প্রতীকী ছবি।
৩৭৭ ধারার জুলুম মুছে গিয়েছে এ দেশে। কিছু অসম্পূর্ণতা থাকলেও রূপান্তরকামীদের সুরক্ষায় বিলও চলে এসেছে। তবু দেশের শাসক দলের সিএএ-প্রচারের পটভূমিতে নামপ্রকাশে পিছপা খাস মুম্বইয়ে সক্রিয় সমাজকর্মী, সমকামী তরুণ। কলকাতায় দক্ষিণ এশীয় রামধনু-কথা তথা এলজিবিটিকিউ যুব সম্মেলনে যৌন সংখ্যালঘুদের ভিতরেও ধর্মের নামে পীড়ন নিয়ে সরব হলেন তিনি।
যৌন সংখ্যালঘুদের প্রতি সহৃদয় পরিসর সৃষ্টির চেষ্টায় মুম্বইয়ে একটি কাফে করেছেন ওই তরুণ। কলকাতার সম্মেলনেটিতে উপগ্রহের মাধ্যমে শামিল হন তিনি। তবে পরে নাম প্রকাশ করেননি। সিএএ-এনআরসি নিয়ে প্রতিবাদ ঘনিয়ে ওঠার আশঙ্কায় এ বছর মুম্বইয়ের রামধনু গৌরব-যাত্রায় (প্রাইড ওয়াক) অনুমতি দিতে চাইছিল না পুলিশ। পরে প্রস্তাবিত জায়গা পাল্টে আজাদ গ্রাউন্ডে অনুমতি দেওয়া হয় তাঁদের। কিন্তু সেখানে শরজিল ইমামের প্রতি সহানুভূতিশীল কিছু পোস্টার ‘দেশদ্রোহী’ তকমা দিয়ে টাটা ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল সায়েন্সেসের পড়ুয়া রূপান্তরকামী এক তরুণী-সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে পুলিশ। রূপান্তরকামী ওই তরুণী এখন জামিনে রয়েছেন। কলকাতার সম্মেলনটির পরে মুম্বইয়ের তরুণ শনিবার বলছিলেন, ‘‘এলজিবিটিকিউদের মধ্যে নানা ভাগ আগেও ছিল। তাঁরা কেউ মুসলিম বা দলিত হিসেবেও বাড়তি পীড়নের শিকার হতে পারেন। কিন্তু ধর্মীয় বা রাজনৈতিক পরিচয় ইদানীং রামধনু-আন্দোলনেও সমস্যার সৃষ্টি করছে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা তাতে ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।’’ মুম্বইয়ে বিজেপি নেতারা এ বিষয়ে পুলিশ-প্রশাসনের উপরে চাপ দিচ্ছেন বলে আন্দোলনকারীদের অভিযোগ। বম্বে হাইকোর্ট নাগরিকত্ব আইনের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ দেশ-বিরোধী কাজ নয় বলেই রায় দিয়েছে। মুম্বইয়ের তরুণ বলেন, ‘‘সিএএ-এনআরসির ফলে, ঘরে-বাইরে জুলুমের শিকার সমকামী-রূপান্তরকামীরা অনেকেই সমস্যায় পড়তে পারেন। তবু এই নিয়ে কথা বললেই কোণঠাসা করা হচ্ছে। এটা নয়া সমস্যা।’’
রামধনু সম্মেলনে উপস্থিত ঢাকার রূপান্তরকামী তরুণীর উপরে একটি প্রভাবশালী ছাত্র সংগঠনের ছেলেদের হামলার ঘটনাও মেলে ধরা হয়েছে। কলকাতায় বড় টিপ, শাড়িতে সাজলেও বাংলাদেশে তিনি সাধারণত পুরুষের পোশাকেই থাকেন। তাঁর কথায়, ‘‘গত বছর ইদের আগে কয়েক জন পড়শি যুবক আমার বাড়িতে চড়াও হয়। ছুরি দেখিয়ে আমার ফোন ঘেঁটে বলতে থাকে, তুই সমকামী, নাস্তিক— তোকে মেরে ফেলব। খবর পেয়ে পুলিশ এলেও ওই ছেলেদের নামে অভিযোগ করা যায়নি।’’ চট্টগ্রামের এক সমকামীও উপগ্রহ-বার্তায় বলেন, ‘‘বাংলাদেশে হিজড়েদের প্রতি কিছুটা সহানুভূতি রয়েছে। কিন্তু সমকামীরা কোণঠাসা। রূপান্তরকামী পুরুষদের বিষয়ে কারও বোধ নেই।’’ পাকিস্তানে ট্রান্সজেন্ডার অ্যাক্টের পরে রূপান্তরকামীরা সামান্য ভাল অবস্থায়। সম্মেলনে উপগ্রহের মাধ্যমে উপস্থিত মুলতানের ‘সারু’ যেমন এক বছর হল ইচ্ছে মতো সালোয়ার-শাড়িতে সাজছেন। সায়ন নামের সম্মেলনটির আহ্বায়ক কলকাতার বাপ্পাদিত্য মুখোপাধ্যায়র কথায়, ‘‘এই দেশগুলির সমকামী-রূপান্তরকামীদের নিয়ে নেপাল বা শ্রীলঙ্কায় বৈঠকের পরিকল্পনা রয়েছে। লড়াই একযোগেই চলবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy