ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র ।
প্রচারের সময়ই ‘হুঁশিয়ারি’ দিয়েছিলেন। শপথ নিয়েই তা করে দিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিভিন্ন দেশকে এত দিন উন্নয়নের জন্য যে আর্থিক সাহায্য দিত ইউএসএইড, তা বন্ধ করে দিয়েছে ট্রাম্পের প্রশাসন। ক্ষমতায় আসার পরে একের পর এক নির্দেশিকা (একজিকিউটিভ অর্ডার)-তে সই করেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার মধ্যে একটি নির্দেশিকায় এই সাহায্য বন্ধের কথাও বলা হয়েছে। যদিও জানানো হয়েছে, মিশর এবং ইজ়রায়েলের আগের মতোই সাহায্য পাবে। অনুদান বন্ধের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের জেরে বিপাকে ঢাকা। কারণ, আর্থিক সাহায্য বন্ধ হওয়ায় তাদের অনেক উন্নয়নমূলক প্রকল্পও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এই প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের দাবি, শুধুমাত্র তাদের দেশেই সাহায্য পাঠানো বন্ধ করেনি আমেরিকা। আর বিষয়টি তাদের কাছে ‘প্রত্যাশিত’-ও বটে। পাশাপাশি তাদের আরও দাবি, বাংলাদেশে আশ্রয় পাওয়া রোহিঙ্গাদের আগের মতোই সাহায্য করবে আমেরিকা। অন্য দিকে, ভারতের ক্ষেত্রে অনুদান জারি থাকবে না বন্ধ হবে, সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি আমেরিকা। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে নয়াদিল্লির আমেরিকান দূতাবাসের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ভারতকে সাহায্য দেওয়া নিয়ে ‘পর্যালোচনা’ করছে আমেরিকা।
বন্ধ অনুদান
আমেরিকার আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ইউএসএইড) থেকে যে সাহায্য এত দিন পেত বাংলাদেশ, এ বার তা বন্ধ হল। ক্ষমতায় আসার পরে বেশ কয়েকটি নির্দেশিকা (একজিকিউটিভ অর্ডার)-তে সই করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার জেরেই বাংলাদেশে আর্থিক সাহায্য বন্ধ করল ইউএসএইড। শনিবার একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে সে কথা জানিয়ে দিয়েছে তারা। বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি, প্রকল্প বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছে। প্রায় ৫০ বছর ধরে বাংলাদেশকে জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা, জ্বালানি, পরিবেশ, খাদ্য, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা-সহ আরও বিভিন্ন ক্ষেত্রে আর্থিক সাহায্য দিয়েছে আমেরিকা। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের দাবি, ৮০০ কোটি ডলার, ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৬৮ হাজার কোটি টাকা সাহায্য দিয়েছে আমেরিকা। এ বার তা বন্ধ করল ট্রাম্প সরকার। এই সিদ্ধান্তের ফলে বিপাকে পড়েছে বাংলাদেশে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি, যারা আমেরিকার দেওয়া আর্থিক সাহায্যেই চলত। সে দেশে উন্নয়নের বেশ কিছু কাজও আটকে যাবে বলে দাবি ওই সংগঠনগুলির।
বাংলাদেশের দাবি
শুধুমাত্র বাংলাদেশকেই আর্থিক সাহায্য বন্ধ করেছে আমেরিকা, এমন নয়। আমেরিকার আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ইউএসএইড)-এর সাহায্য বন্ধ করা প্রসঙ্গে এমনই প্রতিক্রিয়া বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের উপদেষ্টা মহম্মদ তৌহিদ হোসেনের। তাঁর কথায়, ‘‘এটা প্রত্যাশিত। কারণ, আমেরিকায় ভোটের আগে থেকেই তিনি (ডোনাল্ড ট্রাম্প) বলে চলেছেন যে, বিদেশে পাঠানো সাহায্যের বিষয়টি পর্যালোচনা করবেন। ওরা বলেছে, এই নিয়ে পুনরায় সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সময় নিচ্ছে। এ ধরনের সাহায্য যে কমবে, তা নিয়ে সকলেরই উদ্বেগ ছিল।’’ যদিও তাঁর দাবি, এই নিয়ে বাংলাদেশ সরকারকে সরকারি ভাবে কোনও কিছু জানায়নি আমেরিকা। বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর দাবি করেছেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য আগের মতোই সাহায্য পাঠাবে আমেরিকা।
ট্রাম্পের নির্দেশিকা
গত ২৪ জানুয়ারি ইজরায়েল এবং মিশর ছাড়া সব দেশের জন্যই আর্থিক সাহায্য বন্ধ করে দিয়েছে ট্রাম্পের প্রশাসন। আমেরিকার বিদেশসচিব মার্কো রুবিও জানিয়েছেন, নতুন করে সাহায্যের বিষয়গুলি অনুমোদিত না হওয়া পর্যন্ত এই সাহায্য দেওয়া যাবে না। আগামী ৮৫ দিনের মধ্যে বিদেশে সহায়তার বিষয়গুলি পর্যালোচনা করা হবে। তার পরেই এই নিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে ট্রাম্প সরকার। আর্থিক সহায়তা বন্ধ করা নিয়ে আমেরিকার তরফে বিশদ আর কিছু জানানো হয়নি। প্রচারের সময়েই ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি ক্ষমতায় এলে ‘আমেরিকাই প্রথম’ নীতি গ্রহণ করা হবে। সূত্রের খবর, সেই নীতির অধীনেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-এর খবরে প্রকাশ, ভারতের ক্ষেত্রে অনুদান দেওয়া জারি থাকবে কি না, সে বিষয়ে এখনও ‘পর্যালোচনা’ করছে নয়াদিল্লির আমেরিকান দূতাবাস। আমেরিকার এই অনুদান বন্ধ হলে ভারতে পরিবেশ, স্বাস্থ্য-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে সব উন্নয়নমূলক প্রকল্প চলে, সেগুলিতে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। দীর্ঘ দিন ধরে এই ধরনের প্রকল্পে আর্থিক সাহায্য দিয়ে আসছে নয়াদিল্লির আমেরিকা দূতাবাস এবং ইউএসএইড। এই প্রসঙ্গে আমেরিকান দূতাবাসের মুখপাত্র ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-কে বলেছেন, ‘‘নির্দেশিকা মেনেই যাতে বর্তমান অনুদান জারি থাকে, তা নিয়ে পর্যালোচনা চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy