মৌলালি যুবকেন্দ্রে ক্ষিতি গোস্মামীর স্মরণসভা। —নিজস্ব চিত্র।
নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে জবাব দিতে হবে সাধারণ ধর্মঘটে দেশ স্তব্ধ করে দিয়ে। মাঝখানে দাঁড়িয়ে পুলিশ দিয়ে অশান্তি বাধালে দায় নিতে হবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে। বাম জমানার মন্ত্রী এবং আরএসপি-র সাধারণ সম্পাদক ক্ষিতি গোস্বামীর স্মরণসভায় এক সুরে ধর্মঘট সফল করার আহ্বান জানালেন বাম নেতৃত্ব।
রাজ্যের প্রাক্তন পূর্তমন্ত্রী এবং আরএসপি-র সাধারণ সম্পাদক ক্ষিতিবাবু চেন্নাইয়ে প্রয়াত হন গত ২৪ নভেম্বর। আরএসপি প্রথমে স্মরণসভার আয়োজন করেছিল ১৯ ডিসেম্বর। কিন্তু সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) বিরুদ্ধে বিক্ষোভের জেরে উদ্ভূত পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে সেই স্মরণসভা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মৌলালি যুব কেন্দ্রে সোমবার স্মরণ-সভায় আমন্ত্রিত হয়েও শেষ পর্যন্ত আসেননি তৃণমূল ও কংগ্রেসের কেউ। বিশেষত, কয়েক দিন আগেই শহরে নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে এবং ধর্মঘটের সমর্থনে বাম-কংগ্রেসের বিরাট যৌথ মিছিলের পরে প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে এ দিনের অনুপস্থিতি আরও চোখে পড়েছে। এই নিয়ে প্রশ্নের জবাবে আরএসপি-র সাধারণ সম্পাদক মনোজ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রকে আমি ব্যক্তিগত ভাবে অনুরোধ করেছিলাম। তিনি বলেছিলেন, অন্য কর্মসূচির জন্য নিজে থাকতে পারবেন না। তবে কংগ্রেসের কোনও প্রতিনিধি যাবেন। কেন কেউ আসেননি, খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।’’
আরও পড়ুন: মন বুঝতে মাঠে নয়া টিম পিকে
স্মরণসভায় এ দিন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু থেকে শুরু করে সিপিএমের সূর্যকান্ত মিশ্র, সিপিআইয়ের মঞ্জুকুমার মজুমদার, ফরওয়ার্ড ব্লকের নরেন চট্টোপাধ্যায়, সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনের কার্তিক পাল পর্যন্ত সকলেই আগামী ৮ জানুয়ারি সাধারণ ধর্মঘট পালন করে সারা দেশকে বার্তা দেওয়ার কথা বলেছেন। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যবাবু বলেন, ‘‘আমরা পেট্রল বোমা ছুড়ব না, অশান্তি করতে যাব না। শান্তিপূর্ণ ভাবেই আমরা ধর্মঘট করতে চাই। পুলিশ যদি জবরদস্তি করে অশান্তি বাধায়, তার জন্য দায়ী থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী আপনি!’’ বামফ্রন্টের অন্দরে ক্ষিতিবাবুর সঙ্গে তাঁদের কিছু বিষয়ে মনোমালিন্য হলেও আলোচনার পথেই যে সে সবের নিষ্পত্তি হত, সে কথাও উল্লেখ করেছেন সূর্যবাবু।
যুব কেন্দ্রে স্মরণসভায় ছিলেন ক্ষিতিবাবুর স্ত্রী সুনন্দা গোস্বামী, দুই মেয়ে বসুন্ধরা ও কস্তুরী এবং তাঁদের পরিজনেরা। আরএসপি নেতৃত্বের বক্তব্য, মূর্তি-পুজোর কায়দায় নয়, বাম রাজনীতির পথেই তাঁরা প্রয়াত নেতার ধারা বজায় রাখবেন। নাগরিকত্ব আইন, এনআরসি এবং এনপিআর নিঃশর্তে বাতিল করার দাবিতে একটি পুস্তিকাও প্রকাশ করেছে আরএসপি-র রাজ্য কমিটি। দলের তিন নেতা সুনীল বণিক, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও মৃন্ময় সেনগুপ্তকে অসমে তথ্যানুসন্ধানের কাজে পাঠিয়েছিলেন ক্ষিতিবাবুই। তাঁদের রিপোর্টের অংশবিশেষ রাখা হয়েছে পুস্তিকায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy