‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পে আবেদন করার লাইনে উপভোক্তারা। ছবি পিটিআই।
প্রথম তিন দিনেই রাজ্যের জনসংখ্যার প্রায় সাড়ে ছয় শতাংশ মানুষ দুয়ারে সরকারের শিবিরে যোগাযোগ করেছেন। করোনা আবহে সেই ভিড় সামাল দিতে রাজ্য সরকার নানা ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। বুথ স্তর পর্যন্ত শিবির করে আকর্ষণের কেন্দ্রে থাকা ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পের আবেদনপত্র গ্রহণ করা হচ্ছে। কিন্তু টান পড়ছে কর্মীর জোগানে। সেই সমস্যা মেটাতে এ বার অঙ্গনওয়াড়ি, আশা ও স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদেরও এই কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিভিন্ন জেলা প্রশাসন।
জেলা সূত্রের খবর, বুথ-ভিত্তিক শিবিরের জন্য অনেক ক্ষেত্রেই কাজে লাগানো হচ্ছে আশা, অঙ্গনওয়াড়ি, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কর্মী এবং কোথাও কোথাও কন্যাশ্রী-যুবতীদের। অনেক জেলা-কর্তার বক্তব্য, গোটা রাজ্যে প্রায় ২২ হাজার শিবির হবে। এই কর্মসূচি পুরোপুরি সরকারি হাতে থাকায় সব কাজ করতে হবে সরকারি কর্মী-অফিসারদেরই। শিবির দেখাশোনা, ভিড় ব্যবস্থাপনা, শিবিরে আসা মানুষের রেজিস্ট্রেশন, উপভোক্তাদের সহযোগিতা করা, তথ্য নথিভুক্তি, আবেদনপত্র দেওয়া এবং তা গ্রহণ করা, জমা পড়া আবেদনপত্রের যাচাই— যত কাজ রয়েছে, তার তুলনায় লোকবল কিছুটা হলেও কম। তাই বুথ স্তরে যে-সব বিশেষ শিবির করে লক্ষ্মীর ভান্ডারের আবেদনপত্র গ্রহণ করা হচ্ছে, সেখানে অতিরিক্ত লোকবল জোগাড় করতে আশা-অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদেরও কাজে লাগাতে হচ্ছে।
“কন্যাশ্রী প্রকল্পের আওতায় থাকা ছাত্রীরা অনেক জায়গায় আবেদনপত্র পূরণে সহযোগিতা করছেন উপভোক্তাদের। তাতেও কিছুটা সুবিধা হচ্ছে,” বলেন এক জেলা-কর্তা।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী ১৬ অগস্ট এই পর্বের দুয়ারে সরকার কর্মসূচি শুরু হওয়ার পরে ১৯ অগস্ট পর্যন্ত গোটা রাজ্যের শিবিরগুলিতে বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য যোগাযোগ করেছেন অন্তত ৫৮.২৮ লক্ষ মানুষ। ২০১১ সালের জনগণনার নিরিখে যা প্রায় ৬.৩৯%। এর মধ্যে প্রথম তিন দিনে শুধু লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে আবেদনের সংখ্যা প্রায় ৩৮ লক্ষ। প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা বুঝেছেন, উপভোক্তাদের সংখ্যা বৃদ্ধির অন্যতম কারণই হল লক্ষ্মীর ভান্ডারের প্রতি মানুষের আকর্ষণ। তাই ভিড় সামলাতে শিবির-বিন্যাসে বৈচিত্র আনা হচ্ছে। বুথস্তরে শিবির করে শুধু লক্ষ্মীর ভান্ডারের আবেদনপত্র নিতে জেলাগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। মূল শিবিরে পৌঁছনোর আগেই আবেদনপত্র সংগ্রহ করা গেলে ভিড়ের ধাক্কা অনেকটাই এড়ানো যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানিয়েছেন, যোগ্য উপভোক্তারা প্রত্যেকে প্রকল্পের সুবিধা পাবেন। তাই করোনা নিয়ন্ত্রণ বিধির মধ্যে অযথা হুড়োহুড়ি না-করে ধীরেসুস্থে এক মাসের মধ্যে শিবিরে গিয়ে আবেদন করাই ভাল। দরকারে বিশেষ শিবির করে আবেদনপত্র গ্রহণের মেয়াদ তিন-চার দিন বাড়ানো হবে।
১৯ অগস্ট পর্যন্ত শিবিরে যোগাযোগকারী মানুষের সংখ্যার নিরিখে সবচেয়ে এগিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনা (প্রায় আট লক্ষ)। তার পরেই মুর্শিদাবাদ (৬.২২ লক্ষ), পূর্ব মেদিনীপুর (৩.৮১ লক্ষ), উত্তর ২৪ পরগনা (৩.৮০ লক্ষ), পশ্চিম মেদিনীপুর (৩.৩৫ লক্ষ), হুগলি (৩.৩২ লক্ষ)। দু’তিন লক্ষের মধ্যে রয়েছে কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর, বীরভূম, মালদহ, বাঁকুড়া, পূর্ব বর্ধমান, হাওড়া, নদিয়া। এক-দু’লক্ষের মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর, পুরুলিয়া, জলপাইগুড়ি, পশ্চিম বর্ধমান। ঝাড়গ্রাম, আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং। কলকাতায় এই সংখ্যা এক লক্ষের মধ্যে। কালিম্পঙে তা সাড়ে ১১ হাজারের মতো।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy