইক ধরে ‘কেস’ দেওয়া হচ্ছে। আবার হাওড়া সেতু, বালির জাতীয় সড়ক, কোনা এক্সপ্রেসওয়ে-সহ বিভিন্ন জায়গায় সীমানা এলাকায় সন্তোষজনক প্রমাণপত্র দেখালে তবেই গাড়ি ছাড়া হচ্ছে।
হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের কর্তারা জানিয়েছেন, ভিড় হটাতে তাঁদের নতুন কোনও পরিকল্পনা নেই। ২৪ ঘণ্টা টহলদারি চলছে। রাস্তা দিয়ে অবাঞ্চিত গাড়ি বা মোটরবাইক যেতে দেওয়া হচ্ছে না। রাস্তার ধারে জমায়েত দেখলেই তাড়া করা হচ্ছে। অবাঞ্চিত গাড়ি বা মোটরবাইকের বিরুদ্ধে ‘কেস’ দেওয়া দেওয়া হচ্ছে। এতে কাজ হচ্ছে বলেও জেলা পুলিশকর্তাদের দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy