রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল টাটার সমালোচনায় মুখর। সেই সময়ে টাটার সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতের চেষ্টায় নামল বিরোধী দল কংগ্রেস। রতন টাটাকে সরাসরি চিঠি লিখে বাংলায় শিল্পায়নের থেকে সরে না গিয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনা করার জন্য আবেদন জানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। টাটাকে তিনি যে চিঠি দিয়েছেন তা শনিবার জানান অধীরবাবু। তাঁর কথায়, “টাটার সঙ্গে যে ব্যবহার করা হয়েছে তা নিয়ে আমরা লজ্জিত। আমরা মনে করি টাটারা এ দেশে অগ্রগণ্য শিল্পোদ্যোগী। তাঁরা ভারতের জনজীবনের অঙ্গ।”
তৃণমূলের আন্দোলনের জেরে সিঙ্গুরে টাটার ন্যানো প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়নি। সম্প্রতি কলকাতায় লেডিজ স্টাডি গ্রুপের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে রতন টাটা রাজ্যের শিল্পের বেহাল অবস্থা নিয়ে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, বিমানবন্দর থেকে বাইপাসের ধারে তাঁর হোটেল পর্যন্ত কোনও শিল্প দেখেননি। সেই মন্তব্যের পরে শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্র থেকে শুরু করে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র যে ভাবে রতন টাটাকে আক্রমণ করেন তার বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে টাটা এমিরিটাসের চেয়ারম্যানকে অধীরবাবুর চিঠি পাঠানো তাৎপর্যপূর্ণ।
রাজ্যের শিল্পায়নের জন্য টাটা কোনও ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দেখালে এ রাজ্যের কংগ্রেস তাঁদের সঙ্গে সমস্ত রকম সহযোগিতা করবে বলে অধীরবাবু তাঁর চিঠিতে লিখেছেন। তিনি মনে করেন, কয়েক দশক ধরে রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি দুর্ভাগ্যজনক এবং শিল্পায়নের পক্ষে সহায়ক নয়। তবে কংগ্রেস যে রাজ্যে ক্ষমতায় নেই এবং নীতি-নির্ণায়ক শক্তিও নয়, তা জানিয়ে টাটাকে প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে এ রাজ্যে শিল্পায়নের ব্যাপারে টাটাকে পুর্নবিবেচনা করার আবেদন করেছেন অধীরবাবু।
টাটার মন্তব্যের পাল্টা মন্তব্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার প্রেক্ষিতে তৃণমূল নেতৃত্ব এখন তাঁর সমালোচনায় কিছুটা সতর্ক হয়েছেন। এ দিন প্রশ্নের জবাবে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় রতন টাটার নাম না করে বলেন, “উনি নিজের জগতে একজন বড় মানুষ। রাজ্যের উন্নয়ন হয়েছে কি না তা তো জিডিপি এবং জিএসডিপি সূচক দেখলেই বোঝা যায়।” টাটার কিছুটা সমালোচনা করে এ দিন পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি বলেন, “শুধু বিবৃতি-পাল্টা বিবৃতির মধ্যে দিয়ে শিল্প করার ইচ্ছে প্রকাশ করা যায় না। সরকারও তার শিল্পায়নের ক্ষেত্রে তার ইচ্ছেকে উপলব্ধি করাতে পারে না। তিনি (রতন টাটা) যদি বাংলায় দাঁড়িয়ে শিল্প করতে চান, তা হলে বাংলার সরকারের সঙ্গে কথোপকথন শুরু করা উচিত। বাংলার সার্বিক উন্নয়নে যিনি সামিল হতে চাইবেন, তাঁকে স্বাগত।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy