শাহজাহান শেখের বিরুদ্ধে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর কাছে কি পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ রয়েছে? শনিবার কলকাতার নগর দায়রা আদালতে এই প্রশ্ন তুললেন শাহজাহানের আইনজীবী সব্যসাচী বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি তাঁর দাবি, শাহাজাহান যে হেতু এক জন রাজনীতিক, তাই ‘উইচহান্ট’ (শয়তান প্রতিপন্ন করার চেষ্টা) চলছে। পর্যাপ্ত প্রমাণ ছাড়াই তাঁকে ‘ফাঁসানোর’ চেষ্টা চলছে।
শাহজাহান আগাম জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন। কলকাতার নগর দায়রা আদালতে সেই আবেদনের শুনানি ছিল শনিবার। সেখানেই তাঁর আইনজীবী দাবি করেন, শাহজাহানের বিরুদ্ধে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ নেই। নয়তো গ্রেফতার করা হত। আইনজীবী জানিয়েছেন, রেশন দুর্নীতির তদন্তে নেমে রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কাছ থেকে যে চিঠি পেয়েছিল ইডি, তাতে শাহজাহানের নাম ছিল বলে দাবি করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ওই আইনজীবীর প্রশ্ন, তাতে যদি শাহজাহানের নাম থাকে, তা হলে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কেন ডাকেনি ইডি?
গত ৫ জানুয়ারি শাহজাহানের সন্দেশখালির বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়েছিল ইডি। অভিযোগ, ওই তৃণমূল নেতার ‘অনুগামী’দের হাতে আক্রান্ত হয়েছেন ইডি আধিকারিকেরা। ইডির দাবি, সে দিন ঘরের ভিতরেই ছিলেন শাহজাহান। তিনিই ফোন করে বাইরে ‘অনুগামী’দের জড়ো করেছিলেন। সে দিন শাহজাহানকে সমন পাঠানো হয়নি। এর পর দ্বিতীয় বার তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়েছিল ইডি। সে দিন উল্লেখযোগ্য কিছু মেলেনি। শাহজাহানের আইনজীবী দাবি করেছেন, সে দিনও সমন পাঠানো হয়নি। তার পর ছ’দিন অপেক্ষা করা হয়। ইডির হাতে সে রকম তথ্যপ্রমাণ থাকলে অবশ্যই সমন পাঠানো হত। পরিবর্তে নোটিস সাঁটিয়ে এসেছে ইডি। ২৯ জানুয়ারি হাজিরা দিতে বলেছিল। যদিও শাহজাহান সে দিন হাজিরা দেননি। এর পরেই আদালতে আগাম জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। তাঁর আইনজীবীর দাবি, সমন না পাঠিয়েই লুকআউট নোটিস জারি করা হয়েছে। তাঁর মক্কেলের আশঙ্কা, ইডি তাঁকে গ্রেফতার করতে চাইছে। সে কারণেই অগ্রিম জামিন চেয়ে আবেদন করেছেন তিনি।
শাহজাহানের আইনজীবী আরও দাবি করেছেন, রেশন দুর্নীতি নিয়ে ইডির এফআইআর বা চার্জশিটেও তাঁর মক্কেলের নাম নেই। তিনি এ-ও দাবি করেছেন যে, শাহজাহানের সন্দেশখালির বাড়িতে তল্লাশিতে গিয়ে হাজিরার নোটিস দিয়ে এসেছেন ইডি আধিকারিকেরা। তাঁর কথায়, ‘‘তাতে ধরা যেতে পারে যে, ওঁরা গ্রেফতার করতে যাননি। আবার একই সঙ্গে ওঁরা লুকআউট নোটিস দিয়েছেন, যার ফলে গ্রেফতারির সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে।’’ তিনি এ-ও দাবি করেছেন, গত ১৬ ডিসেম্বর জ্যোতিপ্রিয় (বালু)-এর থেকে চিঠি উদ্ধার করে ইডি। ১৯ ডিসেম্বর তাঁর বয়ান নেওয়া হয়। ৫ জানুয়ারি শাহজাহানের বাড়ি তল্লাশিতে যায় ইডি। আইনজীবীর মাধ্যমে শাহজাহানের বক্তব্য, ‘‘এর মাঝে আমাকে ডেকে জিজ্ঞাসা করতে পারত। আমার নাম রয়েছে। তা-ও বয়ান নেয়নি কেন ইডি?’’ শাহজাহানের আইনজীবীর দাবি, পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ থাকলে আগেই পদক্ষেপ করত ইডি। শাহজাহান আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে বলেন, ‘‘আমি রাজনীতিক বলে এটা করা হয়েছে। ওঁদের (ইডি) কাছে পিএমএলএ (টাকা নয়ছয়)-এর ১৭ নম্বর ধারায় অভিযোগ দায়েরের মতো তথ্যপ্রমাণ নেই। এটা উইচ হান্ট। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ ফ্রেম করা হচ্ছে।’’ পরের শুনানিতে ইডি তাদের যুক্তি জানাবে।
প্রসঙ্গত, প্রথম হাজির এড়ানোর পর শনিবার মেল করে ফের শাহজাহানকে দ্বিতীয় হাজিরার জন্য তলব করা হয়েছে। ৭ ফেব্রুয়ারি সল্টলেকে ইডির দফতরে হাজির দিতে হবে তাঁকে। ‘নিখোঁজ’ নেতা যান কি না, সেটাই দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy