—ফাইল চিত্র
ফুরফুরা শরিফের পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকি-কে সঙ্গে নিয়েই আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই করতে ইচ্ছুক বামেরা। নিজেদের সেই সিদ্ধান্তের কথা জোট শরিক কংগ্রেসকে জানালেন বাম নেতৃত্ব। তবে আব্বাসের সঙ্গে জোটের ব্যাপারে সহমত হলেও, এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি কংগ্রেস।
রবিবার সিপিএমের রাজ্য দফতর আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে বৈঠক বসেন সিপিএম-কংগ্রেস নেতারা। ওই বৈঠকেই আব্বাসের নতুন দল ‘ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট’-কে (আইএসএফ) নিজেদের জোটসঙ্গী করার কথা কংগ্রেস নেতৃত্বকে জানায় বামেরা। প্রদেশ কংগ্রেসের নেতারা তাতে সায় দিলেও, নিজেদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের কথা তারা জানাননি। অন্য দিকে, বামেরা চাইছে কংগ্রেসকে ব্রাত্য করে নয়, তাদের সঙ্গে সহমত হয়েই আব্বাসকে সঙ্গে নেবে তারা। এ প্রসঙ্গে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, ‘‘আজকের আলোচনায় আইএসএফে-র কথা আমরা কংগ্রেসকে বলেছি। কংগ্রেস বলেছে, আপনারা ওটা আলোচনা করুন। আমরা বলেছি, দু’পক্ষ মিলেই আলোচনা করতে হবে। আলাদা ভাবে নয়। আইএসএফ-এর সঙ্গে বোঝাপড়া হোক এটা যেমন আমরা চাই, তেমনি এতে কংগ্রেসকেও প্রয়োজন আছে বলে আমরা মনে করি।’’
বাম-কংগ্রেস জোটে আসতে চেয়ে বিমান বসুকে চিঠি দিয়েছিলেন আব্বাস। প্রত্যুত্তরে সহমত জানিয়ে চিঠি দিয়েছিলেন বিমানও। এ নিয়ে আব্বাসের সঙ্গে কংগ্রেসের আলোচনা হলেও, তাদেরকে সরকারি ভাবে কোনও চিঠি দেওয়া হয়নি বলে জানান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আব্বাসের কাছ থেকে কোনও চিঠি আসেনি। আমাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে, তবে সেখানে কোনও বিষয় চূড়ান্ত হয়নি। একদম প্রাথমিক অবস্থায় আছে বিষয়গুলো।’’ একইসঙ্গে আব্বাসকে ইঙ্গিত করে অধীর সাফ জানান, ধর্মনিরপেক্ষ ভাবে রাজনীতি করতে হবে, কোনও ধর্মীয় সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকলে আমরা সেখানে যাব না। তবে আব্বাসকে নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের মধ্যে সূক্ষ্ম মতান্তর রয়েছে। অধীর এ নিয়ে কৌশলে চললেও, বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান আব্বাসের সঙ্গে জোটের ব্যাপারে জোরালো সওয়াল করেন। সম্প্রতি কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীকে এই মর্মে তিনি একটি চিঠিও লেখেন।
পাশাপাশি রবিবার দু’পক্ষের মধ্যে বিধানসভা আসন ধরে ধরে আলোচনা হয়। আসন রফা চূড়ান্ত হয়েছে ২৩০টিতে, আলোচনা বাকি রয়েছে আরও ৬৪টি আসনে। সূত্রের খবর, কংগ্রেসকে এখনও পর্যন্ত একশোটিরও বেশি আসনে ছেড়েছে বামেরা। বাকি আসনগুলি থেকে কিছু সংখ্যক দেওয়া হবে আব্বাসের দলকে। বাকিটা পাবে শরিকরা। তবে আব্বাস ৪৪টি আসনের দাবি জানালেও, তা মানতে নারাজ বামেরা। এ প্রসঙ্গে বিমান জানান, আমরা আব্বাসের ৪৪টি আসনের দাবি মানতে পারব না। কারণ আসন সমঝোতা নিয়ে আমাদের তিনটি বিষয় মাথায় রাখতে হচ্ছে। এক, আমরা বামফ্রন্ট নিজেদের শরিকদের ক্ষতি করতে পারব না। দুই, বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের বোঝাপড়া ক্ষতি করতে পারব না। তিন, আব্বাসের সঙ্গে আমরা বোঝাপড়া করতে চাই। অন্য দিকে, পূর্বে কংগ্রেসের সঙ্গে আসন নিয়ে যে সমঝোতা হয়েছিল, তাতে পরস্পরের মধ্যে কিছু পরিবর্তন হতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy