প্রতীকী ছবি।
মনোনয়ন জমা দিতে বাধা এবং প্রত্যাহার করানোর জন্য হুমকি ও আক্রমণের বিস্তর অভিযোগ করলেও রাজ্যের ১০৮টি সিংহভাগ পুরসভাতেই প্রার্থী দিতে পেরেছে সিপিএম ও কংগ্রেস। তাদের মতে, শাসক দল চার বছর আগের পঞ্চায়েত ভোটের পুনরাবৃত্তি করতে চাইলেও এ বার স্থানীয় স্তরে প্রতিরোধ তখনকার তুলনায় বেশি হচ্ছে। পুরভোট ঘিরে হিংসার তাণ্ডব বন্ধ করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে ফের আবেদন জানিয়েছে কংগ্রেস। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্ব অবশ্য দুই বিরোধীর অভিযোগে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তাঁদের পাল্টা দাবি, জনমত ও সংগঠন সঙ্গে না থাকায় বাম-কংগ্রেস নানা অভিযোগ করে বাজার গরম করতে চাইছে!
আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের প্রাথমিক হিসেব বলছে, রাজ্যে যে ২২৭২টি ওয়ার্ডে আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি ভোট হবে, তার প্রায় ৮০% আসনেই বামেরা প্রার্থী দিতে পেরেছে। বিধান ভবনের মতে, কংগ্রেসের প্রার্থী রয়েছে ৬৫%-এর বেশি আসনে। বামফ্রন্টের সঙ্গে কিছু ক্ষেত্রে কংগ্রেস, কোথাও আবার সিপিআই (এম-এল) লিবারেশন বা এসইউসি-রও আসন সমঝোতা রয়েছে। তবে মনোনয়ন প্রত্যাহার-পর্ব পেরোনোর আগে কোনও পক্ষের হিসেবই চূড়ান্ত নয়। জেলায় জেলায় মনোনয়ন প্রত্যাহার করানোর জন্য গা-জোয়ারি চলছে বলে বৃহস্পতিবারই রাজ্য নির্বাচনে দফায় দফায় অভিযোগ জানিয়েছেন বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব। বহরমপুর, তাহেরপুর-সহ বিভিন্ন পুরসভায় প্রার্থীদের বাড়িতে কী ভাবে হামলা হচ্ছে, তার বিবরণ দিয়ে কিছু ক্ষেত্রে স্থানীয় থানার আইসি-দের সরানোর দাবিও তুলেছে কংগ্রেস।
এই পরিস্থিতিতে ‘প্রতিরোধের’ ডাকই দিচ্ছেন সিপিএম নেতৃত্ব। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কয়েকটা পুরসভায় শাসক দল জিতেই নিয়েছে। অনেক জায়গায় প্রার্থী তো বটেই, প্রার্থিপদের প্রস্তাবকদেরও হুমকি দেওয়া, আক্রমণ করা চলছে। তৃণমূল ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটের মতো পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়। কিন্তু মানুষ এ বার এ সব পছন্দ করছেন না। স্থানীয় মানুষকে নিয়েই বাম কর্মী-সমর্থকেরা সাধ্যমতো প্রতিরোধ করছেন। প্রতিরোধ আরও বাড়বে।’’
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এ দিন ফের বলেছেন, ‘‘আমরা আগেই বলেছিলাম, সব জায়গায় দারুণ কিছু করব, এমন কিছু প্রত্যাশা নিয়ে পুরভোটে নামছি না। কিন্তু মনোনয়নে বাধা, প্রার্থীদের বাড়িতে হামলা— এ সব শুধু বাংলাতেই কেন হবে? এত রাজ্যে স্থানীয় নির্বাচন হয়, কোথাও তো এমন হয় না! সব ক্ষেত্রে আদালতে গিয়ে হস্তক্ষেপই বা কেন চাইতে হবে?’’ অধীরবাবুর মতে, ‘‘বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর ভাবমূর্তিই এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিন বারের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন, মানুষের উপরে ভরসা রেখে জুলুম বন্ধে তিনি ব্যবস্থা নিন।’’
তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলেছেন, ‘‘বামেরা এখন আন্দোলনে নেই। আর কংগ্রেসের হাল আরও শোচনীয়। নিজেদের দুর্বলতা আড়াল করতে তারা নানা অভিযোগ তুলছে। তবে হিংসা কোথাওই কাঙ্ক্ষিত নয়।’’
বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু ও সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র কমিশনকে এ দিন ফের চিঠি দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের পাশাপাশি ১২ ও ২৭ তারিখের দু’দফার পুরভোটের ফল একই দিনে ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। তাঁরা মনে করিয়ে দিয়েছেন, ২০১৫ সালে কলকাতা ও অন্য ৯১টি পুরসভার ভোট আলাদা দিনে হলেও গণনা একসঙ্গেই হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy