(বাঁ দিক থেকে) সরোদবাদক পণ্ডিত তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদার, নৃত্যশিল্পী তথা অভিনেত্রী মমতাশঙ্কর এবং গায়ক অরিজিৎ সিংহ। —ফাইল চিত্র।
পদ্মসম্মানে বঙ্গ-একাদশ।
এ বছর পদ্ম বিভূষণ, পদ্মভূষণ এবং পদ্মশ্রী পাচ্ছেন ১৩৯ জন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ১১ জন বঙ্গভাষী বা বঙ্গবাসী। রবিবার দেশের সাধারণতন্ত্র দিবস। প্রথামতো কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক আগের দিন ঘোষণা করল পদ্মসম্মানপ্রাপকদের নাম।
সাহিত্য, শিল্প, খেলা, চিকিৎসা, কৃষিকাজ— নানা পেশার মানুষকেই পদ্মসম্মান দেওয়া হচ্ছে। পদ্মশ্রী পাচ্ছেন গায়ক অরিজিৎ সিংহ। মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জের ছেলে অরিজিৎ। খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছেও নিজের শিকড়কে কখনও ভোলেননি তিনি। তাঁর নাম রয়েছে পদ্মপ্রাপকদের তালিকায়।
এ বারের পদ্মপ্রাপক সরোদবাদক পণ্ডিত তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদার। পিতামহ বিভূতিরঞ্জন মজুমদারের হাত ধরে বাড়িতেই বাদ্যযন্ত্রে হাতেখড়ি। বাহাদুর খান থেকে আলি আকবর খাঁ— নানা প্রবাদপ্রতিম শিল্পীর সান্নিধ্য পেয়েছেন। এ বার সেই বঙ্গতনয়কেও পদ্মশ্রী দিচ্ছে কেন্দ্র।
পদ্মশ্রী পাচ্ছেন নৃত্যশিল্পী তথা অভিনেত্রী মমতাশঙ্কর। পদ্মসম্মান প্রাপকদের তালিকায় নিজের নাম দেখে আপ্লুত শিল্পী। তাঁর কথায়, ‘‘কখনও সম্মান পাব, এই কথা ভেবে কোনও কিছু করিনি। সব সময় শুধু নিজের কাজটাকে মনপ্রাণ দিয়ে করে গিয়েছি। কোনও দিন ভাবতেও পারিনি এই সম্মান পাব। আমি আমার বাবা-মা এবং সমস্ত শুভাকাঙ্ক্ষীদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। যাঁরা আমার কাজ ভালবাসেননি, বা যাঁরা আমাকে পছন্দ করেননি, তাঁদেরও ধন্যবাদ জানাচ্ছি যাতে আমি আরও ভাল ভাবে কাজ করতে পারি। এক দিন যাতে তাঁদেরও ভালোবাসা পেতে পারি!’’
পদ্মসম্মান প্রাপকদের তালিকায় নাম রয়েছে নগেন্দ্রনাথ রায়ের। শিক্ষা জগতে তাঁর অবদানের কারণে পদ্মশ্রী পাচ্ছেন এই বঙ্গতনয়।
পদ্মশ্রী পাচ্ছেন ‘স্টেট ব্যঙ্ক অফ ইন্ডিয়া’ (এসবিআই)-র প্রাক্তন চেয়ারপার্সন অরুন্ধতী ভট্টাচার্য। ৬০ বছর বয়সি অরুন্ধতী এসবিআইয়ে যোগ দিয়েছিলেন ১৯৭৭ সালে। ক্রমে ব্যাঙ্কের প্রায় দুই শতাব্দীর ইতিহাসে প্রথম মহিলা চেয়ারপার্সন হন এই বঙ্গতনয়া। ২০১৬ সালে ফোর্বস সংস্থার এক সমীক্ষায় বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী মহিলাদের তালিকায় ২৫তম স্থানে জায়গা করে নিয়েছিলেন অরুন্ধতী। এ বার তাঁকেও পদ্মশ্রী সম্মান দিচ্ছে কেন্দ্র।
পদ্মশ্রী পাচ্ছেন শিল্পপতি পবন গোয়েঙ্কা। বহুজাতিক নির্মাণ সংস্থা মাহিন্দ্রার প্রাক্তন ম্যানেজিং ডিরেক্টর ছিলেন পবন। পড়াশোনা, বেড়ে ওঠা— সবই কলকাতায়। কলকাতার শ্রী জৈন স্কুল থেকে পড়াশোনার পাট চুকিয়ে আইআইটি কানপুরে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হন। কর্নেল এবং হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়েও পড়েছেন। এ বার শিল্পক্ষেত্রে অবদানের জন্য পদ্মসম্মান পাচ্ছেন তিনি।
পদ্মশ্রী পাচ্ছেন সমাজকর্মী বিনায়ক লোহানি। জন্ম মধ্যপ্রদেশের ভোপালে। উচ্চশিক্ষার জন্য বাংলায় আসেন। আইআইটি খড়্গপুরে পড়েছেন। ‘পরিবার’ নামে এক সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর এই সংস্থা নানা সমাজসেবামূলক কাজ করে থাকে। তিনিও পাচ্ছেন পদ্মসম্মান।
নাম রয়েছে সজ্জন ভজাঙ্কের। তিনিও শিল্পপতি। সেঞ্চুরি প্লাইবোর্ড লিমিটেডের কর্ণধার সজ্জন। তিনিও এ বার পদ্মশ্রী পাচ্ছেন।
তালিকায় নাম রয়েছে ঢাকি গোকুলচন্দ্র দে-র। ৫৭ বছর বয়সি বাঙালি এই ঢাকি দেশের পাশাপাশি বিদেশের মাটিতেও প্রশংসা কুড়িয়েছেন। বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার মছলন্দপুরে। তাঁকেও এ বছর পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করছে কেন্দ্র।
এ ছাড়াও তালিকায় রয়েছেন স্বামী প্রদীপ্তানন্দ (কার্তিক মহারাজ)। মুর্শিদাবাদে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের বেলডাঙা আশ্রমের দায়িত্ব তাঁর কাঁধেই। ধর্মের পাশাপাশি রাজনীতিতেও বার বার নাম জড়িয়েছে তাঁর। তিনিও পদ্মশ্রী পাচ্ছেন।
মরণোত্তর পদ্মভূষণ দেওয়া হচ্ছে অর্থনীতিবিদ বিবেক দেবরায়কে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদের প্রধান ছিলেন। গত বছরের ১ নভেম্বর ৬৯ বছর বয়সে প্রয়াত হন নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন, প্রেসিডেন্সি কলেজ এবং কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই প্রাক্তনী। অর্থনীতি থেকে ইতিহাস, রাজনীতি থেকে সংস্কৃতি— সব বিষয়েই সুপণ্ডিত ছিলেন বিবেক। এ বার মরণোত্তর পদ্মসম্মান পাচ্ছেন সেই কৃতী বঙ্গসন্তান!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy