জলপাইগুড়ির বন্ধ রায়পুর চা বাগানে তৃণমূলের প্রচার। রবিবার। ছবি: সন্দীপ পাল
চা বাগান বন্ধ দীর্ঘ কয়েক বছর। বাগানের শ্রমিকদের বড় অংশ ভিন্ রাজ্যে কাজের খোঁজে পাড়ি দিয়েছেন। জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বন্ধ রায়পুর চা বাগানের শ্রমিকদের ভোট দিতে আনার চেষ্টা করছেন শাসক দলের নেতা-কর্মীরা। বাগানের গ্রাম পঞ্চায়েতের দু’টি আসনেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থীরা। পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ আসনে প্রার্থীদের জয়ী করতে রবিবার দুপুরে বাগানের শ্রমিক-লাইনে ভোটপ্রচারে দেখা গেল তৃণমূল নেতা-কর্মীদের।
বাগানের শ্রমিক আবাসনগুলির বেহাল দশা। কিছু দিন আগেও বাগানের কাঁচা পাতা তুলে কমিটি গড়ে পাতা বিক্রি করে শ্রমিকদের সামান্য কিছু আয় হত বলে খবর। তবে এখন বাগানে আর পাতা নেই। বাগান পরিচর্যার অভাবেই এমন দশা বলে জানিয়েছেন শ্রমিকেরা। তাই এখন তাঁরা কেউ দিনমজুরি, কেউ খেতমজুরি করছেন। রেশনের চাল ও বাগানের জঙ্গল থেকে তোলা কচু ও ঢেকির শাকই এখন শ্রমিকদের প্রধান খাদ্য। শ্রমিক রিঙ্কি মুন্ডা বলেন, ‘‘তিস্তার চরে জমিতে লঙ্কা তোলার কাজ করছি আমরা বেশির ভাগ মহিলা। দেড়শো টাকা মজুরি মেলে ওই কাজে।’’ ভোটের কথা তুলতেই রিঙ্কি বলেন, ‘‘ভোট তো দিই। কিন্তু বাগান খুলছে না!’’ ভোট নিয়ে তেমন মাথাব্যথা নেই বেশির ভাগ শ্রমিকেরই— এমনই দাবি সঞ্জয় ওড়াওঁয়ের। তিনি জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের পাতকাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৮/১৯৯ বুথে তৃণমূলের প্রার্থী। তিনি এবং ১৮/২০০ বুথের প্রার্থী মিরু হেমব্রম এ বার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন। সঞ্জয় বলেন, ‘‘বাগান খোলাটাই এখন শ্রমিকদের কাছে প্রধান বিষয়। দলের পক্ষ থেকে ও স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ানো হচ্ছে।’’ ২০১৮ সালের ১২ সেপ্টেম্বর মালিক পক্ষ বাগান বন্ধ করে চলে যায়। ২০০৩ সাল থেকেই রায়পুর চা বাগানে অচলাবস্থা চলছে। ওই সময় থেকে টানা ছ’বছর এই বাগান বন্ধ ছিল। অনাহার, মৃত্যুর সাক্ষী বন্ধ এই বাগান। বাগিচা শ্রম আইন লঙ্ঘন করায় মালিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।
এই বাগানে ভোটারের সংখ্যা অন্তত দেড় হাজার। বাগান ছেড়ে ভিন্ রাজ্যে কাজের খোঁজে চলে যাওয়া শ্রমিকদের ভোটের দিন কী ভাবে আনা যাবে, তা নিয়ে দলের অন্দরে চর্চা শুরু হয়েছে বলে দলীয় সূত্রের খবর। পাতকাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান প্রধান হেমব্রম বলেন, ‘‘শ্রমিকেরা দুরবস্থায় রয়েছেন। পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে যতটা সম্ভব সহযোগিতা করা হয়েছে। আমরাও চাই, দ্রুত বাগান খোলা হোক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy