Advertisement
৩০ ডিসেম্বর ২০২৪
CPM

CPM: বিতর্ক মুছে উপনির্বাচনে সিপিএমের পাশে দীপঙ্করেরা

বাংলায় গত বছরের বিধানসভা ভোটের সময়ে দীপঙ্করবাবুদের আহ্বান ছিল, ‘নো ভোট টু বিজেপি’। রাজ্যে বিজেপির বিকল্প হিসেবে বামফ্রন্টকে সমর্থনের কথা তাঁরা সরাসরি বলেননি। তার ফলে রাজ্যে বিজেপিকে হারাতে তৃণমূলই উপযুক্ত শক্তি, এই ধারণা বামপন্থীদের একাংশের সমর্থন পেয়ে ভোটবাক্সে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফায়দা করে দিয়েছিল বলে রাজনৈতিক শিবিরের মত।

দীপঙ্কর ভট্টাচার্য।

দীপঙ্কর ভট্টাচার্য। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০২২ ০৭:৪০
Share: Save:

বিধানসভা নির্বাচনের সময়ের বিতর্ক পিছনে ফেলে রাজ্যে জোড়া উপনির্বাচনে সরাসরি বাম প্রার্থীদের সমর্থন করার ডাক দিল সিপিআই (এম-এল) লিবারেশন। বিশেষত, বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী, বিজেপি-ফেরত বাবুল সুপ্রিয়ের সাম্প্রতিক অতীতের কর্মকাণ্ড মনে করিয়ে শাসক দলের ওই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করলেন লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য। তাঁর ওই বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়ে বিজেপি ও তৃণমূলের মোকাবিলায় ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক বাম শক্তির ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের ডাক দিলেন সিপিএমের বর্তমান ও প্রাক্তন দুই রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এবং সূর্যকান্ত মিশ্র। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য পাল্টা বলছেন, ব্যক্তিকে দেখে অবস্থান ঠিক করতে গিয়ে বামপন্থীরা আবার ‘বিভ্রান্ত’ হচ্ছে।

দীপঙ্করবাবু সোমবার টুইটে মন্তব্য করেছেন, ‘‘বালিগঞ্জের উপনির্বাচন শুধু দীর্ঘ দিনের প্রাক্তন বিধায়ক সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের শূন্য স্থান পূরণ করার জন্যই নয়, বিধানসভা ভোটে বিজেপির বিরুদ্ধে মত দেওয়া প্রত্যেক ভোটারের মর্যাদা রক্ষারও লড়াই। তৃণমূলের হাতে বিধানসভায় ২০২১ সালের জনাদেশকে অসম্মানিত হতে দেওয়া যাবে না!’’ বামফ্রন্ট তথা সিপিএমের প্রার্থী সায়রা শাহ হালিমকে সমর্থন করার জন্য সকলের কাছে আহ্বান জানিয়ে দীপঙ্করবাবুর আরও বক্তব্য, ‘‘যাঁরা বাংলার রাজনীতি খুব কাছ থেকে অনুসরণ করেন না, তাঁদের মনে করিয়ে দেওয়া যেতে পারে, বালিগঞ্জে তৃণমূলের প্রার্থী সেই বাবুল সুপ্রিয়, যিনি বিজেপিতে থাকাকালীন যথেষ্ট কুখ্যাতি অর্জন করেছেন এবং ২০২১-এ টালিগঞ্জ থেকে বিজেপির প্রার্থী হয়ে পরাজিত হয়েছিলেন।’’ শুধু বালিগঞ্জই নয়, লিবারেশনের রাজ্য সম্পাদক অভিজিৎ মজুমদার বিবৃতি দিয়ে আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রেও বামফ্রন্টের প্রার্থীকে সমর্থনের ডাক দিয়েছেন।

বাংলায় গত বছরের বিধানসভা ভোটের সময়ে দীপঙ্করবাবুদের আহ্বান ছিল, ‘নো ভোট টু বিজেপি’। রাজ্যে বিজেপির বিকল্প হিসেবে বামফ্রন্টকে সমর্থনের কথা তাঁরা সরাসরি বলেননি। তার ফলে রাজ্যে বিজেপিকে হারাতে তৃণমূলই উপযুক্ত শক্তি, এই ধারণা বামপন্থীদের একাংশের সমর্থন পেয়ে ভোটবাক্সে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফায়দা করে দিয়েছিল বলে রাজনৈতিক শিবিরের মত। ভোটের পরে ‘প্রকৃত বামপন্থী’ হিসেবে মমতা নিজেও দীপঙ্করের নাম উল্লেখ করেছিলেন। সেই বিধানসভা ভোটের সময় থেকেই লিবারেশনপন্থীদের সঙ্গে সিপিএমের নানা স্তরের নেতা-কর্মীদের টানা তর্কযুদ্ধ চলেছে সামাজিক মাধ্যমে।

লিবারেশন নেতৃত্ব অবশ্য এ দিন বিবৃতি দিয়ে স্পষ্ট করে দিয়েছেন, বিধানসভা ভোটে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পরেও তৃণমূল হিংসার রাজনীতি কায়েম করেছে। তাঁদের অভিযোগ, পুরসভার নির্বাচনে ভোট লুট থেকে শুরু করে দেউচা-পাঁচামির মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিবাদী কণ্ঠ পুলিশ দিয়ে বন্ধ করা হচ্ছে, আনিস খানের মতো ছাত্র-নেতা খুন হয়েছেন। এনআরসি-সিএএ’র বিরুদ্ধে প্রতিবাদীদের ‘দেশছাড়া’ করার বাবুলের পুরনো হুমকিও মনে করিয়ে দিয়েছেন তাঁরা।

এর প্রেক্ষিতেই সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সেলিম বলেছেন, ‘‘কমরেড দীপঙ্করের অবস্থানের প্রতি আমরা সহমর্মী। ঐক্যবদ্ধ ভাবে বিজেপি এবং দলবদলু তৃণমূলের মোকাবিলা করতে চাই। এই দেশ এবং মানুষকে বাঁচানোর লক্ষ্যে একসঙ্গে পথ চলার দিকেই আমরা তাকিয়ে।’’ একই সুর সূর্যবাবুরও।

তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র সুখেন্দুশেখর রায় অবশ্য বলছেন, ‘‘রাজনৈতিক অবস্থান ব্যক্তিকে দেখে নেবেন, নাকি রাজনৈতিক মতাদর্শ দেখে, তা তাঁদেরই ঠিক করতে হবে। সামগ্রিক রাজনীতির পরিপ্রেক্ষিতে সাম্প্রদায়িকতার বিপদকে চিহ্নিত করতে না পারলে লক্ষ্যভেদ করবেন কী ভাবে? কমিউনিস্ট পার্টিগুলির মধ্যে এই বিভ্রান্তি অবশ্য নতুন কিছু নয়।’’

অন্য বিষয়গুলি:

CPM Dipankar Bhattacharya
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy