মুখ্যমন্ত্রীকেই করে দেওয়া হোক রাজ্যপাল! কটাক্ষ করলেন জগদীপ ধনখড়। নিজস্ব চিত্র
দিন কয়েক আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজকর্মের অসহযোগিতার কথা বলে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু আক্রমণ করেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে। বলেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য করার ভাবনাচিন্তা শুরু করা হয়েছে। এ নিয়ে আইনজ্ঞদের পরামর্শও নেওয়া হবে। রবিবার সকালে দার্জিলিং যাওয়ার উদ্দেশে বাগডোগরা বিমানবন্দরে নামেন রাজ্যপাল। সেখানেই শিক্ষামন্ত্রীর মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করা হয় তাঁকে। জবাবে ধনখড় বলেন, ‘‘শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য করবেন। উনি ওঁকে রাজ্যপালই করে দিন না!’’ পাল্টা তৃণমূলের মুখপাত্র তাপস রায় বলেন, ‘‘ধনখড়কেই মুখ্যমন্ত্রী করে দেওয়া হোক, তাহলেই বোধহয় তিনি খুশি হবেন।’’
সম্প্রতি রাজ্যের বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালন ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন রাজ্যপাল। সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে বাংলার শাসকদল তৃণমূলের সংগঠনের আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছিলেন তিনি। তারপরেই রাজ্য সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির আচার্য পদ থেকে রাজ্যপালকে সরিয়ে দেওয়ার চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। আচার্য পদে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বসানোর ভাবনাচিন্তা চলছে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। ব্রাত্য বলেছিলেন, ‘‘এ বিষয়ে আইনজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ নিতে চলেছে রাজ্য শিক্ষা দফতর।’’ তার পরই এই মন্তব্য রাজ্যপালের।
সম্প্রতি ব্রাত্য বলেছিলেন, ‘‘তিনি দিনের পর দিন এ ভাবে ফাইল ফেলে রাখেন। তিনি বিন্দুমাত্র সহযোগিতার মনোভাব যদি না দেখান, তা হলে কেরলের রাজ্যপাল যেমন বলেছেন, প্রাদেশিক স্তরে আমরাও তা করতে বাধ্য হব। সংবিধান খতিয়ে দেখব, দরকারে আইনজ্ঞদের পরামর্শ নেব। আমরা আইনজীবীদের কাছে জানতে চাইব, অন্তবর্তীকালীন সময়ের জন্য রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্য পদে আমরা মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে আসতে পারি কি না।’’
রাজ্যপালের সঙ্গে নবান্নের বিরোধ নতুন কিছু নয়। সম্প্রতি রাজ্যপাল রাজ্যের সমস্ত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যায়ের উপাচার্যকে ডেকে পাঠান। তা নিয়ে নতুন করে সঙ্ঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়। রাজ্যপাল একের পর এক টুইটে দাবি করতে থাকেন, তাঁর উপর্যুপরি ডাকেও সাড়া দিচ্ছেন না রাজ্যের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যেরা। শাসকের অঙ্গুলি হেলনেই এমনটা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছিলেন পদাধিকার বলে রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। এই প্রেক্ষিতেই সাংবাদিক বৈঠকে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয় ব্রাত্য বসুর কাছে। ঘটনাচক্রে ব্রাত্যই রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী। তখনই ব্রাত্য বলেছিলেন, অন্তর্বর্তীকালীন আচার্য হিসাবে মুখ্যমন্ত্রীকে বসানো যায় কি না, ভেবে দেখছেন তাঁরা।
It is high time to introspect whether we should continue with the colonial legacy of the Governor being the Chancellor of Universities just by the virtue of his post or we should nominate eminent scholars and educationists as Chancellors.#WestBengal #BratyaBasu #Education
— Bratya Basu (@basu_bratya) December 24, 2021
তাৎপর্যপূর্ণ হল, এই প্রসঙ্গে ব্রাত্যর মুখে উঠে আসে সিপিএম শাসিত কেরলের রাজ্যপালের সাম্প্রতিক মন্তব্যের কথা। কেরলের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান বলেছিলেন, ওই রাজ্যে সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের পদে যেন মুখ্যমন্ত্রী বিজয়নকে আনা হয়। কেরলেও রাজ্যপালের সঙ্গে নির্বাচিত বাম সরকারের বিরোধ অব্যাহত। যদিও পরে ব্রাত্য টুইটে আচার্য পদে বড়মাপের শিক্ষাবিদদের আনার পক্ষে সওয়াল করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy